‘চিরকুটে দুই ওসিকে দায়ী করে’ ঝাড়ুদারের আত্মহত্যা

পিরোজপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৬ জুন ২০২৩, ১৬:৫৩| আপডেট : ০৬ জুন ২০২৩, ১৭:৩৮
অ- অ+

পিরোজপুর সদর থানার ঝাড়ুদার আল মামুন (৪০) নামের এক ব্যক্তি বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন।

সোমবার সকালে ইন্দুরকানী উপজেলার গাবছিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে আত্মহত্যার আগে দুই থানার ওসিকে দায়ী করে একটি চিরকুট লিখেছেন এ যুবক।

চিরকুটে তিনি লেখেন, ‘আমি নিরদোশ (নির্দোষ)। আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী ইন্দুরকানী থানার ওসি এনামুল হক আর পিরোজপুর সদর থানার ওসি আবির মো. হোসেন। আমি ইন্দুরকানী থানার ওসির টাকা চুরি করি নাই। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমার মৃত্যুর পর পোস্টমর্টেম (ময়নাতদন্ত) না করে আমাকে মামার বাড়িতে দাফন করবেন’।

ইন্দুরকানী উপজেলার গাবগাছিয়া গ্রামের আবুল কালাম শেখের ছেলে মামুন। প্রায় ১০ বছর ইন্দুরকানী থানায় ঝাড়ুদারের চাকরি করার পর প্রায় দুই মাস আগে ইন্দুরকানী থেকে পিরোজপুর সদর থানায় বদলী হয়ে আসেন। তবে তিনি বাড়ি থেকে পিরোজপুরে এসে তার দায়িত্ব পালন করতেন।

ইন্দুরকানী উপজেলার গাবগাছিয়া গ্রামের একটি বাজারে বিষপানের পর রাতে ঢাকা নেওয়ার পথে মামুন মারা যান। এ গ্রামের আবুল কালাম শেখের ছেলে মামুন প্রায় ১০ বছর ইন্দুরকানী থানায় ঝাড়ুদারের চাকরি করার পর দুই মাস হলো পিরোজপুর সদর থানায় বদলি হয়ে আসেন। তবে তিনি বাড়ি থেকে পিরোজপুরে এসে তার দায়িত্ব পালন করতেন।

মামুনের স্ত্রী মরিয়ম বেগম জানান, তার স্বামী মামুন রবিবার বিকালে বাড়িতে ফেরার পর তাকে খুবই বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। তাকে অনেক বার জিজ্ঞাসা করার পর তিনি (স্বামী) জানান, মসজিদ থেকে একটি জায়নামাজ চুরির অভিযোগে পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবির মোহাম্মদ হোসেন তাকে গালমন্দ ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন।

এ ঘটনায় মামুন কোনো অঘটন ঘটাতে পারে এই আশঙ্কায় পরিবারের সদস্যরা পুরো বিকাল এবং রাতেও তাকে পাহারা দিয়েছে। তবে মামুন সকালে বাজারে গিয়ে আগাছা নিধনের ওষুধ কিনে তা পান করে। এরপর স্থানীয়রা দ্রুত মামুনকে ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে এবং পরবর্তীতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়ায়, দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে রওনা হয় স্বজনরা। এরপর পথে সন্ধ্যা ৭টার দিকে মামুনের মৃত্যু হয়।

মামুনের স্ত্রী অভিযোগ করে আরও বলেন, ইন্দুরকানী থানায় থাকাকালীন ওই থানার ওসি এনামুল হক আমার স্বামীর ওপর বিভন্নভাবে নির্যাতন করত। এমনকি সে পিরোজপুর সদর থানায় যাওয়ার পরও ইন্দুরকানী থানার ওসি ওই থানার ওসির কাছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে আজেবাজে কথা বলেছে যাতে সেখানেও আমার স্বামী নির্যাতিত হয়।

এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে ইন্দুরকানী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক বলেন, আমাদের থানায় কোনো ঝামেলা ছিল না। সে তিনমাস আগে বদলি হয়েছে। তার স্ত্রীর সঙ্গে একটু ঝামেলা ছিল, সেটা নিয়ে তাদের শান্ত থাকতে বলেছি। কর্তৃপক্ষ অফিসিয়াল সিস্টেমে তাকে বদলি করেছিল। তার আত্মহত্যার বিষয়ে আমরা কিছু জানি না।

অন্যদিকে পিরোজপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবির মোহাম্মদ হোসেন জানান, থানায় চুরি কিংবা মামুনকে গালমন্দ ও মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান বলেন, মামুনের আত্মহত্যার বিষয়টি জেনেছি। মামুন এ বিষয়ে আগে কখনো তার কাছে কোন অভিযোগ করেনি। চিরকুটের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

(ঢাকাটাইমস/৬জুন/এআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
পাকিস্তানে বৃষ্টি ও বন্যায় ১১০ জনের প্রাণহানি
এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও নিয়ে ইউটিউবের নতুন নীতিমালা
এবার এনসিপির ‘কলম’ ও ‘মোবাইল ফোন’ মার্কা নিয়ে টানাটানি
সৌদিতে বিদেশি পর্যটক ও ভ্রমণকারীদের জন্য নতুন ড্রাইভিং নির্দেশনা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা