ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে নাস্তানাবুদ দিনাজপুরবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক, দিনাজপুর
| আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫:৪৬ | প্রকাশিত : ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৩:৪৬

দিনাজপুরে মৌসুমে সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা শনিবার রেকর্ড করা হয়েছে। হাড় কাঁপানো শীত, কনকনে ঠান্ডা বাতাস ও গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির মতো নেমে আসা কুয়াশায় নাস্তানাবুদ উত্তরের জনপদ দিনাজপুরের মানুষ।

কয়েক দিন ধরে হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় জেঁকে বসেছে শীত। দিনের বেলা একটু হালকা হলেও বাকি সময় মাঠ-ঘাট ঢেকে থাকছে ঘন কুয়াশায়। রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল ও যানবাহনের সংখ্যা কমে গেছে। বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষ।

দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, জেলায় শনিবার মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ। সকাল ৯টায় বাতাসের গতিবেগ নির্ণয় করা হয়েছে ০০৬ নটস।

শুক্রবার দুপুরের পর সূর্যের দেখা মিললেও শনিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদরে ছেয়ে যায় মাঠঘাট প্রান্তর।

কনকনে ঠান্ডা বাতাস ও ঘন কুয়াশায় জবুথবু অবস্থা। রাস্তাঘাটে লোকজন চলাচল কম। কমে গেছে যানবাহনও চলাচল। আর যেসব চলাচল করছে, সেগুলোতে দিনের বেলাতেও জ্বলছে হেড লাইট। রাত থেকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে। রাস্তাঘাট ভিজে গেছে। শীতের তীব্রতায় শহরের মানুষও খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। তীব্র কুয়াশা আর হাড় কাঁপানো শীতে খেটে খাওয়া মানুষ ও রিকশা-ভ্যান চালকরা দুর্ভোগে পড়েছেন। শীতবস্ত্রের অভাবে দুর্ভোগে পড়েছেন গরিব ও ছিন্নমূল মানুষ।

চিরিরবন্দর উপজেলার আন্ধারমুহা গ্রামের বাসিন্দা ময়েজ উদ্দিন (৬০) জানালেন, ‘এবার যে ঠান্ডা বাহে, ঘর থাকি বাহির হওয়াও যাচ্ছে না। হাত-পাও খালি কামরাচ্ছে। একখান কম্বল কাহো দিলে শীতখান পার হইল বাও। গতবার চেয়ারম্যান একনা কম্বল দিছিল, এবার খবরে পাও নাই।’

জেলায় শীতার্ত মানুষের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণ এখন খুবই জরুরি বলে জানিয়েছে সচেতন মহল।সরকারিভাবে জেলায় এ পর্যন্ত ৮০ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও ৭০ হাজার শীতবস্ত্র চেয়ে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ে জরুরি বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে।

তবে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবির পাশাপাশি বেসরকারিভাবে প্রকৃতি ও জীবন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র,ট্রাই ফাউন্ডেশন শাহী অনলাইন পণ্য, প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব, আমার চ্যানেল আই দর্শক ফোরাম, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও ব্যক্তি বিশেষের শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ১২২ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগ শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি। তবে হাসপাতালে রোগী ভর্তির চেয়ে বহির্বিভাগে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেশি বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সোহেল রানা।

এদিকে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় আলু এবং বোরো ধানের বীজতলার ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। কিছু কিছু বোরো চারায় এরই মধ্যে হলুদ হয়ে জ্বলে যাচ্ছে। তবে কিছু কৃষক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বোরো চারার ক্ষেত পলিথিনে ঢেকে দিয়েছেন।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুজ্জামান জানিয়েছেন, 'ঘন কুয়াশা গম ও সরিষার জন্য ভালো হলেও আলু, বোরো ধানের বীজতলার জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু এবার আগেভাগে বোরো বীজতলা তৈরি হওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা কিছুটা কম। তবে এ বিষয়ে আমরা মাঠ পর্যায়ে চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছি। যাতে বীজতলা রক্ষা পায়।'

(ঢাকাটাইমস/৭জানুয়ারি/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :