ক্রেডিট কার্ড হ্যাকার

রেজাউল মাসুদ
 | প্রকাশিত : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:১৭

ব্র্যাক ব্যাংকের কার্ড ডিভিশন থেকে সিকিউরিটি অ্যানালিস্ট রাসেল বলছি। স্যার ভালো আছেন? আমরা আমাদের ব্যাংকের সিকিউরিটি বৃদ্ধি করছি। আপনার নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য আপনার কিছু ডিটেলস প্রয়োজন। স্যার কষ্ট করে আপনার ক্রেডিট কার্ডটি হাতে নিবেন। ১৬ ডিজিটের নাম্বার টা বলবেন প্লিজ। এরপর ডেট অফ এক্সপায়ারি এবং সিভিভি নাম্বার। সবশেষে কৌশলে ওটিপি নিয়ে নয়টি ট্রানজেকশনে চার লাখ টাকা নিয়ে নেয় এক প্রকারক চক্র।

বর্তমান ডিজিটাল প্রযুক্তির যুগে ভিসা ও মাস্টার কার্ড ব্যবহার করে পৃথিবীর যেকোনো দেশে ইলেকট্রনিক পেমেন্ট, কেনাকাটা, এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন ও মোবাইল রিচার্জসহ বিভিন্ন কাজ করা যায়। এই কার্ড ব্যবহার করে বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা লোডও করা যায়। আর এই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে কার্ড ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছিল একটি প্রতারক চক্র।

এই ধরনের কয়েকটি ঘটনায় নগরীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা হয়। সিআইডি সাইবার ইন্টেলিজেন্স টিম মামলাগুলোর ছায়া তদন্ত শুরু করে। সাইবার টীম এ চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করে। পরবর্তিতে রাজধানী ঢাকা, দিনাজপুর পঞ্চগড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. রবিউল মিয়া এবং নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে জানা যায়

এ চক্র কার্ডধারীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে কমিউনিটি ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের কার্ড ডিভিশনের কর্মকর্তা সেজে ভিসা এবং মাস্টার কার্ড ব্যবহারকারীদের নম্বরে ফোন দিয়ে তথ্য হালনাগাদ, কার্ডের পাসওয়ার্ড চার ডিজিটের পরিবর্তে ছয় ডিজিট ও ইমেইল আপডেট না করার কারণে কার্ডের কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে মর্মে জানায়। অনেক কার্ডধারীর অ্যাকাউন্টে বড় অংকের ব্যালেন্স থাকায় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে প্রতারকদের কথা অনুযায়ী কাজ করতে থাকে।

বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমরা এগুচ্ছি। আমাদের প্রায় সবকিছুই এখন ইন্টারনেট নির্ভর হচ্ছে। ব্যাংকিং, শপিং, বিনোদন ইত্যাদি। বিজ্ঞান যেমন আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে সহজ করেছে ঠিক তেমনি কঠিনও করেছে। মাস্টার কার্ড বা ভিসা কার্ড প্রতারণায় একাধিক ধাপে কয়েকটি তথ্যের প্রয়োজন হয়। যেমন- কার্ড নাম্বার, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, নিরাপত্তা পিন নাম্বার, ওটিপি কোড ইত্যাদি। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও নিজের পাসওয়ার্ড ও ওটিপি কোড কখনোই কারো সঙ্গে এমনকি সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও কখনোই শেয়ার করা উচিত নয়।

সবচেয়ে বড় কথা হল, নিজেকে নিরাপদ রাখা। আপনিও প্রযুক্তির সাথে সাথে অপটুডেট হোন।নিরাপদে থাকুন।

লেখক: পুলিশ কর্মকর্তা

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :