মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা ‍নিয়ে জাপায় ‘অস্থিরতা’

জাহিদ বিপ্লব, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:০০| আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৩০
অ- অ+

সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দেওয়া, নেপথ্যে ভূমিকা রাখা এবং সহযোগিতা করার অভিযোগে বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ শুরু হয়েছে, যা নিয়ে অস্থিরতা আছে জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিতেও।

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি ঘোষণার প্রায় চার মাসের মাথায় শুক্রবার থেকে তা প্রয়োগের কথা জানান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। তার বিবৃতিতে উঠে এসেছে যে, ভিসানীতির আওতায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।

এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘নাম তো অনেকেরই দিতে পারে। তাতে কী? জাতীয় পার্টির সবাই নির্বাচন করতে চায়। আর এ ভিসা নিষেধাজ্ঞায় জাতীয় পার্টির কতজনের নাম এসেছে তা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। এছাড়া এ ভিসানীতি শেষ পর্যন্ত কতটুকু টিকবে তাও দেখার বিষয় আছে।’

এদিকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ হওয়া ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করেনি যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, যারা এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন শুধু তাদেরকেই চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। দেশটি বলছে, গণতন্ত্রের পথে বাধা এবং বিতর্কিত নির্বাচনে যাদের সহযোগিতা রয়েছে তারাই এই ভিসা নিষেধাজ্ঞায় পড়বেন। এদিকে একটি সূত্র বলছে, ভিসা নিষেধাজ্ঞায় জাতীয় পার্টির বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার নাম এসেছে। যাদের সিংহভাগই দলীয় সংসদ সদস্য। গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ইতিমধ্যে জাপার পাঁচ নেতার নাম এসেছে। বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর হওয়ায় নামগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি।

জাতীয় পার্টির কোন কোন নেতা ভিসা নিষেধাজ্ঞায় পড়েছেন তা নিয়ে দলটিতে চলছে নানা গুঞ্জন। সিনিয়র নেতারা আছেন অস্থিরতায়। জাপার কাকরাইল ও বনানী কার্যালয়ে দিনভর এ নিয়ে চলেছে আলোচনা। তারা বলছেন, ‘আমাদের দলের মধ্যে যারা বেশি দলবাজি করেন এবং সরকার বন্দনায় ব্যস্ত থাকেন- তারাই এই নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারেন।’

দলটির নেতাকর্মীরা বলছেন, ‘দলের কিছু সিনিয়র নেতা নিজ স্বার্থে পুরো দলকে বিতর্কিত করছেন। তাদের অপরাধের দায় দল নিতে পারে না।’

এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জহিরুল আলম রুবেল ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘জাতীয় পার্টির কারা ভিসানীতির আওতায় পড়েছেন তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে কোনো ব্যক্তি যদি নিজ স্বার্থে ক্ষমতার অপব্যবহার করে থাকেন এবং গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হয়ে থাকেন, তাহলে দায়দায়িত্ব তার। এ দায়িত্ব দল নেবে না। কোনো অন্যায় ও বিতর্কিত ব্যক্তিকে প্রশয় দেবে না জাতীয় পার্টি।’

দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সুনির্দিষ্টভাবে জাতীয় পার্টির নেতাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞার কোনো কারণ দেখি না। কেউ যদি গণতন্ত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তাহলেই তো এ নিষেধাজ্ঞা আসার কথা। জাতীয় পার্টি গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। সবাইকে নির্বাচন আনার দায়িত্ব তো সরকারের। এজন্য আমাদের প্রতি কেন নিষেধাজ্ঞা আসবে তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না।’

পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল ইসলাম ভুঁইয়া ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘জাতীয় পার্টি জিএম কাদেরের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি বেশ কয়েকটি স্থানীয় ও উপনির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুলেছে জাতীয় পার্টি। তাই জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা আসার কথা নয়। আর কার কার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা এসেছে তাও আমরা জানি না। তবে বিচ্ছিন্নভাবে যদি কারও নাম এসে থাকে দায়দায়িত্ব তার, দলের নয়।’

(ঢাকাটাইমস/২৫সেপ্টেম্বর/জেবি/এফএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মিটফোর্ডের ঘটনায় ভাষা হারিয়ে ফেলিছি, আমরা লজ্জিত: জামায়াত আমির
গাজায় খাবারের অভাবে মানুষের জীবন হুমকির মুখে, ডব্লিউএফপি’র সতর্কবার্তা
এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ জানালো তদন্তকারী সংস্থা
ফিরে দেখা ১২ জুলাই: ছুটির দিনের বিকালে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল সারা দেশ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা