দাতা সংস্থাগুলোর অর্থপুষ্ট প্রকল্পগুলোকে হাওরাঞ্চলে জনবান্ধব করার দাবি

হাওরাঞ্চলের মানুষ চায় সহযোগিতা, চায় ভালোভাবে বেঁচে থাকার অবলম্বন। আর সেই কাজটি সরকারের সহযোগিতার পাশাপাশি কিছু এনজিও, দাতা সংস্থা ও কিছু প্রতিষ্ঠান আবার গবেষণাও করছে। সহায়তা করেই যেন দায়িত্ব শেষ।
দ্বীপ সদৃশ গ্রামের অসহায় মানুষগুলো কতটুকু উপকৃত হচ্ছে, না অপকার হচ্ছে কেউ তা নিয়ে ভাবছেও না, কেউই খোঁজও নিচ্ছে না। ফলে হাওরাঞ্চলের মানুষের না বলা কথাগুলো সবার চোখের আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। তবে গবেষণা আর সহযোগিতার নামে আর দুর্ভোগ পোহাতে চায় না তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে তাহিরপুর উপজেলায় সম্প্রতি ‘ফেইস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান তারা উপজেলার কয়েকটি গ্রামে বাঁশের ঘর তৈরি করে গরিব পরিবারে হস্তান্তর করেছেন। যার নাম তারা দিয়েছেন ‘খুদি বাড়ি’। দোতলা বিশিষ্ট বাড়িটি তৈরি করা হয়েছে বাঁশ, টিন ও কাঠ দিয়ে। রয়েছে দোতলায় ওঠার জন্য বাঁশের সিড়ি। উত্তর ও দক্ষিণ দিকে দুটি বড় জানালা। বর্ষায় নিচ তলায় পানি উঠে গেলে দোতলায় মানুষজন থাকতে পারবে। এ বাড়িগুলো তৈরি করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কিটেক্টরা।
এমনই একটি বাড়ি পেয়েছেন তাহিরপুর উপজেলার সদর ইউনিয়ন রতনশ্রী গ্রামের বাসিন্দা জবেদা বেগম। তিনি জানান, এই বাড়িটি আমাকে দিয়েছে ফেইস নামে একটি প্রতিষ্ঠান। উপকার হলেও বৃষ্টি হলে পানি ভেতরে ঢুকে বিছানা ভিজে যায়, ফলে ঘরে থাকা যায় না। আর বাঁশ ও কাঠে পোকা ধরছে। প্রবেল বেগে তুফান হলে টিনের চালাগুলো উড়ে যাবার উপক্রম হয় ফলে আতংকে থাকি। একেই কথা এই গ্রামের ঘর পাওয়া আছমা বেগম, শিল্পা বেগমসহ অনেকেই।
কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাওরের সহজ আর অল্প শিক্ষিত মানুষদের জন্য এই বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ এবং বসবাসের জন্য উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়নি। প্রতিনিয়ত ঝড়-বৃষ্টির সঙ্গে যুদ্ধ করা মানুষেরা এক ধরনের একা মানবেতর জীবনযাপন করছে।
কিন্তু জেলার সচেতন মহল বলেন, গবেষণার নামে এই অব্যবস্থাপনার দায় কার? আশা করবো, হাওর অঞ্চলে ভবিষ্যতে এই ধরনের গবেষণা কাজ যেন বাস্তবসম্মত এবং জনবান্ধব হয়। আবারও এই সুবিধা নিতে গিয়ে অর্থিক সুবিধাও নিচ্ছে গোপনে কিন্তু আবারও সহায়তা পাবার আশায় এ নিয়ে কেউ মুখ না খোললেও এমনও তথ্য জানা যায়।
দাতা সংস্থাগুলোর অর্থপুষ্ট প্রকল্পগুলো যেন জনগণের কষ্টের কারণ না হয়। সবার সার্বিক অংশগ্রহণ এবং দায়িত্বশীলতার চর্চা যেন এখানে থাকে তার দাবি জানান, হাওরাঞ্চলে বিভিন্ন এনজিও সংস্থা থেকে সহায়তা পাওয়া অসহায় মানুষরা।
এ বিষয়ে ‘ফেইস’ নামে এ প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীল একজন জানান, নদী ভাঙ্গন ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের উপকারের জন্য এই খুদি বাড়ি দেয়া হয়েছে। এটি আমাদের প্রথম গবেষণামূলক কাজ। এই প্রকল্পটি আরো কিভাবে উন্নত করা যায় তা নিয়ে কাজ করছি। ঘরগুলোতে পানির কিছুটা সমস্যা ওই এলাকার উপকারভোগীরা আমাদের জানিয়েছে। সেগুলো তাদেরকেই সমাধান করতে হবে।
(ঢাকাটাইমস/১৩জুন/এআর)

মন্তব্য করুন