ময়মনসিংহে দুদকের গণশুনানি, স্টেশন তত্ত্বাবধায়কের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার নির্দেশ

ময়মনসিংহে অনিয়ম, দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগের ঘটনায় দায়ের হওয়ায় ৬০টি সুনির্দ্দিষ্ট অভিযোগে গণশুনানি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এতে জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
এ সময় গণশুনানির নোটিশ পেয়েও উপস্থিত না থাকার কারণে ময়মনসিংহ স্টেশন তত্ত্বাবধায়ক (সুপারিন্টেডেন্ট) এসএম নাজমুল হক খানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়।
সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত নগরীর টাউন হল তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে এই গণশুনানির আয়োজন করে দুদক বিভাগীয় ও জেলা সমন্বিত কার্যালয়।
এ সময় সেবাবঞ্চিত ও হয়রানির শিকার হওয়ায় ভুক্তভোগীদের দায়ের করা ৬০টি অভিযোগের গণশুনানি করেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক।
এতে অভিযোগকারী বিচার প্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের জবাবদিহি কর্মকর্তারা উপস্থিত হলে শুনানির মাধ্যমে বেশির ভাগ অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হয়।
এ সময় ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সদর সাব-রেজিস্ট্রার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রেলওয়ে, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সোনালি ও কৃষি ব্যাংক, জেলা প্রশাসন, বিআরটিএ ও সমাজসেবা কার্যালয়ের বিরুদ্ধে উত্থাপিত বেশকিছু অভিযোগ আগামী সাত দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়।
সেই সঙ্গে যেসব অভিযোগ ও ঘটনার সাথে আদালতের আদেশ ও নির্দেশনা রয়েছে, তা খতিয়ে দেখে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে পালন করারও নির্দেশ দেন দুদক কমিশনার (তদন্ত)।
এই গণশুনানির মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি)মোস্তাফিজার রহমান।
এর আগে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দুদক জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবুল হোসেন।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক বলেন, প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। এই পাচারের সঙ্গে যারা জড়িত- সমাজে তারা ভিআইপি ও সিআইপি হিসেবে পরিচিত। এই অবস্থায় ‘দুর্নীতি প্রতিরোধের চেয়ে নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত রাখব’ এই স্লোগান বাস্তবায়নের জন্যই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এ জন্য আমি চাই, ময়মনসিংহ দুর্নীতিমুক্ত মডেল জেলা হিসেবে দেশে পরিচিতি লাভ করুক। এ জন্য সকলের সহযোগিতা ও আন্তারিকতা অপরিহার্য।
এই দুদক কর্মকর্তা আরও বলেন, দেশে ২৭টি দফায় দুর্নীতি হয়। এর মধ্যে দুদক শুধুমাত্র একটি দফা নিয়ে কাজ করে থাকে। বাকি ২৬টি দফা সরকারের অন্যান্য দপ্তর নিয়ন্ত্রণ করে। তবে দুর্নীতি সংশ্লিষ্ট ২৭টি দফাই দদুকে হস্তান্তরের জন্য সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির কাছে একটি প্রস্তাবনা পেশ করা হয়েছে।
এছাড়াও গণশুনানিতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- ময়মনসিংহ রেঞ্জ (পুলিশ) ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য, দুর্নীতি দমন কমিশনের (প্রতিরোধ) মহাপরিচালক আক্তার হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মাছুম আহাম্মদ ভূঞা।
এর আগে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন- দুদক ময়মনসিংহ বিভাগের পরিচালক ঋত্বিক সাহা।
এ সময় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন- জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট চক্ষু চিকিৎসক ডা. হরিশংকর দাস।
(ঢাকাটাইমস/১৩মার্চ/এলএ)

মন্তব্য করুন