বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে কে কখন বয়ান করবেন

মো. রাজীব হোসেন, টঙ্গী-পূবাইল (গাজীপুর)
| আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:১৬ | প্রকাশিত : ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:১২

গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে শুক্রবার বাদ ফজর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব (সাদপন্থী)।

ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে বিশ্ব তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বি মাওলানা সাদ আহমদ কান্ধলভীর অংশগ্রহণের সম্ভাবনা না থাকলেও বৃহস্পতিবার তার তিন ছেলে ও মেয়ের জামাতা ময়দানে এসেছেন।

তারা হলেন- মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ কান্ধলভী, মেজো ছেলে মাওলানা সাঈদ কান্ধলভী ও ছোট ছেলে মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভী। এ ছাড়া তাদের সঙ্গে মাওলানা সাদের মেয়ের জামাতা মাওলানা হাসানসহ সাতজনের একটি জামাত ময়দানে উপস্থিত আছেন।

তাদেরকে ঢাকার হযরত শাহজালাল (রা.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (ইস্তেকবাল) স্বাগত জানান বাংলাদেশের শীর্ষ শুরা সদস্য সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম। তাদের বহনকারী গাড়িটি বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ময়দানে প্রবেশ করে।

বর্তমানে তারা বিদেশি তাবুর ১নং বিল্ডিংয়ে বিশ্ব ইজতেমার শীর্ষস্থানীয় শুরা সদস্যদের সঙ্গে অবস্থান করছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়কারী মোহাম্মদ সায়েম।

দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব চলবে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত। শুক্রবার বাদ ফজর পাকিস্তানের মাওলানা ওসমানের আমবয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। তার বয়ান তাৎক্ষণিকভাবে বাংলায় তরজমা করছেন মাওলানা জিয়া বিন কাসিম।

সকাল ১০টায় তালিম করেন মাওলানা ইউসুফ। তার তালিমের বাংলায় অনুবাদ করবেন বাংলাদেশের মাওলানা মনির বিন ইউসুফ। শুক্রবার ইজতেমা মাঠে জুম্মার নামাজ পড়াবেন দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ কান্ধলভী। পরে বয়ান করবেন ওয়াসিফুল ইসলাম। এদিন বাদ আসর নিজামউদ্দিন মারকাজের মাওলানা সাঈদ বিন সাদ বয়ান করবেন এবং তার তরজমায় থাকবেন মুফতি আজিমুদ্দিন। মাগরিব বাদ মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ এবং তা বাংলায় তরজমা করবেন মাওলানা ইউসুফ।

শনিবার (২১ জানুয়ারি) বাদ ফজর ভারতের মাওলানা ইয়াকুব পেশ করবেন, তার বয়ান বাংলায় তরজমা করবেন মাওলানা মুনির বিন ইউসুফ। বাদ জোহর বয়ান করবেন তুর্কির মাওলনা ওমর, বাদ আসর বয়ান করবেন মাওলানা ইলিয়াস বিন সাদ কান্ধলভী। তাদের বয়ান বাংলায় তরজমা করবেন মাওলানা ওসামা ইসলাম। বাদ মাগরিব বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা আব্দুস সাত্তার, তার বয়ান তরজমা করবেন মাওলানা জিয়া বিন কাসিম।

রবিবার (২২ জানুয়ারি) বাদ ফজর বয়ান শুরু করবেন ভারতের মাওলানা বাংলাদেশী মুরসালিন। আর হেদায়তী বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ কান্ধলভী। তার বয়ান বাংলায় তরজমা করবেন মাওলানা জিয়া বিন কাসিম। এরপর আখেরি মোনাজাতও পরিচালনা করবেন মাওলানা ইউসুফ বিন কান্ধলভী।

ইজতেমার নিরাপত্তা ব্যবস্থা:

বৃহস্পতিবার থেকেই দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় পুলিশ, র‌্যাব, কিউআরটি, আনসারসহ সাদা পোশাকধারী বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যসহ ১০ হাজার আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ইজতেমা মাঠের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ৩ শতাধিক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা স্থাপনের করা হয়েছে। ১৩টি প্রবেশপথসহ চারপাশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হচ্ছে ক্লোজসার্কিট ক্যামেরাগুলো।

এছাড়াও থাকছে মেটাল ডিটেক্টর, বাইনোকুলার, পুলিশ ও র‌্যাবের ষ্ট্রাইকিং ফোর্স, বোম ডিসপোজাল ইউনিট, নৌ টহল, হেলিকপ্টার টহল, মুসলিল্লদের খিত্তাওয়ারী মোটরসাইকেল টহল। নিরাপত্তা ব্যবস্থা মনিটরিং এর জন্য একটি প্রধান কন্ট্রোল রুম ও সাব কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের গৃহীত কার্যক্রম:

ইজতেমায় আগত দেশি-বিদেশি মুসল্লিদের স্বাগত জানিয়ে তোরণ, নিরাপত্তার জন্য র‌্যাব ও পুলিশের ওয়াচ টাওয়ার, ৩১টি শৌচাগার আট হাজার ৮৮৪টি টয়লেট ও ২৯৪টি গোসলখানা নির্মাণ করা হয়েছে। ফগার মেশিনের মাধ্যমে মশক নিধন কার্যক্রম গ্রহণ, ইজতেমা কর্তৃপক্ষের চাহিদা মোতাবেক ব্লিচিং পাউডার সরবরাহসহ ইজতেমা চলাকালে গার্বেজ ট্রাকের মাধ্যমে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম নিশ্চিত করা হয়েছে।

দ্বিতীয় পর্বের প্রথম দিন কে কখন বয়ান করবেন: শুক্রবার বাদ ফজর পাকিস্তানের মাওলানা ওসমানের বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে। তার বয়ান বাংলায় অনুবাদ করবেন জিয়া বিন কাশিম।

সকাল ১০টায় তালিম করবেন মাওলানা ইউসুফ। তার তালিমের বাংলায় অনুবাদ করবেন বাংলাদেশের মাওলানা মনির বিন ইউসুফ। শুক্রবার ইজতেমা মাঠে জুম্মার নামাজ পড়াবেন দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ কান্ধলভী। পরে বয়ান করবেন ওয়াসিফুল ইসলাম। এদিন বাদ আসর নিজামউদ্দিন মারকাজের মাওলানা সাঈদ বিন সা’দ বয়ান করবেন এবং তার তরজমায় থাকবেন মুফতি আজিমুদ্দিন। মাগরিব বাদ মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ এবং তা বাংলায় তরজমা করবেন মাওলানা ইউসুফ।

পানির ব্যবস্থা:

ময়দানে আগত মুসল্লিদের ওজু গোসলসহ অন্যান্য কাজে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৪ কোটি লিটার পানির প্রয়োজন হয়। সেজন্য পূর্বের স্থাপন করা ১৪টি গভীর নলকূপের পাশাপাশি এবার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ময়দানে নতুন করে ১ হাজার ফুট গভীর ২টি নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে।

গ্যাস সংযোগ:

ইজতেমা ময়দানের উত্তর-পশ্চিম কোণে বিদেশি মেহমানদের জন্য নির্ধারিত কামরার পাশে ১৪০ থেকে ১৫০ পিএসআই উচ্চচাপ সম্পন্ন গ্যাসের লাইন সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সেখানে শুধু বিদেশি মেহমানদের রান্নার কাজ হয়ে থাকে।

ময়দান জুড়ে প্রায় ৫শ মাইক:

আগত মুসল্লিরা যাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে শীর্ষ মুরব্বিদের বয়ান শুনতে পারেন সেজন্য শব্দ প্রতিধ্বনিরোধক ৩২০টি ছাতা মাইক এবং বিদেশি মেহমানদের বয়ান শোনার জন্য বিদেশি কামরা ও তার আশপাশে ২০০টি ইউনিসেফ (প্রতিধ্বনি প্রতিরোধক) মাইন স্থাপন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইজতেমা ময়দানের মাইকের জামাতের শীর্ষ জিম্মাদার মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক।

ভাসমান পন্টুন সেতু:

ইজতেমা ময়দানে আগত মুসল্লিদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিতে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা টঙ্গী-কামারপাড়া ব্রিজ থেকে আব্দুল্লাহপুর-টঙ্গী সংযোগ ব্রিজ পর্যন্ত তুরাগ নদে পাঁচটি ভাসমান পন্টুন সেতু তৈরি করেছেন। পন্টুন সেতু দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম অঞ্চল থেকে আগত মুসল্লিরা সহজে তুরাগ নদ পারাপার হতে পারবেন।

ফায়ার সার্ভিস:

ইজতেমাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের একটি কন্ট্রোল রুম থাকবে। সেখানে সার্বক্ষনিক কর্মকর্তাসহ ফায়ারম্যানরা অবস্থান করবেন। টু-হেলার মোটর সাইকেল টহল, ফায়ার ফাইটিং ইউনিট, ষ্ট্যান্ডবাই লাইটিং ইউনিট, মোবাইল জেনারেটর ও প্রতি খিত্তায় দুজন ফায়ারম্যান থাকবে। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে এ্যাম্বুলেন্স, অগ্নি নির্বাপন গাড়ি, পানিবাহী গাড়ি, ডুবুরি ইউনিট, রেসকিউ বোর্ড, রেসকিউ গাড়ি থাকবে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাসহ ৩৬১ কর্মী সার্বক্ষনিক উপস্থিত থাকবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় রেড ক্রিসেন্ট ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ইজতেমায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা:

ইজতেমার ময়দান ও আশপাশের এলাকায় সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে উত্তরা, টঙ্গী সুপার গ্রিড ও টঙ্গী নিউ গ্রিডকে বরাবরের মতোই মোট ১৩২ কেভি সোর্স হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে, যাতে করে একটি গ্রিড অকেজো হলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ বাধাগ্রস্ত না হয়। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সকল প্রকার ব্যবস্থা ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৫ টি ১১ কেভি ফিডার লাইন ও ১৯ টি বিতরণ কেন্দ্র করা হয়েছে। হঠাৎ কোন কারনে ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে পড়লে সাথে সাথে যাতে বদল করা যায় তার জন্য স্ব স্ব স্থানে ট্রলি ট্রান্সফরমার রাখা হবে। এছাড়া অতিরিক্ত ব্যবস্থা হিসাবে ৪ টি জেনারেটর সব সময় প্রস্তুত থাকবে। ডেসকোর প্রায় ২শতাধিক কর্মী পালাক্রমে ২৪ ঘণ্টা কর্মরত থাকবেন।

(ঢাকাটাইমস/২০জানুয়ারি/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :