দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে পরবর্তী ৫০ বছরের সফল সহযোগিতার সম্পর্ক আশা করছে ঢাকা
ঢাকা বিদ্যমান ‘ব্যাপক অংশীদারিত্ব’র সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে পরবর্তী ৫০ বছরের সফল সহযোগিতার সম্পর্কের দিকে তাকিয়ে আছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
তিনি বলেন, ‘আমি কামনা করি, বাংলাদেশ ও কোরিয়া উভয়ই সম্মিলিতভাবে ব্যাপক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বিশেষ করে কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সর্বোত্তম কিছু নিয়ে আসবে।’
মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘কোরিয়া-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সহযোগিতা: উন্নয়নের অভিজ্ঞতা শেয়ারিং এবং সুযোগ অন্বেষণ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু আমরা এ বছর বন্ধুত্বের পঞ্চাশ বছরের মাইলফলক অতিক্রম করছি, আমরা আমাদের দুই দেশের জনগণের পারস্পরিক সুবিধার জন্য আমাদের দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে পরবর্তী ৫০ বছরের সফল সহযোগিতার অপেক্ষায় রয়েছি।’
কোরিয়ান সরকারের এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম (ইপিএস) এর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী, যা কোরিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এই বছরের জন্য বাংলাদেশের জন্য ইপিএস কোটার সর্বোচ্চ সীমা ১০ হাজারে এ উন্নীত করার জন্য এবং জাহাজ নির্মাণ খাতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়োগের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।’
প্রতিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে, কোরিয়ান সরকার বাংলাদেশি কর্মী নেওয়া বাড়ানো এবং আমাদের কর্মীদের জন্য কোরিয়ান কৃষি, মৎস্য, জাহাজ নির্মাণ এবং অন্যান্য পরিষেবা খাতে কাজ করার নতুন সুযোগ উন্মোচন করার বিষয়টি বিবেচনা করবে।
তিনি বলেন, কোরিয়া বাংলাদেশি কর্মীদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতার উন্নতির পাশাপাশি বাংলাদেশি ইপিএস কর্মীদের জন্য কোরিয়া যাওয়ার আগে স্থানীয় কোরিয়ান ভাষার প্রশিক্ষকের মাধ্যমে মধ্যবর্তী স্তর পর্যন্ত কোরিয়ান ভাষা প্রশিক্ষণের বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারে।
আলম বাংলাদেশের জন্য কোরিয়ার ইকোনোমিক ডেভলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ড (ইডিসিএফ) ঋণ পাঁচ বছরের (২০২৩-২০২৭) জন্য ৭০০ মিলিয়ন ডলার থেকে ৩ বিলিয়নে বৃদ্ধি করার জন্য সিউলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘বড় আকারের অবকাঠামো প্রকল্পে অর্থায়নে বাংলাদেশের জন্য রেয়াতযোগ্য ঋণ-অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্প্রসারণ সুবিধা (ইডিপিএফ)-এর জন্য নতুন উইন্ডো বিবেচনা করার জন্য আমি কোরিয়ান সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
কোরিয়া বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য অংশীদার হয়ে উঠেছে জানিয়ে তিনি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধির বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন, যা ২০২২ সালে রেকর্ড সর্বোচ্চ ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নিবন্ধন করেছে।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক, দক্ষিণ কোরিয়ার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হাইওক জিয়ং, ডংসু কিম এবং ডা. জায়েহান চো পৃথক সেশনে বক্তব্য দেন।
কোরিয়ান রাষ্ট্রদূত বলেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী যে বাংলাদেশ তার এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশ হিসেবে স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে গত এক দশকে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয়ের তিনগুণ বৃদ্ধি প্রত্যক্ষ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া ও বাংলাদেশ বর্তমানে দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) নিয়ে আলোচনা করছে। ‘ইপিএ পৌঁছে গেলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে।’
ঢাকাটাইমস/২৯আগস্ট/ইএস