পাঠ্যপুস্তক সংশোধন নয়, বাতিলের দা‌বি ইসলামী আন্দোল‌নের

নিজস্ব প্রতি‌বেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫:১৫ | প্রকাশিত : ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫:০৩

বিতর্কিত ও অবৈজ্ঞানিক মানব সৃষ্টিতত্ত্বে অনুপ্রবেশ, ট্রান্সজেন্ডার, পৌত্তলিক ও ব্রাহ্মণ্যবাদী সংস্কৃতির আধিপত্য, ইসলামকে ভিনদেশি সাব্যস্ত করা এবং প্লেগারিজমের মতো নিন্দনীয় কাজের আশ্রয়ে মাধ্যমিক স্তরের যে পাঠ্যপুস্তক তৈরি করা হয়েছে তা সংশোধন নয়, বাতিলের দাবি জা‌নি‌য়ে‌ছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

রবিবার রাজধানীর পল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম এ দাবি দাবি জানান।

এছাড়া বিতর্কিত পাঠ্যপুস্তক বাতিলের দাবিতে দুই দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন তিনি।

মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘পাঠ্যসূচির অধিকাংশ অধ্যায়ে আদিম সভ্যতা, হিন্দু ও বৌদ্ধধর্মের শাসন ইতিহাস এবং নগরায়ণের কথা বলা হয়েছে এবং শেষের অধ্যায়ে অল্প পরিসরে সুলতানি আমলের ইতিহাস আলোচিত হয়েছে। বাংলায় প্রায় ৬০০ বছরের মুসলিম শাসনকে আগেকার মৌর্য ও গুপ্ত সাম্রাজ্য, সেন, পাল আমল এবং পরের ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি শাসনের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘হিন্দুধর্মের ধর্মীয় গ্রন্থ বেদকে এক ঐতিহাসিক দলিল হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। পাল ও সেন আমলকে ইতিহাসের প্রাচীন যুগ বলে মুসলিম শাসনকে বহিরাগত হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সুলতানি শাসনব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য হিসেবে জবরদখল করে শরীয়াহ আইন প্রতিষ্ঠা, একনায়কতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা, মুসলমানদের সাম্প্রদায়িক সুবিধাজনক অবস্থান, বর্ণভেদ চালু করা, নারীদের শোচনীয় অবস্থা ইত্যাদি বিষয় চিত্রায়ন করা হয়েছে।’

স্বদেশী আন্দোলন এবং ক্ষুদিরাম সূর্যসেনদের সশস্ত্র আন্দোলনের কথা এসেছে জা‌নি‌য়ে ইসলামি আন্দোলনের এই আমীর বলেন, ‘বাংলার ইসলামি আন্দোলনের একমাত্র উল্লেখ পাওয়া যাচ্ছে নবম-দশম শ্রেণির ‘ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা’ বইতে। সেখানেও বৈষম্যটা স্পষ্ট। ফকির বিদ্রোহ, তিতুমীরের আন্দোলন, খিলাফত আন্দোলন এক এক পৃষ্ঠা করেও আলোচনা হয়নি।’

ক্ষমতাসীন সরকারের সমালোচনা করে রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পাঠ্যপুস্তকের বিকৃতি ঘটানো ও ইতিহাস থেকে মুসলমানদেরকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলার প্রচলিত ইতিহাসের বিরুদ্ধে গিয়ে পাঠ্যপুস্তকে প্রতিবেশী, ব্রাহ্মণ্যবাদীদের, সুরে সুর মিলিয়ে মুসলিম শাসনকে দখলদারিত্ব ও উপনিবেশিক শাসন বলা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনে করে, এই বই সংশোধন নয়, বরং বাতিল করতে হবে এবং সত্যনিষ্ঠ শিক্ষাবিদ ও উলামাদের সমন্বয়ে নতুন করে বই লিখতে হবে। একই সঙ্গে এই বই রচনার সঙ্গে জড়িতদের ভিন্ন কোনো রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি আছে কিনা তা খুঁজে বের করতে হবে এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’

সুইডেন ও ডেনমার্কে কোরআন অবমাননার প্রসঙ্গ টেনে লিখিত বক্তব্যে রেজাউল করিম বলেন, ‘পশ্চিমাদের আচরণে এটা দিবালোকের ন্যায় প্রমাণিত হয়েছে যে, ইউরোপ আজও মধ্যযুগীয় সংকীর্ণ চিন্তা থেকে বের হতে পারে নাই। সাম্প্রতিক সুইডেনে ও ডেনমার্কে যেভাবে ঘোষণা দিয়ে পবিত্র কুরআনে অগ্নিসংযোগ করে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার প্রতি আঘাত করা হয়েছে, আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘দাবি আদায়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দেশের সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক ধারাবাহিক আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। এরই অংশ হিসেবে ৩ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে প্রতিটি জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল ও ১০ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সুশীল সমাজের সঙ্গে গোল টেবিল বৈঠকের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাও. সৈয়দ মুহাম্মাদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, মাও. গাজী আতাউর রহমান, মুহাম্মাদ আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম আতিকুর রহমান, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম

(ঢাকাটাইমস/২৯জানুয়া‌রি/কেআর/এফএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :