আর্জেন্টিনার উৎসবে যাচ্ছে বাংলাদেশি চলচ্চিত্র ‘আম কাঁঠালের ছুটি’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৫ জুলাই ২০২৩, ১৪:৩৭

লেখক শরীফ উদ্দিন সবুজের ‘মইন্না ভাই বল্লা রাশি’ বইকে ভিত্তি করে নির্মিত শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘আম কাঁঠালের ছুটি’ যাচ্ছে আর্জেন্টিনার চলচ্চিত্র উৎসবে। চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন নুরুজ্জামান ডালিম।

আগামী ২৫ থেকে ৩০শে জুলাই পর্যন্ত আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেস শহরে অনুষ্ঠেয় ইউবিএ ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ইন্টারন্যাশনাল ফিচার ফিল্ম কম্পিটিশন বিভাগে অংশগ্রহণের জন্য অফিসিয়াল সিলেকশন পেয়েছে বাংলাদেশি এই সিনেমাটি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে জমা পড়া প্রায় আটশত চলচ্চিত্র থেকে বাছাইকৃত ১২টি চলচ্চিত্র স্থান পেয়েছে এই বিভাগে।

গত শতাব্দীর সত্তর-আশি কিংবা মধ্য নব্বইয়ের দশকে যারা শৈশব-কৈশোর পার করেছেন তারা তাদের সেই বয়সের যাপিত জীবনকে নস্টালজিক আবহে তৈরি এই চলচ্চিত্রে দেখতে পাবেন বলে মনে করেন নির্মাতা। সেই সাথে হারিয়ে যাওয়া কিংবা হারাতে বসা প্রাকৃতিক পরিবেশ আর আমাদের নিজস্ব লোকজ সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হবে নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোররা। চলচ্চিত্রটির আন্তর্জাতিক সংস্করণের নামকরণ করা হয়েছে সামার হলিডে।

উৎসবে সালা মানুয়েল আন্তিন মিলনায়তনে ২৬শে জুলাই এবং ২৮শে জুলাই ‘আম-কাঁঠালের ছুটি’ চলচ্চিত্রের দুইটি প্রদর্শনী থাকছে যথাক্রমে বুয়েনস আইরেস সময় সন্ধ্যা ৬টায় মিনিটে এবং দুপুর ১.৩০ মিনিটে। প্রতিটি শোতেই থাকবে দর্শকের সাথে নির্মাতার প্রশ্নোত্তর সেশন।

কারো সাথে মিশতে না পারা আট বছর বয়সী একটি শহুরে ছেলে গ্রীষ্মের ছুটিতে গ্রামে বেড়াতে এসে কীভাবে নতুন এক জগৎ আবিষ্কার করে, খুঁজে পায় বন্ধুত্ব আর রোমাঞ্চের স্বাদ তারই আখ্যান এই পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র।

সম্প্রতি স্পেনের বার্সেলোনা ইন্ডি ফিল্মমেকার্স ফেস্ট ২০২৩ থেকেও অফিসিয়াল সিলেকশন পেয়েছে ‘আম-কাঁঠালের ছুটি’। গত ২৬শে মে থেকে ১লা জুন পর্যন্ত রাশিয়ার চেবাক্সারিতে অনুষ্ঠিত চেবাক্সারি আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে স্পেশাল জুরি অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে চলচ্চিত্রটি।

গত বছর ২৬শে নভেম্বর থেকে ৩রা ডিসেম্বর পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় অনুষ্ঠিত জগজা নেটপ্যাক এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘আম-কাঠালের ছুটি’ সিনেমার ইন্টারন্যাশনাল প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হয়, এশিয়ান পার্স্পেক্টিভ বিভাগে সিনেমাটির আরও একটি প্রদর্শনী হয় সেখানে। উৎসব কমিটি এবং উপস্থিত দর্শকেরাও সিনেমাটির প্রশংসা করে।

চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে এই চলচ্চিত্রটি পরীক্ষণের সময় সেন্সর কমিটির সদস্যরা খুবই নস্টালজিক হয়ে পড়েন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ড সদস্যরা বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে ব্যতিক্রমী এবং প্রয়োজনীয় একটি কাজ হিসেবে চলচ্চিত্রটির ভূয়সী প্রশংসা করেন।

চলচ্চিত্রের দৃশ্যপট, সাবলীল অভিনয় আর বাস্তবানুগ কাহিনি বিন্যাসে তারা মুগ্ধ হন। বাংলাদেশের চিরায়ত সংস্কৃতি আর সহজ-স্বচ্ছন্দ্য জীবনবোধের এই গল্পে নিজেদেরকে সহজেই মেলাতে পারছিলেন সেন্সর স্ক্রিনিংয়ে উপস্থিত এক একজন দর্শক।

সিনেমাকার প্রযোজিত এই চলচ্চিত্রটির পিছনে রয়েছে দীর্ঘ সাত বছরের পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের গল্প। খুব ছোট একটি কারিগরি ইউনিট আর আনকোরা একদল অপেশাদার অভিনয় শিল্পীদের নিয়ে গাজীপুরের হারবাইদ সংলগ্ন প্রায় পঁচিশ-ত্রিশ কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়ে থাকা লোকেশনে ধারণ করা এই চলচ্চিত্রের সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন নির্মাতা নিজেই, সাথে ছিলেন ম্যাক সাব্বির। প্রযোজনা, পরিচালনা, চিত্রনাট্য রচনার পাশাপাশি সাউন্ড ডিজাইনও করেছেন মোহাম্মদ নূরুজ্জামান।

প্রধান চরিত্রগুলোতে অভিনয় করেছে লিয়ন, জুবায়ের, আরিফ, হালিমা ও তানজিল। আরও ছিলেন ফাতেমা, কামরুজ্জামান কামরুল, আব্দুল হামিদ প্রমুখ। চলচ্চিত্রটির প্রধান সহকারী পরিচালক যুবরাজ শামীম।

দেশের দর্শকদের জন্য আগামী ১৮ই অগাস্ট প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে যাচ্ছে ‘আম-কাঁঠালের ছুটি’। মুক্তির আগে এমন একটি উৎসব থেকে আমন্ত্রণ পেয়ে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত চলচ্চিত্রটির নির্মাতা মোহাম্মদ নূরুজ্জামান।

(ঢাকাটাইমস/২১নভেম্বর/এলএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :