যে ছয় দেশে রাতের বেলায়ও সূর্য ওঠে

যে ছয় দেশে রাতের বেলায়ও সূর্য ওঠে
ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইম
ভূগোলে নিশ্চয়ই পড়েছেন নিশীথ সূর্যের দেশ সম্পর্কে! যে দেশে রাতেরবেলাতেও সূর্য দেখা যায়। পৃথিবীতে এমন ছয়টি দেশ রয়েছে যেসব দেশে রাতের বেলাতেও সূর্য ওঠে।
নরওয়ে
উত্তর মেরুর বরফে ঢাকা দেশ নরওয়ে। সারা বছরই এখানে কনকনে ঠান্ডা। এসব জায়গায় লোকে বড় একটা ঘুরতে যায় না। কিন্তু নিশীথ সূর্যের দেশ নরওয়েতে একবার গেলে প্রকৃতির অসাধারণ রূপের সাক্ষী হতে পারবেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন উত্তরমেরুর অরোরার খেলা নাকি বাকরুদ্ধ করে দেয়। গ্রীষ্মকালে এদেশে সূর্যাস্ত হয় না, তাই এখানে সদাই গোধূলি। তবে শীতের ছবিটা ঠিক উল্টো। শীতে এখানে সূর্যোদর একেবারেই বন্ধ থাকে। তবে যেকোনও ঋতুতেই এখানকার ঠান্ডার ধারালো কামড় এড়ানো যায় না। আর্কটিক এলাকার দেশ নরওয়েতে মে থেকে জুলাই পর্যন্ত রাতের বেলাতেও সূর্য দেখা যায়। তবে ঝলমলে সূর্য নয় সেই সূর্যের চেহারা অনেকটা গোধূলি বেলার মতো হয়। প্রায় ৭৬ দিন পর্যন্ত সেই সূর্যকে নরওয়ের আকাশে দেখা যায়। এই সময়ে নরওয়ে বেড়াতে গেলে দেখবেন সুয্যি মামা সবসময় আকাশে বিরাজ করছে।
আইসল্যান্ড
এরপরেই আসা যাক আইসল্যান্ডের কথায়। ব্রিটেনের পর এটি ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ রাষ্ট্র। দেশের প্রায় ১০ শতাংশ দখল করে রেখেছে হিমবাহ। প্রচণ্ড ঠান্ডায় লোকজনের সংখ্যাও বেশ কম। পর্যটকরা এসব দেশে বিশেষ বেড়াতে যান না। কিন্তু ঠান্ডা সহ্য করতে পারলে এদেশ ঘুরে আসা জীবনের একটি অতি রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। নরওয়েকে নিশীথ সূর্যের দেশ বলা বলেও আইসল্যান্ডেও কিন্তু সেই রাতের সূর্য দেখা দেয়। জুন মাসে এই নিশীথ সূর্যের সবচেয়ে ভালো দর্শন মেলে। মার্চ এবং সেপ্টেম্বর মাসে এখানে দিন এবং রাতের পুরোপুরি অর্ধেক অবস্থান। আর ডিসেম্বর মাসে দিনের মধ্যে ২০ ঘণ্টাই রাত। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন এখানে উত্তরমেরুর অরোরার খেলা নাকি বাকরুদ্ধ করে দেয়।
নুনাভুট, কানাডা
কানাডার সবচেয়ে নতুন, বৃহত্তর এবং একেবারে উত্তর অবস্থিত অঞ্চল হল নুনাভুট। এখানে তিন হাজারেরও বেশি মানুষ বসবাস করেন। এটিও আর্কটিক অঞ্চলে অবস্থিত। বছরে দুটি মাস এখানে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা দেখা যায় সুয্যিমামাকে। শীতকালে আবার এখানো গোটা একটা মাস বিরাজ করে সদা অন্ধকার।
ব্যারো, আলাস্কা
আর্কটিক সার্কেলের আরেকটি দেশ হল আলাস্কা। আর এই আলাস্কার উত্তর অংশের সবচেয়ে বড় শহর ব্যারো। অবশ্য় এই নামে জনপ্রিয় হলেও এই শহরের আসল নাম উটকিয়াগভিক। নামটি বড্ড উটকো বলেই হয়তো ব্যারো নামটি বেশি জনপ্রিয় হয়েছে। তবে সে কথা যাক, এই ব্যারো শহরেও কিন্তু মে মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত এই শহরের আকাশে সূর্য দেখা যায়। প্রায় দুই মাস অস্ত না যাওয়া প্র্যাকটিস করে নভেম্বর মাসে রবিমামা বিশ্রাম নেন। গোটা নভেম্বরটাই এখানে সূর্যোদয় হয় না। সারা শহর থাকে অন্ধকারাচ্ছন্ন। বাকি শীতকালটিও এখানে থাকে মোটামুটি গাঢ় অন্ধকার।
ফিনল্যান্ড
প্রায় ৭৩ দিন ধরে রাতের বেলা সূর্য দেখা যায় ফিনল্যান্ডেও। সহস্র হ্রদের দেশ ফিনল্যান্ডে আকাশে সূর্য থাকে গ্রীষ্মকালে। এবং অন্যান্য দেশগুলোর মতো শীতকালজুড়ে থাকে গাঢ় অন্ধকার। এখানকার বাসিন্দারা গ্রীষ্মকালে কম ঘুমান। বছরের বেশিরভাগ কাজই সেরে রাখেন সেই সময়। বহু মানুষ বসবাস করেন বরফের তৈরি বাড়ি ইগলুতে।
সুইডেন
মে মাস থেকে অগাস্ট মাস পর্যন্ত সুইডেনের আকাশেও সূর্য খুব কম ঘুমায়। মধ্যরাতে অস্ত গিয়ে ফের ভোর চারটের সময় সে উদয় হয়। প্রায় ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত সারাদিন আকাশে সূর্যকে দেখা যায়। তাই এখানকার মানুষজনও দিনের আলোকে দারুণ উপভোগ করেন। উপভোগ করেন পর্যটকরাও। সারাদিন গল্ফ খেলে, মাছ ধরে, নানা জায়গা ঘুরে আনন্দে দিন কাটান সকলে।
(ঢাকাটাইমস/১৪সেপ্টেম্বর/এজেড)

মন্তব্য করুন