কবিতাগুচ্ছ

রানাকুমার সিংহ
 | প্রকাশিত : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৪:০৪

নৈশ কাহিনি

শিয়রে বারবণিতা—

বেঘোর ঘুমে জায়া!

উলঙ্গ রাতের শেষে

পরিপাটি সকাল—

সমাজে ভিন্ন সম্ভাষণ!

ঠোঁটের আক্রোশ

হেঁটে হেঁটে বাড়ি আসে রোদ—

চুম্বনের ছলে নাচে কুমারী মেয়ের চোখ

কাতর আবেগে বসে দম্পতি-চড়ুই!

গভীর রাতের শেষে আধফোটা আলো

পকেটে ঢুকিয়ে ভোরের নরম সূর্য— ঘরে ফেরে

মাতাল মিলিয়ে যায় ঠোঁটের আক্রোশে!

চক্র

প্রতিক্ষণ অমাবস্যা নামে কোথাও না কোথাও

প্রতিক্ষণ পূর্ণিমা নামে কোথাও না কোথাও

প্রতিক্ষণ ভালোবাসা জাগে কোথাও না কোথাও

প্রতিক্ষণ কান্নার ধ্বনি মেশে আর্দ্র হাওয়ায়...

এলোমেলো

পাখিটা গান গেয়েছিল

সমুদ্রের কাছে ছিল অভিমান

প্রাতরাশের প্লেটে ছিল

দুরন্ত শৈশব-বেকার যৌবন!

আকাশে ঘুড়ি, মাটিতে বিদ্বেষ...

আখ্যানগুচ্ছ

কেঁদে যাও আধপোড়া রাত

হৃদয়ে জমাও অনল

তারপর...

মুখোমুখি হয়ো

অন্ধচোখে জ্বেলে দিও

সহসা প্রদীপ...

রঙিন বেদনায় নামে

সূর্যের ক্রোধ

ভেঙে যায় প্রোটেকশন!

কাব্যিক অক্ষরে খেলে

উপোসের শিশু...

উপরে নগ্ন চাঁদ

ঢেকে রাখে পৌষের কুয়াশা এবং

হিম হিম আঙুলের বিমূর্ত কৌশল!

এভাবেই হৃদয়ে জমে আখ্যান কতক...

মুখোশ

মুখোশ খসে পড়ে

মুখ টিকে যায়...

মুখোশ বড়ো সুন্দর

মুখোশের বাক্য ততোধিক!

একদিন একটি মুখোশ খসে পড়তে দেখে

বিস্মিত হই!

প্রথম অভিজ্ঞতা শেষে আর বিস্ময়ে

কাঁপে না অন্তর।

প্রতিদিন শুধু মুখোশ খসা-ই দ্যাখি...

প্রতিদিন শুধু নতুন মুখই দ্যাখি...

এই পৃথিবী আমাদের নয়

এই পৃথিবী আমাদের নয় !

এই একান্ন কোটি বর্গমাইল আমাদের কি ?

যেখানে আমরা রাজত্ব ফলাই-যেখানে

আমরা প্রতিদিন ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বপন করি

ধ্বংসের বীজ!

যেখানে যুদ্ধ ঘোষণা করেছি

ভূমির বিরুদ্ধে—জলের বিরুদ্ধে—সবুজের বিরুদ্ধে

প্রাণের বিরুদ্ধে আর নিজের বিরুদ্ধে নিজে

সেই কবে, সেই কবে!

যুদ্ধে হারজিত থাকবেই, হ্যাঁ,

কখন হারব! হয়তো এবার নতুবা

পার পেতে পেতে বিষবৃক্ষ যেদিন

সমস্ত অক্সিজেন টেনে নেবে অথবা

চাঁদও বিমুখ হবে...

সংবাদটি শেয়ার করুন

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :