দুর্নীতি বিরোধী স্লোগান নিয়ে সারাদেশ ঘুরছেন হানিফ বাংলাদেশি

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫:৩১

ঘুষ দুর্নীতি-দুঃশাসন ও অর্থপাচার এবং নৈতিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে 'বদলে যাও, বদলে দাও' স্লোগান নিয়ে দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলার প্রশাসনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন মো. হানিফ। তিনি হানিফ বাংলাদেশি নামে পরিচিত।

বুধবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে ৫৭তম জেলা হিসেবে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক এবং ৪৪৮তম উপজেলা হিসেবে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে নিকট স্মারকলিপি দিয়েছেন তিনি।

স্বাধীনতার ৫১ বছর ধরে চলমান দুর্নীতি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে চলমান এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের ৬৪ জেলা ও ৪৯৫ উপজেলা প্রদক্ষিণ করে, জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্বারকলিপি দেবেন বলে জানিয়েছেন মো. হানিফ।

তিনি বলেন,'এই কাজ আমি গত ৫ জুন কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা থেকে শুরু করেছি। প্রতিদিন ৩ উপজেলা প্রদক্ষিণ করে ৩০ জানুয়ারি পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলায় গিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত করবো।'

কর্মসূচি সম্পর্কে হানিফ আরও বলেন, 'সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার সর্বক্ষেত্রে সামাজিক পারিবারিক মানবিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় চলছে, ভোট গণতন্ত্র আইনের শাসনের ওপর পূর্বের সরকারে যারা ছিলেন সে সময়েও নগ্ন হস্তক্ষেপ হয়েছে, ঘুষ দুর্নীতি অর্থ পাচার হয়েছে, সামাজিক মানবিক পারিবারিক মূল্যবোধের অবক্ষয় পূর্বেও ছিল এখন আরো চরম আকার ধারণ করেছে। আমাদের দেশের কৃষক উৎপাদনশীল, শ্রমিকরা পরিশ্রমী, ছাত্র যুবকেরা মেধাবী কিন্তু দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি, দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ, দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি আমলা, দুর্নীতিগ্রস্ত বড় বড় ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকা বিদেশ পাচার করে আমাদের সকল অর্জনকে ব্যাহত করছে। এত সম্ভাবনা থাকার পরও দেশ যতটুকু এগিয়ে যাওয়ার কথা ততটুকু এগিয়ে যাচ্ছে না। দেশে অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হচ্ছে কিন্তু মানবিক মূল্যবোধের পতন হচ্ছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আশা করি সম্ভাবনাময় এই অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিতে এবং চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ঘুষ, দুর্নীতি ও অর্থপাচার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা ও পাচারকৃত অর্থ ফেরত এনে যুবকদের মাঝে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে সহজ শর্তে ঋণ ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, ভোট গণতন্ত্র আইনের শাসনের মান উন্নয়নে আরো যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বাংলাদেশ বিশ্বে একটি আত্মমর্যানশীল দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।' দেশের নানা অসঙ্গতি নিয়ে সব সময় প্রতিবাদ করছি।

এর আগেও হানিফ ঢাকা শহরসহ দেশের জনবহুল স্থানে পাবলিক টয়লেট স্থাপনের আন্দোলন করেছিলেন। ২০১৩-২০১৪ সালে দেশে যখন জ্বালাও-পোড়াও শুরু হয় তখন দুই নেতৃত্ব বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছিলেন।

২০১৯ সালের মার্চ মাসে ভোটাধিকারের দাবিতে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পায়ে হেটে পদযাত্রা করেছেন, নির্বাচন কমিশনকে পঁচা আপেল দিয়ে প্রতিবাদ করেছেন। সংসদ ভবনের চার পাশে ১৬ বার প্রদক্ষিণ করে স্পিকারের বরাবর স্বারকলিপি দিয়েছেন। ২০২০ সালে সর্বগ্রাসী দুর্নীতির বিরুদ্ধে ৬৪ জেলা প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসক অফিসে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। ২০২০ সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে প্রতীকী লাশ নিয়ে পদযাত্রা করেছিলেন। ২০২১ সালে দেশব্যাপী মার্চ ফর ডেমোক্রেসি গণতন্ত্রের জন্য গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করেছিলেন। বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের দাবি সংসদ ভবনের সামনে ঘণ্টা বাজিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।

২০২১ সালে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রনয়নের দাবিতে মাথায় ভোটের বাক্স নিয়ে ৬৪ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। এখন ৫১ বছর ধরে চলমান দুর্নীতি-দুঃশাসের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্বারকলিপি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়ে কর্মসূচি শুরু করেছেন। তার এই কর্মসূচিতে দেশবাসী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছেন।

(ঢাকাটাইমস/১১জানুয়ারি/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :