মানবসেবায় কাজ করে প্রশংসা কুড়াচ্ছে ঝিনাইদহের ‘সিও’ সংস্থা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৪, ২০:৪৫ | প্রকাশিত : ১৯ মার্চ ২০২৪, ২০:৩৩

সারা দেশে মানবসেবায় কাজ করছে ঝিনাইদহের বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী মানব কল্যাণ প্রতিষ্ঠান— সিও। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ ও ভাগ্য বদলে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে এই সংস্থা। বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী মানব কল্যাণ প্রতিষ্ঠান সিও ১৯৮৬ সালে জেলা শহরের চাকলাপাড়ায় কার্যক্রম শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি মানব সেবা, বেকারত্ব দূরীকরণের লক্ষ্যে উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে স্বাবলম্বী করা, স্বাস্থ্য সেবা, কৃষি, সমাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে সরকারকে সহযোগিতার পাশাপাশি স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রেখে চলেছে। ঝিনাইদহ জেলায় প্রথম শুরু করলেও হাটিহাটি পা পা করে বর্তমানে দেশের ৪৩টি জেলায় তাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

সিও’র প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক সামছুল আলম জানান, কৃষি, ক্ষুদ্র উদ্যোগী ও মহিলা উদ্যোক্তাদের পুঁজিগঠনে সহযোগিতা করা। গৃহায়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীনদের গৃহের ব্যবস্থা ও আর্থিক সহযোগিতা দ্বারা আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়। সামাজিক বনায়ন ও নার্সারী প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা হয়। বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন সরবরাহ করে এই প্রকল্প দ্বারা স্বাস্থ্য সচেতন করা হয়। শিক্ষা প্রকল্প যেমন, শিশু শিক্ষা, কিশোর-কিশোরী শিক্ষার মাধ্যমে স্বাক্ষর জ্ঞান দান করা হয়। প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রকল্পের কারনে বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা চলমান আছে। পোল্ট্রি, ডেইরি ফার্ম, মৎস্য চাষ প্রকল্পর সহযোগিতায় পুষ্টির অভাব পূরণে অভাবনীয় সাফল্য রেখে চলেছে।

মা ও শিশু স্বাস্থ্য প্রকল্পে যে সমস্ত মা এবং শিশু মাতৃত্বকালীন পুষ্টির অভাবে থাকে সেসকল মা ও শিশুকে পুষ্টিকর খাবার বিতরণ এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান করা হয়।

এইচআইভি. এইডস প্রকল্পের মাধ্যমে উঠান বৈঠক ও সভা সেমিনার দ্বারা সচেতনমূলক আলোচনা করা হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের দ্বারা খাদ্য, বস্ত্র ও অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করা হয়। প্রতিবন্ধী উন্নয়ন প্রকল্পের দ্বারা তাদেরকে হুইল চেয়ার, সাদা ছড়ি, হেয়ার এইড, স্টিক ইত্যাদি সামগ্রী বিতরণ ও আর্থিক সহায়তা করা হয়।

কুঠির শিল্প প্রকল্পে পুরুষ ও মহিলা উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষনের মাধ্যমে পুঁজিগঠন দ্বারা স্বাবলম্বী করা হয়। স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে প্রতিষ্ঠানটি। জিংক ধান উৎপাদন এই প্রকল্প দ্বারা সকলকে জিংকের অভাব পূরণ ও তার উপকারিতা সম্পর্কে সচেতন করন। ভি,জি,ডি প্রকল্পের মাধ্যমে বিনা মূল্যে খাদ্য দ্রব্য বিতরণ, বয়স্ক ও বিধবা ভাতা প্রদান করা হয়।

শিক্ষা ভাতা প্রকল্পে যেসকল শিক্ষার্থী অর্থের অভাবে লেখা পড়া করা সম্ভব হয়ে উঠে না তাহাদের শিক্ষা বৃত্তির মাধ্যমে লেখাপড়া করার সুযোগ করে দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ প্রকল্পে প্রশিক্ষকের মাধ্যমে দক্ষতা ও স্বক্ষমতা অর্জনে সহয়তা করা মানব সম্পদ গঠনে সহায়তা করাসহ বেকারত্ব দূরীকরণ করা হয়। সচেতনতা কার্যক্রম, বাল্য বিবাহ, বহুবিবাহ, যৌতুক, আত্মহত্যা মাদকের কুফল ও জন্ম নিয়ন্ত্রন, নারী নির্যাতন, কিশোর কিশোরীদের বয়সন্ধি কালীন প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান ও পুষ্টিকর খাবার বিতরণ, শীতবস্ত্র বিতরণ, নারীর ক্ষমতায়ন প্রকল্পে কাজ করছে। বারমাসী আমসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফল চাষ করা হচ্ছে এবং তাদের জীবনমান উন্নত করা হচ্ছে। মাশরুমসহ নানানরকম সবজি উৎপাদন করে দেশে সবজির চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।

এছাড়া ও ‘সিও’ প্রতিষ্ঠানটি দক্ষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানব সম্পদ গঠন ও আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কৃষি কার্যক্রম প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। ফলে “সিও” প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালককে ১০০টির অধিক প্রতিষ্ঠান সম্মাননা প্রদান করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় “সিও”দেশ ও মাটি মানুষের কল্যাণে সারা বাংলাদেশে সেবা প্রদান করে এভাবেই এগিয়ে চলেছে।

এমন কার্যক্রমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের। সিও সংস্থার কার্যক্রমের উপকারভোগীর সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ৩৭ লাখের মত দাড়িয়েছে।

উপকারভোগী মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরের রুপালী খাতুন জানান, সিও সংস্থা থেকে ২০ হাজার টাকা ঋন নিয়ে দোকান করে স্বাবলম্বী হয়েছেন । একই উপজেলার রহিমা বেগম ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে করেছেন ছাগলের খামার। ঋন পরিশোধ করে এখন তারা দুজনেই স্বামী সন্তান নিয়ে খুব ভালো ভাবে দিনাতিপাত করছেন।

শুধু তারা দুজনেই নয় দেশের ৪৩টি জেলায় এমন হাজার হাজার পরিবার ক্ষুদ্র ঋন নিয়ে আর্থিকভাবে হয়েছেন স্বাবলম্বী। পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে।

সিও সংস্থা দেশের দরিদ্র জনগোষ্টির কল্যানে বিভিন্ন প্রকল্প সফল ভাবে নিয়মবিধি মেনেই বাস্তবায়ন করে মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য কাজ করছে।

(ঢাকা টাইমস/১৯মার্চ/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :