আরও একবার অস্ট্রেলিয়া বোঝাল, ‘ওস্তাদের মাইর শেষ রাইতে’

আরিফ জামান, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০২ | প্রকাশিত : ২০ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৫৮

শেষ হলো ব্যাট-বলের ধুন্ধুমার লড়াই। সঙ্গে স্বপ্ন ভাঙল ১৪০ কোটি ভারতীয়র। ঘরের মাঠে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে তৃতীয় বিশ্বকাপ ঘরে তোলা হলো না রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিদের। তাদেরকে কাঁদিয়ে রেকর্ড ষষ্ঠ শিরোপা জিতে নিল অস্ট্রেলিয়ানরা।

এবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপে শুরু থেকেই বিধ্বংসী ক্রিকেট খেলছিল রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন ভারত। প্রথম পর্বের ৯টি খেলার সবকটিতেই তারা জয় তুলে নেয়। পাত্তা পায়নি কেউই। এমনকি, বিশ্বকাপজয়ী অস্ট্রেলিয়াকেও নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছিল।

ফলে প্রথম পর্বের খেলা শেষে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে সেমিফাইনালে উঠেছিল ভারত। এরপর সেমিফাইনালে গতবারের ফাইনালিস্ট নিউজিল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে ১২ বছর পর বিশ্বকাপ ফাইনালের টিকিটও নিশ্চিত করেন রোহিত শর্মারা।

অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার এবারের বিশ্বকাপ মিশনটা শুরু হয়েছিল খুবই বাজেভাবে। প্রথম দুটি ম্যাচেই ভারত এবং সাউথ আফ্রিকার কাছে বড় ব্যবধানে হারতে হয় তাদের। এরপর তৃতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় দিয়ে শুরু হয় প্যাট কামিন্সদের বিজয়যাত্রা।

এরপর আর একটি ম্যাচও হারেনি ছয়বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। যদিও প্রতিটি ম্যাচেই জিততে তাদের প্রচুর ঘাম ঝরাতে হয়েছে। তবে প্রতিটি ম্যাচেই তারা একটু একটু করে উন্নতি করেছে। বলতে গেলে কচ্ছপ গতিতে এগিয়ে সেমিফাইনালে ওঠে ম্যাক্সওয়েলরা।

সর্বাধিক বিশ্বকাপজয়ী এই দলটির খেলা দেখে অনেকেই ভবিষ্যদ্বাণী করেন, বিশ্বকাপ জয় তো দূর অস্ত, এবার সেমির টিকিটই পাবে না অস্ট্রেলিয়া। সেই তারাই সেমিতে উঠে ‘চোকার’ খ্যাত সাউথ আফ্রিকাকে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে।

তারপরও এবার অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে আশাবাদী ছিল খুব কম মানুষই। কারণ, আসরের প্রথম ম্যাচেই ভারতের কাছে তারা যেভাবে নাস্তানাবুদ হয়েছিল, তাতে ক্রিকেট-বোদ্ধাদের অনেকেই বলেন, ফাইনালেও ভারতের কাছে পাত্তা পাবে না অস্ট্রেলিয়ানরা।

কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে হয়েছে ঠিক ‍উল্টো। এবার অস্ট্রেলিয়ার কাছেই পাত্তা পায়নি ভারতীয়রা। ৬ উইকেটে ফাইনাল ম্যাচ জিতে, ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে ষষ্ঠ বিশ্বকাপ শিরোপা হাতে তুলে অজিরা আরও একবার প্রমাণ করেছে, ‘ওস্তাদের মাইর শেষ রাইতে’।

রবিবার দুপুর আড়াইটায় আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া ম্যাচে টসে জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় অস্ট্রেলিয়া। ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে টেনেটুনে ২৪০ রান সংগ্রহ করেন রোহিত শর্মারা। সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেন কেএল রাহুল। এছাড়া বিরাট কোহলি ৫৪ এবং দলপতি রোহিত শর্মা করেন ৪৭ রান।

অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের পক্ষে ৫৫ রান খরচায় সর্বোচ্চ তিন উইকেট শিকার করেন বাঁ-হাতি পেসার মিশেল স্টার্ক। দুটি করে উইকেট নেন জস হ্যাজেলহুড ও অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। এছাড়া একটি করে উইকেট পান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও অ্যাডাম জাম্পা।

দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে অস্ট্রেলিয়াও পড়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে। মাত্র ৪৭ রাতে প্রথমসারির তিন ব্যাটারকে হারায় তারা। তখন মনে হচ্ছিল, ২৪১ রানের মামুলি টার্গেটেই বোধহয় অজিদের কুপোকাত করে দেবে ভারতীয় বোলিং অ্যাটাক।

কিন্তু সেই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নামা মার্নাস লাবুশেনকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন ওপেনার ট্রাভিস হেড। দুজনে ভারতীয় বোলারদের খেলতে থাকেন দেখেশুনে। ক্রমেই চওড়া হয়ে ওঠে হেডের ব্যাট। একপ্রান্ত থেকে তিনি ভারতীয়দের পেটাচ্ছিলেন, অন্য প্রান্ত আগলে রাখেন লাবুশেন।

অজিদের এই জুটি গড়েন ১৯২ রানের পার্টনারশিপ। তাতেই জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। জয় থেকে মাত্র ২ রান বাকি থাকতে ব্যক্তিগত ১৩৭ রানে আউট হন ট্রাভিস হেড। এরপর ব্যাটে নেমে জয়সূচক শর্টটি খেলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় আহমেদাবাদের নীল সমুদ্রে হলুদের উৎসব।

ফাইনালের আগে অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘আমরা জানি, রবিবার ফাইনালে শুধু একটি দলেরই সমর্থক থাকবে, মাঠে অনেক হইচই হবে। সেই হইচই চুপ করিয়ে দেওয়ার চাইতে তৃপ্তি কিছু হতে পারে না।’ দিলেনও তাই।

(ঢাকাটাইমস/২০নভেম্বর/এজে)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

খেলাধুলা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :