প্রকাশ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দৃষ্টিনন্দন থার্ড টার্মিনাল

আন্তর্জাতিক মানের যাত্রী সেবা দিতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ শুরু করেছিল সরকার। ২০১৯ সালে শুরু হয়ে প্রকল্পের কাজ দুই তৃতীয়াংশ শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে নির্মিতব্য তৃতীয় টার্মিনালের ৩টি ছবি প্রকাশ করেছে অন্যতম দাতা সংস্থা জাইকা। যাতে দেখা মিলেছে এর দৃষ্টি নন্দন কারুকার্য।
বুধবার সংস্থাটির ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজ থেকে প্রকাশিত ছবিগুলোতে টার্মিনালের অভ্যন্তরীন দৃষ্টিনন্দন সিলিং ও পিলার দেখা যায়। অপরুপ সৌন্দর্য্যে সজ্জিত থার্ড টার্মিনাল দেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এর প্রশংসায় মেতেছেন নাগরিকরা।
জানা গেছে, চলতি বছর অক্টোবরে থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধন করা হবে। গেল ফেব্রুয়ারি মাসে এই টার্মিনালের কাজ পরিদর্শন করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। তিনি বলেছেন, দৃষ্টিনন্দন টার্মিনাল ভবন এখন দৃশ্যমান। প্রায় ৬০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে টার্মিনাল ভবনের অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা এবং বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ চলছে।
তিনি বলেন, যাত্রীসেবা বৃদ্ধি ও নিরাপদ বিমান পরিচালনা নিশ্চিত করতে দেশের সব বিমানবন্দরে রানওয়ের শক্তি বৃদ্ধি, নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণ, নিরাপত্তা ব্যবস্থার আধুনিকায়নসহ অন্য উন্নয়নকাজ চলছে।
টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ করছে স্যামসাং গ্রুপের কনস্ট্রাকশন ইউনিট স্যামসাং কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ট্রেডিং (সিঅ্যান্ডটি) করপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটির নির্মিত স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে বুর্জ খলিফা, পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার, তাইপে ১০১, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের ৪ নম্বর টার্মিনাল, দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচেওন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও আবুধাবির ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক। নতুন নতুন প্রযুক্তি ও সম্ভাবনা উন্মোচনের মাধ্যমে নির্মাণে আধুনিকতা নিয়ে এসেছে স্যামসাং সিঅ্যান্ডটির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন গ্রুপ।
এছাড়াও টার্মিনালের ভেতরের ভবনটির নকশা তৈরি করেছেন বিখ্যাত স্থপতি রোহানি বাহারিন। তিনি সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এয়ারপোর্টের টার্মিনাল-৩, চীনের গুয়াঞ্জুর এটিসি টাওয়ার ভবন, ভারতের আহমেদাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ইসলামাবাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের নকশা তৈরি করেন।
২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় একনেক। নির্মাণ কাজে অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। বৃহৎ এই থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পটির ব্যয় প্রথমে ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে অবশ্য প্রকল্প ব্যয় ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
পাঁচ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটারের এ টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি প্লেন রাখার অ্যাপ্রোন (প্লেন পার্ক করার জায়গা) করা হয়েছে। তবে এ টার্মিনালের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন হবে মডার্ন টার্মিনাল বিল্ডিং। দুই লাখ ৩০ হাজার স্কয়ার মিটারের বিল্ডিংয়ের ভেতরে থাকবে পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য ও অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তির ছোঁয়া।
(ঢাকাটােইমস/১৬মার্চ/এলএম/ইএস)

মন্তব্য করুন