তারুণ্যের চোখে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

মো. সাইমুম রেজা
 | প্রকাশিত : ১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:৫৯

স্বাধীনতার ৫২ বছরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৭৫ বছর বয়সী চূড়ান্ত পরিণত একটি সমৃদ্ধ সংগঠন। দলটি ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র যুক্তফন্ট, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণঅভুত্থান, ৭০’র নির্বাচন ও ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে। বাংলাদেশ জন্মের ও বর্তমান অবস্থানের রূপকার তাই আওয়ামী লীগ- এ কথা সহজেই উচ্চারণ করা যায়।

২১ শতকে বাংলাদেশের অনন্য সম্পদ হলো তারুণ্য। আর এই তারুণ্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বলীয়ান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বদ্ধপরিকর। এ দেশের ৪ কোটি ৫৯ লক্ষ তারুণ স্বপ্ন দেখে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার বেকারত্ব হ্রাস করে অর্থনৈতিক ভারসাম্যতা ও কাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে আইনের অনুশাসন ও গণতন্ত্রের চর্চায় সমৃদ্ধ একটি দেশ উপহার দিবে। আমি মনে করি, এভাবেই স্বাধীনতায় নেতৃত্ব দেওয়া আওয়ামী লীগের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে এক অনন্য উচ্চতায় উপনীত হবে।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার আদর্শ অভিন্ন হলেও উভয়েই ডায়নামেটিক ও ক্যারিশম্যাটিক। একারণে তাদের নেতৃত্ব সবসময় সহজেই তারুণ্যের মন জয় করতে পেরেছে। তাই 'এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম'- বঙ্গবন্ধুর এই এক ডাকে সাড়া দিয়ে তরুণেরা যেভাবে দেশ স্বাধীন করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল একইভাবে তাঁর কন্যার 'উচ্চ আদর্শ ও সাদামাটা জীবনাচরণ এই হোক তোমাদের আদর্শ' কথাটি আত্মস্থ করে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখছে এ দেশের ছাত্র, তরুণ, যুবকেরা।

বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ধারাবাহিকতায় সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে এ দেশের তারুণ্যের মনন জগতে ভিন্নভাবে জোয়ার সৃষ্টি করেছেন। বর্তমান বিশ্ব তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর। এই নতুন বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এ দেশের তরুণদেরও গড়ে ওঠা প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয় দেশে একটি ডিজিটালাইজেশনের কাঠামো তৈরি এবং সেই কাঠামোর ভেতর দিয়ে দেশের ছাত্র ও তরুণ সমাজকে বেড়ে ওঠার পরিকল্পনা নিয়ে হাজির হন। জনতার আকুণ্ঠ সমর্থন লাভ করে গত ১৫ বছরে এই পরিকল্পনা আজ সফল। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ আজ নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে এবং উন্নত দেশে পরিণত হবার স্বপ্ন দেখছে।

বিগত আওয়ামী লীগের শাসনামলে বেকারত্বের ভয়াল আঘাতের শিকার তারুণ্য জনগোষ্ঠী ব্যাপক কর্মসংস্থানের জায়গা তৈরি করতে পেরেছে। বর্তমানে শিক্ষা ব্যবস্থার মান্নোয়ন, দুর্নীতি ও ঘুসহীন চাকরিপ্রাপ্তির ব্যবস্থা, সরকারি চাকরির পাশাপাশি বেসরকারি ও প্রযুক্তিগত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে তারুণ্যের আস্থা ও ভরসার জায়গায় উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

আইন প্রণয়ন থেকে শুরু করে আইনের অনুশাসন বাস্তবায়ন করা পর্যন্ত তারুণ্যের স্থানও করে দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। তার অন্যতম উদাহরণগুলো হলো বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে তারুণ্যের অংশগ্রহণ, তারুণ্যকে মনোনয়ন দিয়ে সংসদ নির্বাচনের সুযোগ এবং নির্বাচনের ইশতেহারে তারুণ্যের কথা উল্লেখ করা। যারা তরুণ সাংসদ হবেন তারা দেশের শাসন ব্যবস্থায় অবদান রাখবে- এই ধারণা থেকেই আওয়ামী লীগ দলের প্রধান তরুণদের মনোনয়ন দিয়েছেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচন করতে উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। তাই এবার তারুণ্যের প্রতীক হিসেবে নৌকা প্রতীকটি আরও বেশি বেগবান হয়েছে।

অন্যান্য সরকার ব্যবস্থায় দুর্নীতির ভয়াবহ অবস্থা বিতাড়িত করে বিগত ১৫ বছরে বিশ্ব মঞ্চে নিজেদের অর্থনৈতিক ভারসাম্যতা শক্ত করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। উক্ত ভারসাম্যতায় স্থান পেয়েছে তরুণ উদ্যোক্তা, আউটসোর্সিং, ইনফ্লুয়েন্সার ও তারুণ্যের প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন সেক্টর। উক্ত কাজগুলোকে নিরাপদ, সাশ্রয়ী, যুগপোযোগী করে তোলার জন্য সরকারের অর্থায়নে প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় উপকরণ-উপাদান সামগ্রী প্রদান করে যাচ্ছে। তাই তারুণ্যের কণ্ঠে বেজে উঠে- ‘আওয়ামী লীগ সরকার, বারবার দরকার।’

গত দশকের কাঠামোগত চিত্র আর বর্তমান বাংলাদেশের দৃষ্টান্ত যেন এক অভাবনীয় কল্পনা। কে ভেবেছিল বহুমুখী পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নেই নির্মিত হবে, হবে ট্যানেল, এলিভেয়েট এক্সপ্রেসওয়ে কিংবা মেট্রোরেল। বলা যায়- এক অভাবনীয় উন্নয়নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে আওয়ামী লীগ। দেশকে বানিয়েছে টেকসই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে। তাই সকলের কানে কানে বেজে ওঠে ‘উন্নয়নের সরকার, বারবার দরকার।’

বিশ্বের চতুর্থ গণপ্রজাতন্ত্র রাষ্ট্র হলো বাংলাদেশ। এখানে আছে ছাত্র, যুবক, শ্রমিক, কৃষকসহ অন্যান্য সংগঠন। দেশের রুট লেভেল থেকে চলে গণতন্ত্রের চর্চা- যার ফলশ্রুতিতে ইউনিয়ন নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন, পৌরসভা ও সিটি নির্বাচন হয়ে থাকে। আর জাতীয় নির্বাচনের আমেজ সমস্বরে জেগে থাকে সারা দেশে। বিভিন্ন দল, মত ও ব্যক্তিত্বের দ্বারা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হয়ে সুযোগ হয়ে ওঠে দেশ পরিচালনায়। সদ্য সমাপ্ত হওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আমাদের সামনে এক দৃষ্টান্ত হয়ে এসেছে। যেখানে শুধুমাত্র তারুণ্যের বিশ্বাস নয়, আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থা রেখে একসাথে কাজ করেছে আরো বেশ কয়েকটি প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। ২০২৪-এর নবগঠিত আওয়ামী লীগ সরকার তাদের বর্তমান সরকার পরিচালনায় দেশকে আরও উন্নত করবে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে- দেশের সকল মানুষ এটাই প্রত্যাশা করে। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক এবং মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী উপমহাদেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ চিরজীবী হোক।

মো. সাইমুম রেজা: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :