মোবাইলে গেম খেলাকে কেন্দ্র করে স্ত্রী ও মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা
দিনাজপুরে মোবাইল ফোনে গেম খেলাকে কেন্দ্র করে স্ত্রী ও মেয়েকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে শহিদুল ইসলাম (৪০) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিহতরা হলেন শহিদুল ইসলামের স্ত্রী মর্জিনা বেগম (৩০) ও মেয়ে আরফিন জান্নাত (৬)।
রবিবার দুপর সাড়ে ১২টায় প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমেদ।
এর আগে শনিবার (২০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে নবাবগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের হেয়াতপুর (চিনির চড়া) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ব্রিফিং জানানো হয়, শহিদুল ইসলামের ছেলে আল আমিন (১৩) ও মেয়ে আফরিন জান্নাত মোবাইল ফোনে গেম খেলছিল। এ সময় রান্না করছিলেন তাদের মা মর্জিনা বেগম। মোবাইল নিয়ে ছেলেমেয়ের চিল্লাচিল্লি শুনতে পেয়ে দুজনকেই থামতে বলেন মর্জিনা। এরপরও না থামলে দুজনকে থাপ্পড় মারেন তিনি। এতে উত্তেজিত হয়ে যান শহিদুল ইসলাম। বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তর্কবিতর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে মর্জিনা বেগমকে খাটের চৌকাঠ দিয়ে মাথায় আঘাত করে শহিদুল। এতে মর্জিনা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যায়। এ সময় দুই ছেলেমেয়ে এগিয়ে আসলে তাদেরও পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে এই হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে শহিদুল ফন্দি আঁটে। নিজে চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকে ‘কেউ আমার স্ত্রী এবং সন্তানদের পিটিয়ে ফেলে রেখেছে। সবাই আসুন, দেখুন।’
শহিদুলের চিৎকার শুনে এলাকাবাসী ছুটে আসে। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় মর্জিনাকে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তিনি মর্জিনাকে মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু আহত আল আমিন ও আফরিন জান্নাতকে উদ্ধার করে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে জান্নাতের অবস্থার অবনতি হলে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। রবিবার বেলা ১১টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আফরিন জান্নাত।
ময়নাতদন্তের জন্য মা-মেয়ের মরদেহ দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
এ ঘটনায় মর্জিনা বেগমের মা গোলাপী খাতুন বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে শাশুড়ির দেওয়া মামলায় পুলিশ শহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে। রবিবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে শহিদুল ইসলামকে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
(ঢাকাটাইমস/২১এপ্রিল/প্রতিনিধি/পিএস)
মন্তব্য করুন