অবকাঠামো উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে এলজিইডি
নির্বাহী প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে চাঁদপুরে ৫২ কোটি টাকার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বাংলাদেশ সরকারের একটি সাংগঠনিক অধিদপ্তর। স্থানীয় সরকারের আওতাভুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভবন তৈরির ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং সাহায্যের জন্য বাংলাদেশ সরকার ৬০ এর দশকে পল্লীপূর্ত কর্মসূচি বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে কার্যক্রম শুরু করলেও সময়ের পরিক্রমায় এর পরিধি ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয়েছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এলজিইডি গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করলেও পরবর্তীতে কাজের পরিধি ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করে। এলজিইডি স্থানীয় পর্যায়ে অবকাঠামোগত সুবিধা সৃষ্টির মাধ্যমে দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে তিনটি সেক্টরে কাজ করে থাকে।
এগুলো হচ্ছে- পল্লী উন্নয়ন, ক্ষুদ্রাকার পানিসম্পদ উন্নয়ন ও নগর উন্নয়ন। একইসঙ্গে স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোকে কারিগরি সহায়তা প্রদান করা হয় সংস্থাটি থেকে।
এলজিইডির সার্বিক কর্মকাণ্ড দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা রাখছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে শহরের সীমানায় রয়েছে এলজিইডির বিশাল কর্মযজ্ঞ। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি এলজিইডি শহর ও নগর অঞ্চলের অবকাঠামো উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। নগর স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানসমূহকে (পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশন) কারিগরি সহায়তা প্রধান ও এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ব্যবস্থা ও দক্ষতা উন্নয়নেও এলজিইডি সম্পৃক্ত।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান কবির চলতি বছরের ৭ মাৰ্চ যোগদান করার পর থেকে ভিন্ন আঙ্গিকে চাঁদপুরকে এগিয়ে নেওয়ার কাজ করে যাচ্ছেন। কাজের গুণগত মান ঠিক রাখার স্বার্থে সঠিকভাবে তদারকি করছেন তিনি। সদা হাস্যোজ্বল, দক্ষতাসম্পন্ন, চৌকস একজন সরকারি কর্মকর্তা দক্ষতা দিয়ে কর্মকাণ্ডকে যেমনি সচল রেখেছেন তেমনি আন্তরিকতা দিয়ে সহকর্মীদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন তিনি। কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধের কারণে তিনি সকলের কাছে প্রশংসিত হয়েছেন। তার দক্ষ নেতৃত্বে উল্লেখযোগ্য প্রকল্পের আওতাধীন ৫২ কোটি টাকা ব্যায়ের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
সেগুলো হল- ১৫ কোটি টাকা ব্যায়ে ৩০টি সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ, ৪০ লাখ টাকার হাজীগঞ্জে দেশ খাগুরিয়া ভাটরা শিবপুর ব্রিজ নির্মাণ, ৩০ কোটি টাকা ব্যায়ে ৩৫টি সড়কের উন্নয়ন, ৫০ লাখ টাকা ব্যায়ে হাজীগঞ্জের দেশগাঁও ইউপি ভূমি অফিস নির্মাণ, ২ কোটি টাকা ব্যায়ে পুকুর-খাল প্রকল্প, লাংস ব্রিজ প্রকল্পের অধীনে ২টি ব্রিজের কাজ চলমান, হাজীগঞ্জের টোড়াগর এবং মহামায়ায় ৪ কোটি টাকা ব্যায়ে দুটি ব্রিজের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে।
এলজিইডি চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান কবির ঢাকা টাইমসকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের আমলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে সারাদেশে (এলজিইডি) উন্নয়ন কাজ রেকর্ড গড়েছে। কারণ অতীতে অন্য কোনো সরকারের আমলে এতো বেশি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। এছাড়াও স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এবং এলজিইডির বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ মহসিন স্যারের ঐকান্তিক চেষ্টা ও আন্তরিকতায় সারা দেশের ন্যায় চাঁদপুরের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নিরবিচ্ছিন্ন রাখার সময় রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি মোবাইল মেনটেনেন্স কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। ফলে কম খরচে অধিক সংখ্যক মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে। এলজিইডি দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রকৌশল সংস্থা। পল্লী অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ এবং হাট-বাজার ও গ্রোথ সেন্টার উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিকে গতিশীল করতে এলজিইডি যে অবদান রেখেছে তা আজ দৃশ্যমান। দেশের ক্রমবর্ধমাণ প্রবৃদ্ধি অর্জনে এসব অবকাঠামোর অবদান অপরিসীম। প্রত্যন্ত পল্লীর মানুষ আজ সর্বোচ্চ দুই কিলোমিটারের মধ্যে পাকা সড়ক ব্যবহারের সুবিধা পাচ্ছে।
মো. আহসান কবির আরও বলেন, উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়নে অবকাঠামোর তথ্যভান্ডার, ম্যাপ, কারিগরি বিনির্দেশ (টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন), ম্যানুয়াল ইত্যাদি প্রণয়ন এবং দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি ও কর্মদক্ষতা বাড়াতে সংস্থার নিজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান অন্যান্য অংশীজনদের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে এলজিইডি।
উল্লেখ্য, এলজিইডি চাঁদপুরে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান কবির ২০০১ সালে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ইতিপূর্বে তিনি ২০০৯ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত উপজেলা প্রকৌশলী, ২০১৯ সাল পর্যন্ত সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী এবং ২০২০- ২১ সালে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে গাইবান্ধা জেলায় সৎ ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। পূর্বের পদে থাকা অবস্থায় তিনি তার মেধা যোগ্যতার অর্জিত অভিজ্ঞতার মধ্যদিয়ে এ বিভাগের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারি, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এবং সুধীজনদের নজর কেড়েছেন।
(ঢাকাটাইমস/০৫ডিসেম্বর/ইএইচ)