ধুঁকে ধুঁকে চলছে খুলনা বক্ষব্যাধি হাসপাতাল

শেখ ফেরদৌস রহমান, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৪ নভেম্বর ২০২৩, ২২:২৯
অ- অ+

ওপরের ছাদ ফাটা, নিচে রোগী, ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ছে। এভাবেই ধুঁকে ধুঁকে চলছে ভৈরব নদীর তীরে অবস্থিত খুলনা বিভাগীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতাল। যেখানে ২১ জেলার মানুষের জন্য একমাত্র সরকারিভাবে যক্ষা ও টিবি রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হয়। তবে হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীরা যেমন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে, ঠিক তেমনি চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়সহ অন্যান্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

হাসপাতালটির ৭টি আবাসিক ভবন দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। আর এসব পরিত্যক্ত ভবনে চলে মাদকসেবীদের আড্ডা। পরিত্যক্ত ভবনে মাদক সেবনের সরাঞ্জামাদি বিক্রিসহ চলে বিভিন্ন অপকর্ম।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের জরাজীর্ণ দ্বিতল ভবনের সবগুলো ওয়ার্ড এবং রুমের ছাদের প্লাস্টার খসে পড়েছে। ভবনের ছাদ স্যাঁতসেঁতে চরম ঝুঁকিপূর্ণ। ইতোমধ্যে খুলনা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি) থেকে ভবনটি চরম ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে।

এছাড়া রোগীদের জন্য নির্ধারিত টয়লেটগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। টয়লেটের পাশে পানির ট্যাপগুলো অধিকাংশ অকার্যকর। যে কারণে আন্তঃবিভাগের ভর্তি রোগীদের নিদারুন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পাশাপাশি হাসপাতালটিতে ব্লাড, এক্সরে, ইসিজি ছাড়া অন্য কোনো পরীক্ষার যন্ত্রপাতি নেই। বাকি পরীক্ষাগুলো রোগীদের বাইরে থেকে করাতে হয়। যা গরিব রোগীদের জন্য খুবই কষ্টসাধ্য।

এসব কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিতে অনীহা বাড়ছে। ফলে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যাও দিনে দিনে কমছে।

হাসপাতালটির আন্তঃবিভাগে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজন মালেহা বেগম বলেন, দিনের বেলায় সূর্যের আলো পড়লেও যেন কেমন একটি স্যাঁতসেঁতে অবস্থা থাকে। দেখেন হাসপাতালটির ওপরে ছাদ ফেটে প্লাস্টার খসে রড দেখা যাচ্ছে। আর ধুলোবালির কথা কি বলব? দেশ আধুনিক হচ্ছে উন্নয়ন হচ্ছে তবে এই পুরাতন হাসপাতালটির কেন এমন বেহাল অবস্থা। আমি একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে।

এ বিষয়ে খুলনা বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসা তত্বাবধায়ক ডা. প্রদীপ চন্দ্র মন্ডল বলেন, আমরা হাসপাতালটি সংস্কার বা নতুন ভবনের জন্য একাধিকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। তবে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। শুনেছি গণপূর্ত অধিদপ্তর থেকে এখানে নতুন ভবন নির্মাণ হবে। তবে কবে নাগাদ হবে আমি সঠিক সময় বলতে পারছিনা।

এ বিষয়ে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মনজুরুল মুরশিদ বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছি। ইতোমধ্যে নতুন ভবনের চাহিদার জন্য সব ধরনের অফিসিয়াল কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। এখন গণপূর্ত থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নিলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আশা করি কিছুদিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে।

উল্লেখ্য, পাকিস্তান সরকারের সময়ে ১৯৬৫ সালে ৭ একর জায়গার উপর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট খুলনা বক্ষব্যাধি হাসপাতালটি নির্মিত হয়। নামমাত্র কয়েকদফা সংস্কার করা হলেও বড় ধরণের কার্যকরী কোনো সংস্কার করা হয়নি। ৫৮ বছর বয়সী হাসপাতালের ভবনটি বর্তমানে জরাজীর্ণ এবং খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৪ নভেম্বর/ইএইচ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে আ.লীগকে নিষিদ্ধ করলে ভালো হতো: জামায়াত আমির
জামালপুরে মাদ্রাসায় ছাত্রী ভর্তিকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০
ইউনাইটেড হাসপাতালের কাছে ডিএনসিসির কর বকেয়া ৩০ কোটি টাকা
শহীদ নিজামীর খুনিদের বিচার বাংলার মাটিতেই হবে ইনশাআল্লাহ: রফিকুল ইসলাম 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা