আখেরি মোনাজাতে আজ শেষ হচ্ছে ইজতেমার প্রথম পর্ব

টঙ্গী-পূবাইল (গাজীপুর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:৪২ | প্রকাশিত : ১৫ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:২৬

আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে রবিবার শেষ হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। বরাবরের মতো এবারও সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। মোনাজাতে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা দলে দলে যোগ দেবেন। তাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ইজতেমাস্থলে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে গাজীপুর মহানগর পুলিশ।

প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিন শনিবার বাদ ফজর থেকে ইজতেমা মাঠে দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা আলেমরা বিভিন্ন বিষয়ে বয়ান করেন। প্রথম পর্বের ইজতেমায় টঙ্গী ইতোমধ্যেই ধর্মীয় নগরীতে পরিণত হয়েছে। লাখ লাখ মুসল্লির পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে টঙ্গীর তুরাগ তীর।

ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরুব্বি প্রকৌশলী মাহফুজ জানান, প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় দিনের শুরুতে বয়ান করেছেন পাকিস্তানের মাওলানা খোরশিদুল হক। সকালের বয়ানে বলা হয়, পরকালের চিরস্থায়ী সুখ শান্তির জন্য আমাদের প্রত্যেককে দুনিয়াতে জীবিত থাকা অবস্থায় দ্বীনের দাওয়াতের কাজে জানমাল দিয়ে মেহনত করতে হবে। ইমান আমলের মেহনত ছাড়া কেউ হাশরের ময়দানে কামিয়াব হতে পারবে না। দাওয়াতের মেহনত হলো নবুওয়াতি মেহনত। খুলুসিয়াত ও আজমতের সঙ্গে যারা মেহনত করবে, তাদের যে কোনো আমলের ফজিলত বহুগুণ বেড়ে যায়।

শনিবার সকালে ইজতেমা মাঠের পাশে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক আগের দিনের তুলনায় অনেকটা ফাঁকা দেখা গেছে। শুক্রবার জুমার দিন থাকায় দেশের সর্ব বৃহৎ জুমার নামাজে অংশগ্রহণ করার জন্য ফজরের নামাজের পর থকেই ইজতেমা মাঠে জড়ো হতে থাকেন সব বয়সের মানুষ। এ দিন টঙ্গী শহর ও ইজতেমাস্থলের আশপাশ এলাকা যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল। ইজতেমা অভিমুখী সব প্রকার যানবাহনে ছিল ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ভিড়। দুপুরের আগেই ইজতেমা ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। ময়দানে স্থান না পেয়ে মুসল্লিরা সড়ক ও খোলা স্থানে চটের বস্তা, পাটি, চাদর বিছিয়ে জুমার নামাজে শরিক হন।

রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আখেরি মোনাজাতের আগে হেদায়েতি বয়ানের পর বিশ্ব তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বি বাংলাদেশের হাফেজ মাওলানা জুবায়ের আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। মোনাজাতে বিশ্বের সব মানুষের সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা হয়। আয়োজকরা ধারণা করছেন, প্রায় ২৫-৩০ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি আখেরি মোনাজাতে অংশ নেবেন।

ইজতেমার আয়োজক কমিটির মিডিয়া সমন্বয়কারী জহির ইবনে মুসলিম জানান, দ্বিতীয় দিন ইবাদত বন্দেগি করে দিন পার করছেন মুসল্লিরা। তাশকিল কামরায় চিল্লাধারী মুসল্লিদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এখানে তিন দিন, চল্লিশ দিন বা এক বছরের জন্য যেসব সাথী দাওয়াতি কাজে যাবেন তারা নাম অন্তর্ভুক্ত করবেন। এরপর আখেরি মোনাজাতের পর দেশ-বিদেশে বেরিয়ে পড়বেন।

যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক) মো. আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, ইজতেমায় আখেরি মোনাজাতে উপলক্ষে শনিবার রাত ১০টার পর থেকে আখেরি মোনাজাত পর্যন্ত আব্দুল্লাহপুর-ভোগড়া বাইপাস ও কামারপাড়া-মীরেরবাজার এলাকায় পণ্যবাহী গাড়ি ডাইভারশন করা হয়েছে। এসব গাড়ি ইজতেমাস্থলে প্রবেশ করবে না। শুধু ইজতেমার মুসল্লিবাহী বাস ও গণপরিবহন চলাচল করবে।

এখন পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার বিদেশি মুসল্লি এসে পৌঁছেছেন বলে ইজতেমা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

শুক্রবার বিকেলে ও রাতে ইজতেমায় অংশ নেওয়া আরও তিন মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার ফজরের নামজের পর ইজতেমা ময়দানে তাদের জানাজা সম্পন্ন হয়। এর আগে আরও চারজন মুসল্লি মারা যাওয়ার খবর জানা গেছে ইজতেমা মাঠ থেকে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত সাতজন মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইজতেমার আয়োজকরা।

(ঢাকাটাইমস/১৫জানুয়ারি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ইসলাম বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :