ঢাকাটাইমসের সংবাদে রুপনের পরিবারের পাশে নোয়াগাঁও সমাজকল্যাণ সংঘ

নগর প্রতিবেদক, গাজীপুর
 | প্রকাশিত : ০৭ জুলাই ২০২১, ২০:৫৬

ঢাকাটাইমসে সংবাদ প্রকাশের পর চর্মকার (মুচি) রুপন চন্দ্র দাশের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে নোয়াগাঁও ক্রীড়া ও সমাজকল্যাণ সংঘ। বুধবার সংগঠনটির কর্মীরা এক মাসের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন রুপনের পরিবারের হাতে।

খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে ছিল চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, লবণসহ ৩২ প্রকারের খাদ্য দ্রব্য।

গত ৪ জুলাই দৈনিক ঢাকাটাইমস ও পত্রিকাটির অনলাইনে ‘কাজ না করলে চুলা জ্বলবে না রুপনের ঘরে’ শিরোনামে একটি মানবিক সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি প্রকাশের পর টঙ্গীর নোয়াগাঁও ক্রীড়া ও সমাজকল্যাণ সংঘের সাধারণ সম্পাদক এই প্রতিবেদকের সঙ্গে যোগাযোগ করে রুপনের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চায়৷ পরে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বুধবার বিকালে এক মাসের খাবার পৌঁছে দেওয়া হয় অসহায় পরিবারটির কাছে।

রুপন চন্দ্র দাশ পেশায় একজন চর্মকার। টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকার ফুটপাতে আঁশের বস্তা পেতে জুতা সেলাই ও পলিশ করে সংসার চলে তার। দুই ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে রুপন থাকেন টঙ্গীর নতুন বাজার এলাকায় ভাড়া বাসায়। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম তিনি। করোনায় চলমান লকডাউনে আয়-রোজগার প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে তার। গত শনিবার দুপুরে ঢাকাটাইমস প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় তার।

সেদিন রুপন বলেন, ‘ছোট দুইটা ছাওয়াল, বউ নিয়া ভাড়া থাকি। সংসারে কামাই করার মতো শুধুই আমি। লকডাউনের আগে প্রতিদিন জুতা সেলাই-পলিশ কইরা চারশ থেকে পাঁচশ টাকা আয় হইত। লকডাউনের কারণে আয়-রোজগার একেবারেই নাই। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মাত্র ৬০ টাকা কামাই করছি।’

নিজের দুঃখ-দুর্দশার কথা তুলে ধরে রুপন বলেন, ‘লকডাউনে খুবই অভাবে দিন পার করতাছি। সকালে ডাইল আর করোলা ভাজি দিয়া ভাত খাইয়া দোকান খুলছি। দুপুরেও একই তরকারি দিয়া কয়ডা ভাত খাইছি। বাসায় যাওয়ার সময় বাজার নিয়া যাইতে হইব। বাজার না নিলে চুলায় হাড়ি চড়ব না!’

এদিকে বুধবার বিকালে খাদ্য সহায়তা পেয়ে ঢাকাটাইমস এবং নোয়াগাঁও ক্রীড়া ও সমাজকল্যাণ সংঘের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন রুপন।

রুপন ঢাকাটাইমসকে বলেন, লোকজনের মুখে শুনেছি আমাকে নিয়ে পত্রিকায় খবর ছাপা হয়েছে। এরপর নোয়াগাঁও ক্রীড়া ও সমাজকল্যাণ সংঘের কর্মীরা এক মাসের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী নিয়ে আমার বাসায় আসেন। গত কয়েকদিন লকডাউনের কারণে আয়-রোজগার প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ঠিকমতো বাজার করতে পারতেছিলাম না। পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছিলাম। এখন আর কোন দুঃশ্চিন্তা নেই।

নোয়াগাঁও ক্রীড়া ও সমাজকল্যাণ সংঘের সাধারণ সম্পাদক এবং টঙ্গী পূ্র্ব থানা যুবলীগ নেতা সোহেল রানা বলেন, ঢাকাটাইমস এ চর্মকার রুপন চন্দ্র দাশের অসহায় জীবনযাপন নিয়ে একটি মানবিক সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়। তাৎক্ষণিক আমরা সংগঠনের কর্মীরা সিদ্ধান্ত নেই রুপনের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর।

তিনি বলেন, করোনাকালীন পরিস্থিতিতে লকডাউন আরও কতদিন থাকবে কেউ বলতে পারছে না। তাই অসহায় পরিবারটি যেন আগামী এক মাস নিশ্চিন্তে থাকতে পারে সেজন্য পুরো মাসের যাবতীয় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনে দেওয়া হয়েছে। আমাদের খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে মিনিকেট চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, আদা-রসুন, ঈদ উপলক্ষে পোলাও চাল, সেমাই, বাচ্চাদের হাতে লাগানোর মেহেদিসহ ৩২টি আইটেম।

সোহেল রানা আরও বলেন, সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। তার নির্দেশে আমরা সকল প্রকার মানবিক কাজে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছি। এর আগেও আমরা পথশিশুদের শিক্ষা সামগ্রী, ঈদের জামা, করোনাকালীন সময়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে অসহায় পরিবারের মাঝে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দিয়েছি।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- দপ্তর সম্পাদক মারুফ, মির আশরাফুল আহসান তনু, ফয়েজ বাবু, রনি হাসান, মো. সাগর প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/৭জুলাই/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :