ঢাবির অপরাধবিজ্ঞানের কোর্স পরীক্ষায় নম্বর অসংগতি তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের ‘লোকাল অ্যান্ড গ্লোবাল টেরোরিজম’ কোর্সের পরীক্ষায় নম্বরে অসংগতির একটি অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কোর্স শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
দুই মাসের মধ্যে তদন্তের কাজ শেষ করা এবং প্রভিশনাল (সাময়িক)/ মূল সনদ প্রদান স্থগিত রাখতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদেশে।
গতকাল সোমবার দুপুরে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ একটি রিট আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। গত ৭ জুন দুই শিক্ষার্থীর পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী শামসুদ্দিন বাবুল হাইকোর্টে রিটটি করেন।
শামসুদ্দিন বাবুল সংবাদমাধ্যমকে জানান, অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের সিআরএম-৪১১ নম্বর কোর্সের (লোকাল অ্যান্ড গ্লোবাল টেরোরিজম) মিডটার্ম পরীক্ষায় নম্বরে অসংগতি, ফাইনাল পরীক্ষার আগে সেশনাল নম্বর না দেওয়ার অভিযোগ এনে দুই শিক্ষার্থী একটি রিট করেন। শুনানি শেষে আদালত এ বিষয়ে তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের (শিক্ষা) নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। তদন্ত সাপেক্ষে কোর্স শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়। অধ্যাপক জিয়া রহমান কোর্স শিক্ষক বলে জানান আইনজীবী।
আইনজীবী আরও জানান, তদন্তের কাজ দুই মাসের ভেতর নিষ্পত্তি করতে এবং সাময়িক/মূল সনদ স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। পুনঃফল প্রকাশ করা হলে নতুনভাবে সনদ কার্যক্রম শুরু করতে হবে।
নম্বরের অসংগতির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) বরাবর আবেদন করা হলেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে দাবি করেন ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী।
ওই শিক্ষার্থীর ভাষ্য, ‘২০২২ সালের ২১ ডিসেম্বর সপ্তম সেমিস্টারের ফল প্রকাশিত হলে আমার কয়েকজন বন্ধু ও আমি দেখতে পাই অন্য তিনটি কোর্সে অনেক ভালো করলেও এই একটি কোর্সে আমাদের ফল ভালো হয়নি। অথচ এই কোর্সে পরীক্ষা সবচেয়ে ভালো হয়েছে।’
এ ব্যাপারে গত ২৬ ডিসেম্বর উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) বরাবর আবেদন করেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, ‘কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে আমাদের জবাবদিহি করানোর ও বহিষ্কারের হুমকি দেওয়ার জন্য একটি “যাচাই বাছাই কমিটি” তৈরি করা হয়।’
গত ২৪ মে তাদের অষ্টম সেমিস্টারের ফল প্রকাশিত হয় জানিয়ে ওই শিক্ষার্থী জানান, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে গত ২৫ মে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর আবেদন করেন তারা। উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরীকে এর অনুলিপি দেওয়া হয়। এরপর হাইকোর্টে রিট করলে আদালত তদন্ত কমিটি করে ব্যবস্থা নিতে রুল জারি করেন।
আদালতের নির্দেশ আমলে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কাজ পরিচালনা করবে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
(ঢাকাটাইমস/১৩জুন/ইএস)