বিদ্যালয়ের পাশে ময়লার ভাগাড়, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে শিশুরা

মো. ইমরান মাহমুদ, জামালপুর
 | প্রকাশিত : ২২ মে ২০২৩, ০৯:২৯

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে গড়ে উঠেছে মাদাগঞ্জ পৌরসভার ময়লা ভাগাড়। যার ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে বিদ্যালয়ে পড়তে আসা কোমলমতি শিশুরা।

মাদারগঞ্জ পৌরসভাটি ১৯৯৯ সালে স্থাপিত হয় এবং ২০১৮ সালে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয়। এর আয়তন প্রায় ১০.৭৯ বর্গকিলোমিটার।এই পৌরসভায় ৩০ হাজারের অধিক মানুষের বসবাস। পৌরসভায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩ থেকে ৪ টন বর্জ্য তৈরি হয়। অথচ এই বর্জ্য অপসারণে নেই নিদিষ্ট কোনো ময়লার ভাগাড়, নেই কোনো ডাম্পিং স্টেশন।

নিদিষ্ট কোনো ময়লার ভাগাড় না থাকার করনে শহরের সকল ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ও সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের সামনে। এতে করে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে বিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকাগুলোতে। স্কুলে পড়তে আসা সকল শিশু শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সহ পথচারীদের নিত্যসঙ্গী এখন দুর্গন্ধ। শুধু দুর্গন্ধ নয় এই ময়লার ভাগাড় থেকে ছড়াচ্ছে রোগ-জীবাণু।

এ নিয়ে পৌরবাসী সহ বিদয়ালয়টির শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা জমির অভাবে নিদিষ্ট কোনো ময়লার ভাগাড় বা স্থায়ী ডাম্পিং স্টেশন স্থাপন করতে পারেনি।

পৌর শহরে ময়লার ভাগাড়ের পাশে অবস্থিত বালিজুড়ী সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আপশরা তানভীর বলেন, স্কুলের সামনে পৌরসভার ময়লার ভাগাড়ের দুর্গন্ধে স্কুলে ঠিকভাবে ক্লাস করতে পারি না। দূষিত ময়লার গন্ধে পেটফাঁপা ধরে যায় মাঝেমধ্যে বমি সহ পাতলা পায়খানা মত রোগ হয়।

বিদ্যালয়টির তৃতীয় শ্রেণির আরেক শিশু শিক্ষার্থী তাহসিন খান বলেন, এই ময়লার দুর্গন্ধে স্কুলে পড়াশোনা পাশাপাশি মাঠে প্রাণ খুলে খেলা ধুলা করতে পারি না। মাঝেমধ্যে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়, দুর্গন্ধের কারণে ইস্কুলে আসতে মন চায় না।

এলাকায় স্থানীয় মিয়াসাহেব বাড়ির ব্যবসায়ী ফজলুল হক মনে আক্ষেপ নিয়ে বলেন, আমার বাড়ির পাশে এই ময়লার ভাগাড়ের দুর্গন্ধে এই রাস্তা দিয়ে চলতেই পারিইনা বাড়িতে গিয়ে শান্তিতে চারটা খাইতেও পারি। মাঝেমধ্যে দক্ষিণে বাসাতে দুর্গন্ধ আমার ঘরে গিয়ে পৌছায়।

সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা বিথী আফরিন বলেন, ময়লার দুর্গন্ধের জন্য বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি কমে গেছে, বাচ্চারা এই স্কুলে পড়তে চায়না, গত কিছু দিন আগে একজন অভিভাবক তাঁর দুটি বাচ্চাকে এই স্কুলে দিয়ে ছিলো একটিকে নিয়ে গেছে এই দুর্গন্ধের জন্য। নিয়ে যাওয়ার সময় বলছে এই দুর্গন্ধ দূর না করলে তার একটি সন্তানকে এই স্কুলে রাখবে না। বিষয়টি আমি বিদ্যালয়ের সভাপতি ও পৌর মেয়র মির্জা কবীরকে বলেছি কিন্তু এখনো কোনো ব্যবস্থা নেননি।

এদিকে পথচারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাজার সহ আবাসিক এলাকার আবর্জনা এখানে ফেলে ময়লার স্তুপ বানিয়ে রাখছে, এই ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে আমরা পথচারীরা অতিষ্ঠ, দুর্গন্ধে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডা. সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, বর্জ্য-আবর্জনা থেকে বাতাসের মাধ্যমে মানুষের শরীরে রোগ-ব্যাধি আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

এ প্রসঙ্গে মেয়র মির্জা গোলাম কিবরিয়া কবির বলেন, আমাদের পৌরসভার ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা না থাকার ফলে যন্ততন্ত ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখা হয়ে ছিলো। এখন ডাম্পিং জোনের জায়গা নির্ধারিত করা হয়েছে আগামী জুন মাসের মধ্যে পৌর এলাকায় যন্ততন্ত ফেলে রাখা সকল ময়লা দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/২২মে/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

ফরিদপুরে রিকশা চালকদের মাঝে ছাতা-পানি বিতরণ জেলা প্রশাসনের

এক জমি পরিষ্কারের আগুনে পুড়ল আরও ২৫ বিঘার ভুট্টা

জানাজায় গিয়ে আইফোন হারালেন ধর্মমন্ত্রী

উপজেলা নির্বাচন: নোয়াখালীর সুবর্ণচরে প্রতিপক্ষের কর্মীকে পিটিয়ে জখম করলেন চেয়ারম্যান

ইসলামপুরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা চেয়ারম্যান হলেন আ. লীগের সালাম

মাছের সঙ্গে এ কেমন শত্রুতা

পাথরঘাটায় সাংবাদিকদের নামে সাইবার মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন 

চুয়াডাঙ্গায় ৬ বছরের শিশু ধর্ষণ মামলায় বৃদ্ধ গ্রেপ্তার

তীব্র গরমে ধান কাটতে গিয়ে কৃষকের মৃত্যু

শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে কাঁদলেন র‌্যাব কর্মকর্তা

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :