নিদারুণ বিড়ম্বনা

প্রেম না পেয়ে চির উপেক্ষার পাথরে ফাটাই মাথা,
ঘৃণার কাহিনী লিখে দিনরাত ভরি জীবনের খাতা।
পূর্ণতা নেই তাইতো নিয়েছি শূন্য থালার অর্ঘ্য,
না পাওয়ার মাঝে আহ্লাদে গড়ি সকল পাওয়ার স্বর্গ।
ফুল চেয়ে আমি যে-ভুল করেছি তার সে মাশুল গুনে,
ছেদন করেছি অস্থি-মজ্জা কন্টকে তরপুনে।
পুণ্য যখন পড়েছে আকালে পাপকে করেছি প্রিয়,
নরকের দ্বারে লাগিয়েছি তালা বুঝিনি তা দূষণীয়।
সুবচন যখন নির্বাসনে কাছে টানি দুর্মুখ,
মিলনে যখন দেখি মলিনতা বিচ্ছেদে পাই সুখ।
কুষ্ঠরোগের আড়ষ্টতায় ভুগলে দানের হাত,
অধিকারবলে কেড়ে নিতে গিয়ে বাঁধাই না সংঘাত।
স্বপ্ন হারিয়ে দু:স্বপ্নের ঘেরাটোপে পড়ি বাঁধা,
গঙ্গাস্নানের পরেও আমার দেহ জুড়ে পঁচাকাদা।
বিপদকে দেখে আপদকে ভাবি আত্মার হরিহর,
বুঝিনি কখনো বিপদের চেয়ে আপদই ভয়ংকর।
জলের আরেক নামই জীবন; ছিলো সেই বিশ্বাস,
অথচ আমারই প্রাণ কেড়ে নেয় সুনামি- জলোচ্ছ্বাস।
সভ্যতাকে শীর্ষে নিয়েছে আগুনের আবিষ্কার,
অথচ সে আগুন নাশ করে আমার যত্নে সাজানো সংসার।
ফুলের সুরভির দুর্ভিক্ষে শোভায় ভরেছি মন,
বুঝিনি বাহার কেবলি সাজায় বাহিরের অঙ্গন।
বিশ্বাস যখন নি:শ্বাস নেবার পায়না শুদ্ধ বায়ু,
অবিশ্বাসের পায়ে ধরে মাগি উজ্বল পরমায়ু।
দৃশ্যে যদি না মিলে বিশ্বের নিয়ন্ত্রকের রূপ,
অদৃশ্যের নিরাকারকেই স্বরূপেতে করি আরোপ।
উচ্চকে যদি না পাই নাগালে তুচ্ছের করি পুজা,
আমার কাঁধে চাপায় নিয়তি পরের কাঁধের বোঁঝা।
আমার এসব বিড়ম্বনার নেই কোনো ইতি-আদি,
সেই অভিযোগের আদালতে আমি নিজেই বিবাদী-বাদী।

মন্তব্য করুন