চিকিৎসক না হয়েও টিউমার অপারেশন, শিক্ষার্থীর জীবন শঙ্কটাপন্ন
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে প্রায় ৬ মাস যাবৎ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে এসএসসি উত্তীর্ণ এক শিক্ষার্থী। ওই ছাত্রের ক্ষত স্থানে এখন দ্রুত সার্জারি করতে হবে। ফলে তার লেখাপড়া অনেকটাই অনিশ্চিত বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের তেতইগাঁও গ্রামের মাসুক মিয়ার ছেলে এসএসসি উত্তীর্ণ জাহিদুর রহমানের (১৮) ডান হাতের কনুইয়ে টিউমার সদৃশ সমস্যা দেখা দিলে ২০২২ সালের ৮ অক্টোবর কুলাউড়ায় ডাক্তার এম এ ইসলামের শরণাপন্ন হন। এম এ ইসলাম একজন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক। কিন্তু তিনি নিজেকে সিনিয়র মেডিকেল সার্জারি বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচয় দেন। পাশাপাশি কম খরচে হাতে অপারেশন করে দেবেন, যা অন্য কোনো এমবিবিএস ডাক্তার পারবে না বলেও তাদেরকে জানান।
জাহিদের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, নির্ধারিত তারিখে একটি ব্লেড দিয়ে তার ডান হাতের কনুইয়ে অপারেশন করেন। ওইদিন রাতেই জাহিদ তার হাতের প্রচণ্ড ব্যথায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
জানা গেছে, এম এ ইসলাম এই রোগের কোনো চিকিৎসক নন কিংবা অপারেশন করার কোনো ডিগ্রিও তার নেই। এর আগেও তিনি এই রকম ভুল চিকিৎসার কারণে একটি মামলার শিকার হয়ে জেল পর্যন্ত খেটেছেন। আইন ও মেডিকেল বহির্ভূত তার এই চিকিৎসা, জানান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তবে এখনও তিনি বহাল তবিয়তে কুলাউড়ায় বিভিন্ন চেম্বারে বসে এ রকম চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে, জাহিদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, তার কলেজে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন ভেঙে পড়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য জাহিদকে নিয়ে সর্বশেষ গত ২২ মার্চ সিলেট নর্থইস্ট মেডিকেলের চিকিৎসক ডা. মো. জসিম উদ্দীনের কাছে যান। ওই চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জাহিদের মা রত্না বেগম জানান, জাহিদের ডান হাতের ক্ষত স্থানে পুঁজ দেখা দেয়ায় এখন হাত অপারেশনের বিকল্প নেই। প্রথম অবস্থায় ক্ষত স্থানের মাংসের টুকরো কেটে ঢাকায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে পাঠাতে হবে। কিন্তু এ চিকিৎসায় যে টাকার প্রয়োজন তা জোগাড় করা তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।
(ঢাকাটাইমস/২৮মার্চ/এআর)