ইউরোপের নাগরিকদের স্বাভাবিক জীবনযাপন নষ্ট করতে চায় রাশিয়া: জেলেনস্কি
ইউরোপে জ্বালানি সংকট তৈরির মাধ্যমে প্রত্যেক নাগরিকের স্বাভাবিক জীবনযাপন রাশিয়া নষ্ট করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
বিবিসি জানায়, শনিবার যুদ্ধের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন জেলেনস্কি।
জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়া যেখানে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা করতে পারেনি সেখানে আর্থিক ও রাজনৈতিক সংকট তৈরির মাধ্যমে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে।
গত শনিবার রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস সংস্থা গ্যাজপ্রম ইউরোপে অনির্দিষ্টকালের জন্য গ্যাস সরবরাহ বন্ধের ঘোষণা দেয়। বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশ জি-৭ জোটের নেতৃবৃন্দ রাশিয়ার তেলের ওপর মূল্য নির্ধারণের ঘোষণা দেয়। তারপরই গ্যাজপ্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের ঘোষণা দেয়। এছাড়া, যেসব দেশ জি-৭ জোটের সিদ্ধান্তে সহমত প্রকাশ করবে, সেসব দেশে তেল সরবরা করবে না বলেও জানায় রাশিয়া।
এরপরই জেলেনস্কি রাশিয়ার বিরুদ্ধে উপরের অভিযোগ করেন।
ইউরোপের দেশগুলোর নেতৃবৃন্দও গ্যাস সরবরাহ বন্ধের মাধ্যমে রাশিয়া সংকট তৈরির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন। তবে মস্কো এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকেই ইউরোপজুড়ে গ্যাসের দাম কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে নতুনভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য গ্যাস সরবরাহ বন্ধের কারণে গ্যাসের দাম আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে।
চলতি শীতে বহু পরিবারের পক্ষে গ্যাসের দাম মেটানো কঠিন হয়ে যাবে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে, ইউরোপজুড়ে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সরকার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ বাধাগ্রস্তের কারণে জার্মানি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত শনিবার জার্মানি ৫৬ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। আর রাশিয়াকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে আর বিবেচনা করেন না বলে জানিয়েছেন চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস।
ইউরোপও রাশিয়ার জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণের মাধ্যমে আর্থিকভাবে মস্কোকে চাপে রাখার চেষ্টা করছে।
আর রাশিয়ার অনির্দিষ্টকালের জন্য গ্যাস সরবরাহ বন্ধের ঘোষণায় বিস্ময়ের কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিচেল।
গ্যাজপ্রমের গ্যাস বন্ধ ঘোষণার পর এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ‘‘গ্যাসকে যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিজ্ঞার পরিবর্তন হবে না। আমরা জ্বালানি স্বাধীনতায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার জন্যও আরও পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। নাগরিকদের রক্ষা এবং ইউক্রেনের স্বাধীনতাকে সমর্থন দেওয়া আমাদের দায়িত্ব।’’
(ঢাকাটাইমস/৪সেপ্টেম্বর/আরআর)