চীনের বৈশ্বিক নিরাপত্তা উদ্যোগে রাশিয়ার সমর্থন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২২ এপ্রিল ২০২২, ১২:১৩| আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২২, ১৫:৫০
অ- অ+

অবিভাজ্য নিরাপত্তা মূলনীতি সামনে রেখে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এশিয়া ফোরামের সমাবেশে ‘বৈশ্বিক নিরাপত্তা উদ্যোগের’ প্রস্তাব দিয়েছেন। চীনের এই উদ্যোগকে রাশিয়াও সমর্থন দিয়েছে। তবে এই প্রস্তাবটি কীভাবে বাস্তবায়িত হবে সে ব্যাপারে শি জিনপিং কোনো বিশদ বিবরণ দেননি। এশিয়ার ২৫টি দেশ ও অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সংস্থাটির বার্ষিক সম্মেলনে দেওয়া ভিডিও ভাষণে এ প্রস্তাব রাখেন শি জিনপিং।

দক্ষিণ চীনা দ্বীপ হাইনানে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার এক সমাবেশে শি জিনপিং বলেন, চীন একটি বৈশ্বিক নিরাপত্তা উদ্যোগ হাজির করতে পারে, যা নিরাপত্তার অবিভাজ্যতার নীতি বজায় রাখবে। বিশ্বের সকল দেশের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করা উচিত এবং সকলের বৈধ নিরাপত্তা উদ্বেগের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। আমাদের উচিত নিরাপত্তার অবিভাজ্যতার নীতিকে সমুন্নত রেখে একটি ভারসাম্যপূর্ণ, কার্যকর এবং টেকসই নিরাপত্তা ব্যবস্থা গঠন করা এবং অন্য দেশকে অনিরাপদ করে এমন জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিরোধিতা করা।

ভাষণে তিনি আরও বলেন, রাশিয়াও সম্প্রতি পশ্চিমা সরকারগুলোকে 'অবিভাজ্য নিরাপত্তা' নীতির ওপর ভিত্তি করে ১৯৯৯ সালে হওয়া একটি সমঝোতার প্রতি সম্মান দেখাতে চাপ দিচ্ছে। ওই সমঝোতা অনুযায়ী, কোনো দেশই অন্য দেশের নিরাপত্তা খর্ব করে নিজেদের নিরাপত্তা জোরদার করতে পারে না।

চীন এবং রাশিয়া ক্রমেই আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠছে। ইউক্রেনে চালানো রাশিয়ার আগ্রাসনকেও ‘দেশটিকে নিরস্ত্রীকরণের জন্য একটি বিশেষ অভিযান’ বলে অভিহিত করেছে চীন। এমনকি ন্যাটোর পূর্বমুখী সম্প্রসারণকে ইউক্রেন সংকটের জন্য দায়ী করেছে চীন। বিশ্নেষকরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের প্রেক্ষাপট ও এশিয়ায় মার্কিন কর্মকাণ্ডের প্রভাবের বাইরে এই প্রথম 'অবিভাজ্য নিরাপত্তা'র পক্ষে যুক্তি দিয়েছে চীন।

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস ওয়াশিংটনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে শি জিনপিংয়ের বক্তৃতা সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, অবিভাজ্য নিরাপত্তার ধারণাসহ আমরা ক্রেমলিন থেকে যা শুনেছি তা তোতাপাখির বুলি ছাড়া কিছুই নয়। চীন যদি ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে রাশিয়াকে বস্তুগত কোনো সমর্থন দেয় তবে চীন গুরুতর পরিণতির মুখোমুখি হবে। যদিও ওয়াশিংটন এখনও বেইজিং থেকে মস্কোকে এ ধরনের সহায়তা প্রদান করতে দেখেনি।

ভাষণে শি জিনপিংও একতরফা নিষেধাজ্ঞা ও 'বিদেশিদের আইনি হস্তক্ষেপে'র বিরুদ্ধে চীনের অবস্থানের বিষয়টি তুলে ধরেন। তবে ইউক্রেনে হামলার পর রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলো যেসব শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে সেগুলোর প্রসঙ্গ সরাসরি উল্লেখ করেননি তিনি। পশ্চিমাদের সতর্ক করে তিনি বলেন, অর্থনৈতিকভাবে পৃথক করে দেওয়ার চেষ্টা এবং সরবরাহ শৃঙ্খল ছিন্নের মতো চাপ প্রয়োগের কৌশল কাজে আসবে না।

সিঙ্গাপুরের এস রাজারত্নম স্কুল অফ ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক লি মিংজিয়াং বলেছেন, ‘চীন যদি তাইওয়ান বা দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের পদক্ষেপকে নিরাপত্তা উদ্বেগের উপেক্ষা করে বলে মনে করে, তবে এটি অবিভাজ্য নিরাপত্তা ধারণার উদ্রেক হতে পারে। চীন বরাবরই পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার সমালোচনরা করে আসছে।

ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের চীন বিশেষজ্ঞ জুড ব্ল্যাঞ্চেট বলেছেন, শি জিনপিংয়ের বক্তৃতা সম্ভবত বর্তমান বৈশ্বিক অস্থিতিশীলতার সমাধান হিসাবে বেইজিংয়ের পররাষ্ট্রনীতির উপাদানগুলিকে উপস্থাপন করার একটি প্রচেষ্টা ছিল।

(ঢাকাটাইমস/২২এপ্রিল/এসএটি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
হিরো আলমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগে মামলা
প্যাথলজিক্যাল নমুনা বিদেশে পাঠাতে অনুমতি লাগবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
বেইলি রোডে ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টারে আগুনের সূত্রপাত নিয়ে যা জানা গেল 
শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করতে পারেন জর্জিয়া মেলোনি: ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা