ঢাকায় সস্ত্রীক ছিনতাইয়ের কবলে বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক, দুর্বৃত্ত পালাল পুলিশের সামনে দিয়েই

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০১ মে ২০২৩, ১৬:১৯ | প্রকাশিত : ০১ মে ২০২৩, ১৫:৫০

ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে ঢাকায় বেড়াতে এসে রাজধানীর গুলিস্তানে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মো. আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী। গত শনিবার বিকালে সস্ত্রীক রিকশাযোগে যাওয়ার সময় গোলাপ শাহ মাজার এলাকায় তার স্ত্রীর গলা থেকে স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারী।

এই শিক্ষক সস্ত্রীক ছিনতাইয়ের শিকার হলেও ঘটনার পরদিন ছিনতাইস্থলে গিয়ে ফেসবুক লাইভে এ বিষয়ে পুলিশের অবহেলার অভিযোগ তুললে বিষয়টি আলোচনায় আসে। বিষয়টি মনিটরিং শুরু করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সদর দপ্তর। তবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের স্ত্রীর ছিনতাই হওয়া স্বর্ণের চেইন উদ্ধার হয়নি। শনাক্ত হয়নি ছিনতাইকারীও।

এ বিষয়ে পল্টন থানায় একটি মামলা হয়েছে। এরপর ছিনতাইয়ের ঘটনা তদন্তে নেমেছে পুলিশ। এমন তথ্যই জানান পল্টন মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকরতা (ওসি) সালাউদ্দিন মিয়া। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘পেছনের রিকশায় থাকা ছিনতাইকারী সামনের রিকশায় থাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের স্ত্রীর গলার চেইন রিকশার পেছন দিকের ফাঁকা দিয়ে টান মেরে নিয়ে পালিয়ে যায়। আমাদের অনেকগুলো টিম কাজ করছে ছিনতাই হওয়া স্বর্ণের চেইনটি উদ্ধারের জন্য। ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।’

তবে ওই শিক্ষকের অভিযোগ, শনিবার বিকাল ৩টার দিকে স্ত্রীকে নিয়ে রাজধানীর গোলাপশাহ মাজার রোড দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। এসময় এক ছিনতাইকারী তার স্ত্রীর গলার সোনার চেইন টান দিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। সেখানে অবস্থান করা পুলিশকে বিষয়টি জানালেও পুলিশ গুরুত্ব দেয়নি। উল্টা তাকে জেরা করার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, চোখের সামনে ছিনতাইকারী পালিয়ে যাচ্ছে দেখেও পুলিশ চুপচাপ দাঁড়িয়েছিল।

এদিকে পল্টন থানায় অভিযোগ করার ২৪ ঘণ্টা পরও কোনো প্রতিকার না পেয়ে রবিবার বিকালে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ফেসবুক লাইভে আসেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন।

সাড়ে পাঁচ মিনিটের ফেসবুক লাইভে তিনি বলেন, গোলাপশাহ মাজারের একদিকে সচিবালয়, একদিকে গুলিস্তান, অন্যদিকে পুরান ঢাকা। জায়গাটি সবচেয়ে নিরাপদ অঞ্চল হওয়ার কথা ছিল। মাত্র ১০ গজ দূরে পুলিশ বক্স। সেখানে স্ত্রীসহ রিকশায় যাওয়ার সময়, রিকশার পেছনের দিক থেকে ছিনতাইকারীরা তার স্ত্রীর গলায় থাকা সোনার চেইন নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলের পাশেই থাকা পুলিশের গাড়িতে তিনি সাহায্য চাইলেও পুলিশ তাকে কোনো সাহায্য করেননি।

আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী বলেন, ‘আমি যখন পুলিশের কাছে সাহায্য চাইলাম, পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান ছিল, অনেকগুলো পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিল। তারা আমাকে বলল, আপনার ছিনতাই কোন জায়গায় হয়েছে, স্পটটা দেখান। তাদের চোখের সামনে ছিনতাইকারী দৌঁড়ে চলে গেল, তারা ছিনতাইকারী ধরার বদলে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, কোন থানার অধীনে পড়েছে। পুলিশ বলছে- ওটা পল্টন থানায় হয়েছে, আমরা দেখতে পারি না। গোলাপশাহ মাজার একটা গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গলের মতো, সেটা ক্রাইম ট্রায়াঙ্গলে পরিণত হয়েছে। তিন অঞ্চলের পুলিশ তারা কেউ কাজ করছে না। একজন আরেকজনকে দোষ দিচ্ছে।’

অধ্যাপক বলেন, ‘আমি নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমি একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। আমার হাতে তো কোনো ক্ষমতা নেই। কাজেই আমি এখানে যখন পুলিশকে বললাম, একজন আমাকে বলছে- আপনি তো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আপনি গাড়িতে কেন চলাচল করেননি। আপনি কেন রিকশায় চলাচল করেছেন। আপনারা বলেন, আমরা কি গাড়িতে চলাচল করব? এ দেশের হাজার হাজার মানুষ রিকশা দিয়ে চলাচল করে। তাহলে তাদের নিরাপত্তা কে দেবে? আমার গাড়ি নেই, এ জন্য কী আমার নিরাপত্তা থাকবে না। এখানে পুলিশ যে দাঁড়িয়ে আছে, তার কাজ কী? পিকআপে পুলিশ ছিল, তার কাজ কী?’

(ঢাকাটাইমস/০১মে/আরআর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :