ইরাকে ছেলের নির্যাতনের দৃশ্য সইতে না পেরে ছয় লাখ টাকা পাঠান মা: পিবিআই

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ২৮ আগস্ট ২০২৩, ১৬:১৯

ইরাক প্রবাসী ছেলের নির্যাতন সইতে না পেরে মা খতেজা বেগম অপহরণকারী চক্রের বিকাশ অ্যাকাউন্টে ছয় লাখ টাকা দিয়েছেন। ছেলেকে নির্যাতন করার দৃশ্য সরাসরি ইমোতে দেখে ১২টি বিকাশ নম্বরে এই টাকা দেন বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেটিগেশনের (পিবিআই) ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) ড. খুদরাত ই খুদা। সোমবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআইয়ের সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।

এর আগে ইরাকে বাংলাদেশি এক যুবককে নির্যাতন করে ছয় লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। রবিবার দুপুরে তাদেরকে বাংলাদেশের বরিশাল, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মাগুরা এবং খুলনা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পিবিআইয়ের ভাষ্য, ইরাকে থাকা ভুক্তভোগী ব্যক্তি নৈবাবগঞ্জ থানার দড়িকান্দা গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে মোসলেম মোল্লা। তিনি ২০১৬ সালে জীবিকার তাগিদে কাজের উদ্দশ্যে ইরাক গিয়ে এমন ঘটনার শিকার হন। এ ঘটনার পর ২০২১ সালে মোসলেম মামলা করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- আলী হোসেন, শামীম, শিরিন সুলতানা, মোহাম্মদ ঘরামী, রবিউল ঘরামী, শাহিদা বেগম, সাহনাজ আক্তার লিপি ও আকবর সরদার।

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার বলেন, অপহরণকারীরা মোসলেমকে নির্যাতন করে ইমোর মাধ্যমে তার মাকে ভিডিও দেখিয়ে টাকা আদায় করতো। তারা তার মাকে ভিডিও দেখিয়ে বলতো টাকা না দিলে তাকে হত্যা করবে। এ ঘটনায় মোসলেমের মা চক্রটিকে ১২টি বিকাশে তিন লাখ টাকা পাঠান।

যেভাবে মোসলেমকে ইরাকে নিয়ে অপহরণ করা হয়:

মূলত মোসলেম ইরাকে গিয়েছিলেন কাজের তাগিদে। সেখানে তিনি কাজ করার ফাকে চাকরি হারান। এক সময় বেকার হয়ে পড়েন। এ সময় ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে সেলিম মিয়া নামে একজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তিনি তাকে ভালো বেতনের কাজের প্রলোভন দেখিয়ে আনোয়ার, শাহনেওয়াজ, রুহুল আমিন, মনির, হাসিবুর, সাব্বির দের হাতে তুলে দেন। মোসলেমকে নিয়ে তারা একটি আবদ্ধ রুমে আটক করে রাখেন। এরপর তার সঙ্গে থাকা দুই হাজার ইউএস ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ লাখ টাকা) ও একটি দেড় লাখ টাকা মূল্যের আইফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাকে নির্যাতন করতে থাকেন।

তিন দিন ধরে নির্মম নির্যাতনের পর সেই নির্যাতনের দৃশ্য অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনের ইমো অ্যাপের মাধ্যমে লাইভ ভিডিও কলে ভুক্তভোগী মোসলেমের মা খতেজা বেগমকে দেখানো হয়। পরে তারা ১১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। মোসলেমের মা খতেজা বেগম ছেলের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তাদের পাঠানো ১২টি বিকাশ নম্বরে ২৬টি ট্রাঞ্জেকশনের মাধ্যমে ছয় লাখ টাকা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে ড. কুদরাত ই খুদা বলেন, এ ঘটনায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু আরো আসামি ইরাকে অবস্থান করছে। তারা হলেন- আনোয়ার, শাহনেওয়াজ, রুহুল আমিন, মনির, হাসিবুর, সাব্বিরসহ অনেকে। ইরাকে অবস্থান করলেও বাংলাদশে তাদের পরিবারের সদস্যরা এই মুক্তিপণের টাকা বিভিন্ন বিকাশ এজেন্টের দোকান ও নিজেদের পারসোনাল বিকাশ নম্বর থেকে ক্যাশ আউট করে নিতো। শাহনেওয়াজ অপহরণ চক্রের দলনেতা বলে গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২৮আগস্ট/এএ/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অপরাধ ও দুর্নীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অপরাধ ও দুর্নীতি এর সর্বশেষ

সাবেক এমপি পাপুলের শ্যালিকা জেসমিনের নামে দুদকের মামলা

পরিবহনে চাঁদাবাজি-ছিনতাই, গ্রেপ্তার ১১

নকল বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম তৈরি: ১১ প্রতিষ্ঠানকে ৪৮ লাখ টাকা জরিমানা

উখিয়ায় আরসার আস্তানা থেকে বিপুল অস্ত্র গ্রেনেড ও রকেট শেল উদ্ধার, গ্রেপ্তার ২

৪ কোটি টাকা দুর্নীতি, এলজিইডির সাবেক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ২ সক্রিয় সদস্য গ্রেপ্তার

জঙ্গি সংগঠনে জনবল দিতেন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কর্মকর্তা, ডিবির হাতে ধরা

রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ৩৬

১০৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ: ইউসিবিএলের সাবেক এমডির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

জাল সনদে চাকরি: মোটরযান পরিদর্শক তানভীর আহমেদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :