ধর্ষণের সাক্ষ্য আইন ফের সংশোধনসহ তিন দফা দাবি ১০২ নাগরিকের

ধর্ষণের সাক্ষ্য আইন ফের সংশোধনসহ তিনদফা দাবি জানিয়েছেন দেশের ১০২ জন নাগরিক।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গবেষক, সাংবাদিক, লেখক, নাট্যশিল্পী, নারী অধিকার কর্মী ও কর্মীজীবীরা স্বাক্ষর করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে নারীবাদী সংগঠনসহ আইনি সংগঠন ও অ্যাক্টিভিস্টরা ধর্ষণের ভিকটিমের চরিত্র হনন করার আইনি বৈধতার বিরুদ্ধে সংগঠিতভাবে প্রতিবাদ করে আসছেন।
গত ৩ নভেম্বর ‘সাক্ষ্য আইন সংশোধন ২০২২’ এর মাধ্যমে ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইনের ১৫৫(৪) ধারাটি বাতিল করার বিল সংসদে পাস হয়। এই ধারা অনুসারে ‘কোনো ব্যক্তি যখন বলাৎকার বা শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে ফৌজদারিতে সোপর্দ হন, তখন দেখানো যেতে পারে যে অভিযোগকারিণী সাধারণভাবে দুশ্চরিত্রা।
সংবাদটি যেভাবে মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে, মনে হবে ধর্ষণের শিকার নারীকে আইনসিদ্ধভাবে চরিত্রহননের অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি চিরতরের জন্য ঘটে গেছে। কিন্তু বাস্তবে তো ঘটেনি। সাক্ষ্য আইন সংশোধন ২০২২ এর ২০ নং ধারায় ১৪৬(৩) ধারার সংযোজনে লেখা আছে ভিকটিমকে তার ‘সাধারণ চারিত্রিক ব্যভিচারিতা’ এবং ‘পূর্বতন যৌন আচরণ’ নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে। তবে তার জন্য আদালতের অনুমতি লাগবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ধর্ষণের ভুক্তভোগীর চরিত্র হননের আইনসিদ্ধতাকে বাতিল করার জন্য নারী আন্দোলনের খুব সুনির্দিষ্ট দাবি-দাওয়া ছিল। এ প্রসঙ্গে ব্লাস্টের আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে লিখিত প্রস্তাব উল্লেখযোগ্য: সাক্ষ্য আইনের ৫৩(এ), ১৪৬(৩) এবং ১৫০(এ) ধারাগুলোর প্রতিটিতে একটি উপধারা অন্তর্ভুক্ত করা হোক এবং ১৫৫(৪) বাতিল করা হোক (১৭ নভেম্বর ২০২১)। শুধু ১৫৫(৪) ধারা বাতিল করে সরকারের দাবি যে, নারীর চরিত্র নিয়ে আর প্রশ্ন করা যাবে না- এটি এদেশের নারী সম্প্রদায়ের সঙ্গে চালাকির নামান্তর।
বিবৃতিতে বলা হয়, এদেশের নারী অধিকার আন্দোলনের দাবি রেইপ শিল্ড ল’ও, যেমনটি আছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। ভারতের ২০১৩ সালের আইনে বলা হয়েছে, ধর্ষণ মামলার বিচারের ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীর চরিত্র বা যৌন আচার-আচরণের ইতিহাস সম্পূর্ণরূপে অপ্রাসঙ্গিক। ধর্ষণ ঘটেছিল কি না (সম্মতি ছিল কি ছিল না) এটি বিবেচনা করার জন্য আসামিপক্ষের আইনজীবী জেরাকালে ভুক্তভোগী ভালো মেয়ে না মন্দ মেয়ে, তার পরনে কী ছিল, তার কয়জন প্রেমিক, ভালো মেয়ে হলে এত রাতে কেন একা বেরিয়েছিল- এ ধরনের কোনো প্রশ্ন করতে পারবেন না বা প্রমাণাদি হাজির করতে পারবেন না। একই সঙ্গে, এটিও গুরুত্বপূর্ণ যে, ভারতের সাক্ষ্য আইন ‘নিরঙ্কুশ’, অর্থাৎ ধর্ষণ মামলায় এমন কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটতে পারবে না যেটি ব্যতিক্রম বলে বিবেচিত হবে এবং নারীর চরিত্র নিয়ে আকারে ইঙ্গিতে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে। সেটি বেআইনি।
বিবৃতিতে যেসব দাবি জানানো হয় সেগুলো হলো- ধর্ষণের ভিকটিমের চরিত্রহনন করার বিধান সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হোক। ‘সাক্ষ্য আইন সংশোধন ২০২২’ পুনরায় সংশোধন করে ভুক্তভোগীর চরিত্র হননের সকল ধারা/উপধারা বিলুপ্ত করা হোক।
দ্রুত রেইপ শিল্ড ল’ তৈরি করে বাস্তবায়ন করা হোক।
সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের সরকারি ভাষ্যের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাস করানোর উপায় বের করা হোক।
(ঢাকাটাইমস/২৭ডিসেম্বর/এফএ)
সংবাদটি শেয়ার করুন
নারীমেলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
নারীমেলা এর সর্বশেষ

পাঁচ বছরে পা দিল সেভ দ্য সিস্টার্স

ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব লিডারশিপের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি পেলেন সীমা হামিদ

বিশ্ব রেকর্ডে নাম লেখালেন বাংলাদেশের বিড আর্টিস্ট আনিসা

মিছিল-স্লোগানে মুখর বিচ্ছিন্ন রাজশাহীর রাজপথ

কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি সুরক্ষা আইনসহ সাত দফা দাবি জেন্ডার প্লাটফর্মের

১০ থেকে ৮০ শতাংশ দাম বৃদ্ধি, প্রসাধনসামগ্রী কিনতে গিয়ে মন বেজার নারীদের

যে কারণে কর্মক্ষমতা কমছে মায়েদের

প্রতিবন্ধী নারী উদ্যোক্তা উন্নয়নে ভার্চুয়াল আলোচনা

অনুষ্ঠিত হল হোমমেড ফুড ফেস্টিভ্যাল ‘শেফস বিয়ন্ড হোম’
