নরসিংদীর রায়পুরা

১০ ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চলছে দোকানঘর ও বাসাবাড়িতে

সেবাগ্রহীতাদের ভোগান্তি

মো. মোস্তফা খান, নরসিংদী
  প্রকাশিত : ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ২০:৩৮
অ- অ+

দেশের বৃহৎ উপজেলা নরসিংদীর রায়পুরায় ২৪টি ইউনিয়ন পরিষদের ১০ টিতেই নেই কোন নিজস্ব ভবন। হাট-বাজারের দোকান ঘর ও ব্যাক্তিগত বাসা-বাড়িতে চলছে এসব ইউনিয়নের কার্যক্রম। জনপ্রতিনিধি ও সেবাগ্রহীতাদের বসার মতো নেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। নিয়মিত পরিচালনা করা যাচ্ছে না গ্রাম আদালতের কার্যক্রমও। অরক্ষিত থাকছে পরিষদের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র। ফলে সেবা গ্রহণ করতে এসে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ইউনিয়নের সাধারণ জনগণ। জানা যায়, উপজেলার চরআড়ালিয়া, আদিয়াবাদ, নিলক্ষা, রায়পুরা, অলিপুরা, চরমধুয়া, মির্জানগর, চরসুবুদ্ধি, হাইরমারা ও মির্জাচরসহ ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের কোন নিজস্ব ভবন নেই। কার্যক্রম চলছে হাঠ-বাজারের দোকান ঘরে ও বাসা বাড়িতে।

ফলে নাগরিকরা স্বাস্থ্য, ডিজিটাল, প্রাণি ও কৃষি সেবাসহ প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এসব সেবা পেতে জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে সেবা গ্রহিতাদের।সেবাগ্রহীতা চরআড়ালিয়ার অলি ভেন্ডার, চরমধুয়ার হেলাল খান, রায়পুরার আব্দুল্লাহসহ আরও অনেকেই বলেন, পরিষদের নিজস্ব ভবন না থাকায় সপ্তাহে ২/১দিন অফিস করেন তারা। জরুরী প্রয়োজনে তাদেরকে পাওয়া যায় না। নির্ধারিত স্থানে নিজস্ব কোন ভবন না থাকায় যখন যে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় তখন তিনি তার পছন্দ মতো জায়গায় অফিস করেন। ফলে দিন দিন আমাদের ভোগান্তি বেড়েই চলেছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার সবচেয়ে অবহেলিত ইউনিয়ন চরআড়ালিয়া। সেখানে স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে স্থানীয় একটি বাজারে ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে টিনসেট ঘর করে সপ্তাহে একদিন প্রতি শনিবার অফিস করছেন। দূর্গমচরাঞ্চলের চরমধুয়া ইউনিয়নেও একই অবস্থা। স্থানীয় বাজারে একটি টিনের ঘর ভাড়া নিয়ে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেখা গেছে।

এদিকে মির্জানগর ইউনিয়নে দেখা গেছে একটু ব্যতিক্রম। ইউপি চেয়ারম্যান প্রথম বারের মতো নির্বাচিত হয়ে নিজের বাসস্থান পাকাবাড়িটি ইউপির কার্যক্রমের সুবিদার্থে ছেড়ে দিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে অন্যত্র বসবাস করছেন।

মির্জানগর ইউপি চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন সরকার রিপন বলেন, ইউনিয়নবাসীর নাগরিক সেবা দিতে নিজের বাসস্থান পাকাবাড়ি ছেড়ে দিয়ে পরিষদের কার্যক্রম চালাচ্ছি। নিজস্ব ভবন হলে শতভাগ নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হতো।

রায়পুরা ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন আলী, চরআড়ালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান সরকার, চরমধুয়া ইউপি চেয়ারম্যান আহসান সিকদারসহ বেশ কয়েকজন বলেন, নিজস্ব ভবন থাকলে বহুমাত্রিক সেবা পেত ইউনিয়নবাসী। জনগণের প্রাপ্য সেবা প্রদানের জন্য দ্রুত নিজস্ব ভবন প্রয়োজন।

উপজেলা প্রকৌশলী শামীম ইকবাল মুন্না বলেন, সম্প্রসারিত ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মান প্রকল্প-৩ এর আওতায় অবশিষ্ট ১০টি পরিষদ ভবন নির্মাণের জন্য প্রস্তাবিত আছে। আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে একনেকে উঠবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর হোসেন বলেন, অবশিষ্ট ১০টি ইউপি ভবন দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্মানের জন্য ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ লাকী বলেন, চেয়ারম্যানরা অনেকেই যার যার ব্যক্তিগত ঘরের মধ্যে আবার কেউ কেউ ছোট দোকানঘর ভাড়া নিয়ে পরিষদের কার্যক্রম চালাচ্ছেন। অবশিষ্ট ১০টি পরিষদের পাকা ভবনের জন্য প্রস্তাবনা একনেকে আছে। আশা করছি দ্রুততম সময়ে মধ্যে হয়ে যাবে। দেশের বৃহৎ উপজেলা নরসিংদীর রায়পুরায় ২৪ টি ইউনিয়ন পরিষদ নিজস্ব পাকা ভবন পাবে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে উপজেলার লাখ লাখ মানুষ নিশ্চিন্তে সেবা গ্রহণ করবে এমনটাই প্রত্যাশা ইউনিয়নের সর্বসাধারণের।

(ঢাকাটাইমস/০৮ অক্টোবর/ইএইচ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
পাক সেনাপ্রধানকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোন, উত্তেজনা কমানোর উপায় খুঁজতে দুপক্ষকে আহ্বান
আ.লীগ নিষিদ্ধসহ তিন দফা দাবি: শাহবাগে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে বিক্ষোভ
পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে ভারতীয় কর্মকর্তার মৃত্যু
বরেণ্য সংগীতশিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসী আর নেই
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা