ই-কমার্স প্রতারণা

নয় মাস পর অর্ডার ক্যানসেল করল প্রিয়শপ

কৌশিক রায়, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২১, ১১:১০ | প্রকাশিত : ২০ অক্টোবর ২০২১, ১০:০৭

আমি জানুয়ারি মাসের ১৬ তারিখ পণ্য অর্ডার দিছিলাম, সেটা শপিং ক্রেডিট এবং ক্যাশ মিলিয়ে ছিল ৩৬ হাজার টাকার। অর্ডারের পণ্য তো দিলোই না, উল্টো নানা টালবাহানায় একের পর এক নগদ টাকা নিয়ে ৯ মাস পর অর্ডার ক্যানসেল করে দিল।

অনলাইন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান প্রিয়শপ ডটকমের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করেন চট্টগ্রামের জাওয়াদ আফনান।

দারাজ, ই-ভ্যালি বা ই-অরেঞ্জ ডটকমের মতোই একটি ই-কমার্স প্লাটফর্ম প্রিয়শপ ডটকম। দেশজুড়ে ই-কমার্স প্লাটফর্ম প্রতারণার বিরুদ্ধে যখন সরকারের তরফে তোড়জোড় চলছে, এর মধ্যেও নানা গ্রাহক প্রতারণার অভিযোগ আসছে প্রিয়শপ ডটকমের নামে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক মাস ধরে প্রিয়শপ ডটকমসহ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে হাজার হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে প্রিয়শপ ডটকমের বিরুদ্ধে ৬২৬টি অভিযোগ জমা হয়। ইতোমধ্যে ৪৪২টি নিষ্পত্তি হয়েছে বলে অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।

অনেক গ্রাহকের অভিযোগ, ক্যাশ ব্যাক অফারে মাসের পর মাস প্রিয়শপ ডটকম কেনাকাটায় জমাকৃত টাকার বিনিময়ে কিছুই দিচ্ছে না। ক্যাশ ব্যাকের নামে গ্রাহক আকৃষ্ট করে প্রতারণার নতুন ফাঁদে ফেলে গ্রাহকদের সঙ্গে বড় প্রতারণায় মেতেছে প্রিয়শপ নামের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটি। গ্রাহকের নগদ টাকাসহ ক্যাশ ব্যাকের টাকার অর্ডারের পণ্যে নানান অজুহাতে বাড়িয়ে নিত টাকা। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে অনেক গ্রাহকের পণ্য ডেলিভারি না দেওয়ার অভিযোগেরও শেষ নেই তাদের বিরুদ্ধে।

জাওয়াদ আফনান ঢাকাটাইমসকে বলেন, প্রিয়শপ ডটকমে গত বছর একটা অফার ছিল, যা যা পণ্য কিনেছি সেই পণ্যের মোট টাকার ওপর ৫০ শতাংশ ক্যাশ ব্যাক। তাতে মোট ২৮ হাজার টাকা আসে আমার। এরপর আমি এই টাকায় প্রথমে অর্ডার করি দুটি ভিভো মোবাইল ফোন, যার মডেল ওয়াই২১ এস। দাম আসে ২৬ হাজার ৮০ টাকা। অনেক দিন ঘুরানোর পর বলল এটা ক্যানসেল হবে। কিছু টাকা অ্যাড করে অন্য কিছু নিতে। তারপর আরও ৭ হাজার টাকা ক্যাশ অ্যাড করে টোটাল ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে আরেকটা স্যামসাং এ৫১ মোবাইল ফোন অর্ডার করি। তারপর তারা আরও কয়েক মাস পর বলে, যে অর্ডার ছিল সেই অর্ডার ক্যানসেল হবে। আপনি আরো কিছু ক্যাশ অ্যাড করে অন্য কিছু অর্ডার দেন। তারপর আরও ১০০০ টাকা অ্যাড করে ওপ্পো এ১৫ কয়েকটি অর্ডার করি, যার মূল্য ছিল ৩৬ হাজার ১০ টাকা। এভাবে প্রিয়শপ ধাপে ধাপে নগদ ৮ হাজার টাকা নেয়, কিন্তু পণ্য দেয় না। জাওয়াদ বলেন, এভাবে আমাকে ৯ মাস ঝুলিয়ে রেখে ৮ হাজার টাকা ফেরত দিল, বাকি ২৮ হাজার টাকা শপিং ক্রেডিট ঠিকই তারা রেখে দিল এমনভাবে, যাতে ইউজই করতে না পারি।

এমনই এক প্রতারিত গ্রাহক মারজিয়া অনামিকা হক প্রিয়শপের সাইটে লিখেছেন, দয়া করে আমার এই প্রোডাক্ট # ৪০৫৩৫২ এবং # ৩৮৬৬৫৬ গুলো ডেলিভারি করেন, নতুবা আমি ভোক্তা অধিকারে মামলা করতে বাধ্য হব। তিন মাস যাবত অর্ডার করে বসে আছি; কিন্তু এখনো প্রোডাক্ট পাওয়ার কোনো নাম নেই !

রহমান আলী জীবন লিখেছেন, প্রিয়শপ ডটকম, মাসের পর মাস যায় আমার প্রডাক্ট ডেলিভারির খবর নাই।

মো. রিয়াজুল হক লিখেছেন, উইদাউট পারমিশনে আপনারা আমার ভাউচার কীভাবে ক্যানসেল করেন? আমি রিফান্ড চাইনি। তাই আমার ভাউচার এখনই অ্যাক্টিভ করা হোক।

এ বিষয়ে প্রিয়শপ ডটকমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের সাড়া মেলেনি। ফোন রিসিভ বা কল ব্যাক করেনি তারা।

(ঢাকাটাইমস/২০অক্টোবর/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :