ইভটিজিংয়ের অভিযোগে ৫ কিশোরকে জরিমানা, প্রধান শিক্ষকের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় স্কুল ছাত্রীদের ইভটিজিং করার অভিযোগে ৫ কিশোরকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করাসহ তাদেরকে ৫০ বার কান ধরে উঠবস করিয়েছেন উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের আব্দুর রশিদ মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলাম। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
রবিবার বিকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ম্যানেজিং কমিটির কয়েকজন সদস্যের উপস্থিতিতে দেড় শতাধিক মানুষের সম্মুখে সালিশের নামে এ বিচার কার্য সম্পন্ন করেন। পরে অভিযুক্তরা তাৎক্ষণিক ৪ হাজার টাকা পরিশোধ করে এবং ঈদের পর বাকি টাকা পরিশোধের শর্তে অভিযোগ থেকে রেহাই পায় তারা।
উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের একটি গ্রাম থেকে কয়েকজন ছাত্রী সুখাইড় গ্রামের সামনে দিয়ে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করে। গত রবিবার ওই ছাত্রীদের অভিভাবকেরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে লিখিতভাবে জানায় যে, সুখাইড় গ্রামের কয়েক কিশোর ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে। অভিযুক্তরা ছাত্রীদের পিছু নিলে স্থানীয়রা তাদের ধরে ছাত্রীদের গ্রামে আটক করে রেখেছে বলেও জানানো হয়। পরে অভিভাবকদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে দেড়শতাধিক মানুষের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠক করেন প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলাম, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য এরশাদ মিয়া, দীপক রায় ও নূরু মিয়াসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। এতে অভিযুক্তদের ৫০ বার কান ধরে উঠবস করিয়ে প্রত্যেককে ১২ হাজার টাকা করে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু বিচারপ্রার্থীরা জরিমানার টাকা নিতে রাজি না হওয়ায় জরিমানার টাকা কী করা হবে এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
অভিযুক্ত হামজার বড় ভাই মোবারক হোসেন বলেন, আমরা খুব অসহায়। এতো টাকা দেওয়ার সামর্থ্য আমাদের ছিল না। কান ধরিয়ে উঠবস করানোর কারনে বিচারপ্রার্থীরা সন্তুষ্টও ছিলেন। তারপরেও জরিমানা করা হয়েছে। পরে সুদে ৪ হাজার টাকা এনে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য এরশাদ মিয়ার হাতে দিয়েছি।
এদিকে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য এরশাদ মিয়া বলেন, অভিযুক্তরা ছাত্রীদের দেখে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করে পিছু নিয়েছিল। এতে ছাত্রীরা মারাত্মক ভয় পেয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে তারা (অভিযুক্তরা) এমন কাজ না করে সেজন্য জরিমানা করা হয়েছে।
এভাবে বিচারকার্য পরিচালনা করতে পারেন কি না এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলাম বলেন, আমি কোনো রায় প্রদান করিনি। গ্রামের মাতব্বরদের বোর্ডের (সালিশে উপস্থিত ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ জরিমানা করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন বলেন, প্রধান শিক্ষক এটি করতে পারেন না। আমি বিষয়টি জানার পর মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত জানার জন্য বলেছি।
(ঢাকাটাইমস/১৯মার্চ/প্রতিনিধি/পিএস)

মন্তব্য করুন