ময়মনসিংহে অটোরিকশা চালক হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ২

ময়মনসিংহের তারাকান্দায় অটোরিকশা চালক আব্দুল খালেককে (৬৫) হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। ছিনতাই হওয়া অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টায় জেলার তারাকান্দা থানার জয় বাংলা বাজারের আলম খাঁ মোড় থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার র‍্যাব-১৪ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (অপারেশন ও মিডিয়া) মো. আনোয়ার হোসেন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

আসামিরা হলেন, তারাকান্দার কাকনীকোনা গ্রামের মো. আবুল কাশেমের ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম রতন (২৪), কোতোয়ালী থানার আনন্দিপুর গ্রামের মো. ইউসুব আলীর ছেলে মো. সুমন মিয়া (২৩)।

র‍্যবা জানায়, গত ২৯ জুন সকালে ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা থানাধীন কামারিয়া পূর্বপাড়া গ্রামে সড়কের পার্শ্বে ডোবায় একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন থানা পুলিশকে সংবাদ দেয়। লাশটি ময়মনসিংহের কোতোয়ালী থানাধীন মো. আব্দুল খালেকের (৬৫) বলে সনাক্ত করা হয়।

এ ঘটনায় তার ছেলে মো. সোহাগ বাদী হয়ে তারাকান্দা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ওই ঘটনার পর র‌্যাব-১৪ ঘটনাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামিদের সনাক্ত করা হয়।

এদিকে নিহত আব্দুল খালেক (৬৫) তারাকান্দা থানাধীন কামারিয়া ইউনিয়নের চর ফরিদপুর গ্রামে বিয়ে করে শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করতেন। ভাড়ায় অটো রিকশা চালাতেন তিনি। আসামি শহিদুল ইসলাম রতন আব্দুল খালেকের পূর্ব পরিচিত হওয়ায় প্রায় সময় তার অটোরিকশায় বাড়ি যাতায়াত করতো। আসামি রতন এবং সুমন মিয়া ঋণগ্রস্থ হওয়ায় তারা অটোরিকশা ছিনতাই করে তাদের ঋণ পরিশোধ করার পরিকল্পনা করে এবং সেই পরিকল্পনা মোতাবেক আসামি রতন ঘটনার দিন গত ২৮ জুন বিকালে ভিকটিম আব্দুল খালেকের অটোরিকশা রিজার্ভ ভাড়া করে কোতোয়ালী থানাধীন শম্ভগঞ্জ ব্রীজ এলাকা থেকে জয় বাংলা বাজারে যায়। আসামি রতন অপর আসামি সুমন মিয়াকে ফোন করে ডেকে নেয়। পথে আসামিরা আব্দুল খালেককে হত্যা করে তার অটোরিকশাটি ছিনতাই করার পরিকল্পনা করে।

কিন্তু আসামি রতন পরিচিত হওয়ায় ছিনতাইয়ের পর ঘটনা প্রকাশ হতে পারে ভেবে হত্যা করে ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। সে মোতাবেক জয় বাংলা বাজার থেকে তারা শ্বাসরোধ করে হত্যা করার জন্য রশি কিনে নেয়। পরিকল্পনা মোতাবেক আসামি রতন পথেমধ্যে কয়েক পুরিয়া গাঁজা ক্রয় করে এবং ভিকটিম আব্দুল খালেককে সেবন করতে প্রলুব্দ করলে ভিকটিম গাঁজা সেবন করলে তিনি নেশাগ্র্রস্থ হন এবং কিছুটা ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে, আসামি রতন তাকে অটোরিকশার পেছনে বসায় এবং আসামি সুমন মিয়া অটোরিকশাটি চালিয়ে নিয়ে কামারিয়া গ্রামের ফাকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে আসামি রতন এবং সুমন মিয়া মিলে ভিকটিম আব্দুল খালেককে প্রথমে হাত দিয়ে গলা টিপে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে কিন্তু কাজ না হওয়ায় তারা রশি দিয়ে গলায় পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে এবং মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য গলায় উপুযপুরি কয়েকবার কিল-ঘুষি মারে। এরপর সুযোগ বুঝে ভুক্তভোগীকে রাস্তার পাশে ডোবায় ফেলে দিয়ে আসামিরা অটোরিকশাটি ছিনতাই করে নিয়ে চলে যায়।

আরও পড়ুন: কেন্দুয়ায় পিকআপের চাপায় শিক্ষার্থী নিহত

গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন বলেও জানায় র‍্যাব।

(ঢাকাটাইমস/৩০জুন/এসএম)