পল্টনে অগ্নিঝুঁকিতে ১৫টি ভবন, নেই কোনো ব্যবস্থা

রাজধানীর পল্টনে অগ্নিঝুঁকি নিয়ে চলছে ১৫টি ভবন। এই তালিকা ফায়ার সার্ভিসের কাছে থাকলেও ঝুঁকির বিষয়ে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা এখনও নেননি ভবন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিদিন এসব ভবনে কয়েকহাজার মানুষ যাতায়াত করছে। তবে তারাও জানেন না ভবনগুলো মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোন সময় ঘটতে পারে অগ্নিকাণ্ড। আর তাতে ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র বলছে, কোনো ভবনে অগ্নিঝুঁকি থাকলে প্রথম পর্যায়ে ভবন কর্তৃপক্ষকে অগ্নিঝুঁকি এড়াতে নোটিশ করা হয়। এরপরও ভবন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নিলে সেই ভবনে অগ্নিঝুঁকির ব্যানার টানিয়ে দেয় ফায়ার সার্ভিস। তবে পল্টনের এই ১৫ ভবনে অগ্নিঝুঁকি থাকলেও ফায়ার সার্ভিস সর্বশেষ বুধবার পর্যন্ত অগ্নিঝুঁকির কোনো ব্যনার টানায়নি।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, পুরানা পল্টনের পুষ্পদাম রিসোর্ট এন্ড রেস্টুরেন্ট, ৫৪ পুরানা পল্টনের ভোজন রেস্টুরেন্ট, ৬৮ পুরানা পল্টন র্যাংকস টাওয়ার (রুপটপ), ১৪ পুরানা পল্টন নিউ ধান সিঁড়ি রেস্তোরাঁ (দারুস সালাম আর্কেড), ৫৬/এ পুরানা পল্টন আদি নান্না বিরিয়ানি, ৫৫/এ পুরানা পল্টন নান্না বিরিয়ানি ও হাজী কাচ্চি বিরিয়ানী এন্ড ক্যাটারিং সার্ভিস, ২২/১১ হাউজ বিল্ডিং পুরানা পল্টন তেহারী ঘর, ২২ পুরানা পল্টন হাউজ বিল্ডিং ক্যাফে তাজমহল, ৬ পুরানা পল্টন নোয়াখালী হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট, ৬৯/১ নয়া পল্টন মোঘল কাবাব অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট, ৩২ পুরানা পল্টন রাধুনি রেস্টুরেন্ট, ২৮ পুরানা পল্টন আল ফাহাম রেস্টুরেন্ট, হোটেল কস্তুরী প্রাইভেট লিমিটেড জি এ ভবন, ৫৯/১ পুরানা পল্টন খানা বাসমতীর ভবন অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে।
এর মধ্যে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে রয়েছে পুরানা পল্টনের পুষ্পদাম রিসোর্ট অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট। তবে এই ভবনটি অতি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসসহ সিটি করপোরেশন এবং রাজউক থেকেও কোনো ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (ওয়ারহাউজ অ্যান্ড ফায়ার প্রিভেনশন) মো. আনোয়ার হোসেন ঢাকা টাইমসকে জানান, ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা জোন-১ এর আওতাধীন মতিঝিল, মালিবাগ, মৌচাক, শান্তিনগর, বেইলি রোড ও পল্টন এলাকায় ৬৩টি ভবনে অগ্নিঝুঁকি রয়েছে। এর মধ্যে পল্টন এলাকায় অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ একটি ভবন রয়েছে। এছাড়াও এই জোন-১ এ আরও নয়টি ভবন অতিরিক্ত ঝুকিপূর্ণ।
জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশনস) লে. কর্ণেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী ঢাকা টাইমসকে বলেন, এলাকাগুলোতে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সরেজমিনে গিয়ে অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করেন। এরপর ভবন কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া এবং ফায়ার সেফটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মালিকদের উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি বলেন, প্রচলিত বিধিবিধান অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা এবং চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ব্যানার টানানো হয়।
অতিরিক্ত ঝুকিপূর্ণ আরও নয়টি ভবনেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অগ্নিঝুঁকির কোনো ব্যানার টানায়নি ফায়ার সার্ভিস। ভবনগুলো হলো- রমনার সিদ্ধেশ্বরী এলাকার ৬২/এ ব্লু ডাউন ক্যাফে, শান্তিনগর এলাকার ১১৮, ১১৮/২, ১১৮/৩ মেসার্স স্কাইভিউ লাউঞ্জ লিমিটেড, মালিবাগ নিউ সার্কুলার রোডের ২৪৫/১ হোল্ডিংয়ের নিউ মৌবন হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, নিউ বেইলী রোডের কেএফসি পিজা হাট, শান্তিনগর সিদ্ধেশ্বরী এলাকার ৪০/৪১ বাঙ্গালীয়ানা ভোজ, সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডের ৮০/এ/১ এর মোহাম্মদীয় রেস্টুরেন্ট, শহিদ সাংবাদিক সেলিনা পারভিন সড়ক এলাকার ৩৯ ইউরো গার্ডেন চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, লিলি প্লাজা মার্কেটের কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্ট এবং ১১৪ কাজী নজরুল ইসলাম সড়ক এলাকার দি গ্রীন লাউঞ্জ এর ভবন।
ভবনগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অগ্নিঝুঁকি থাকার পরও সেখানে কোনো ধরনের মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়নি এবং ব্যানার টানানো হয়নি। ভবনগুলোতে যাতায়াতকারী কিংবা আশপাশের বাসিন্দারাও জানেন না যে, তারা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় আছেন।
(ঢাকাটাইমস/১২জুন/এইচএম/কেএম)

মন্তব্য করুন