বালুখেকো সেলিমের পুত্র নায়ক শান্তর সাড়ে তিন কোটির অবৈধ সম্পদ, দুদকের মামলা

চাঁদপুরের সেই আলোচিত বালুখেকো চেয়ারম্যান সেলিম খানের বড় ছেলে নায়ক শান্ত খান পনেরো কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিক। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. আতাউর রহমান সরকার বাদী হয়ে শান্ত খানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলাটি করেছেন।
নির্ধারিত সময়ে সম্পদ বিবরণী দাখিল না করা ও প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এ মামলা করা হয় বলে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় দুদক শান্ত খান ও তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের সম্পদ বিবরণী ২১ দিনের মধ্যে দাখিলের জন্য নোটিশ দিয়েছিল।
শান্ত খান দুদকের নোটিশ গ্রহণ করলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেননি বা সময় বাড়ানোর আবেদনও করেননি।
এজাহারে আরও বলা হয়, দুদকের অনুসন্ধানে ও বিভিন্ন নথিপত্র পর্যালোচনায় শান্ত খানের নামে ১৩ কোটি ৫১ লাখ ৩৪ হাজার ২৭২ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ২ কোটি ৩৭ লাখ ৮৫ হাজার ২২৮ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ১৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়।
এছাড়া ২০১৮-১৯ করবর্ষ থেকে ২০২২-২৩ করবর্ষ পর্যন্ত তার পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় পাওয়া যায় ১৯ লাখ ৩২ হাজার ৫০০ টাকা।
শান্ত খানের পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়সহ অর্জিত মোট সম্পদের পরিমাণ ১৬ কোটি ৮ লাখ ৫২ হাজার টাকা।
অনুসন্ধানে এই অর্জিত সম্পদের বিপরীতে তার ১২ কোটি ৮৩ লাখ ৯৫ হাজার ৫০০ টাকা আয়ের উৎসের তথ্য পাওয়া যায়।
তার বৈধ আয়ের তুলনায় অতিরিক্ত সম্পদের পরিমাণ তিন কোটি ২৪ লাখ ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা, যা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
ঢাকাই সিনেমার নায়ক শান্ত খানের চলচ্চিত্রে অভিষেক ২০১৯ সালে। ২০২১ সালে তার অভিনীত ‘প্রেম চোর’, ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়াঁ ভাই’ নামে দুটি সিনেমা মুক্তি পায়। এছাড়া তিনি বুবুজান ও গ্যাংস্টার নামে আরও দুই সিনেমায় অভিনয় করেছেন।
শান্ত খানের পিতা সেলিম খান চাঁদপুর সদরের লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু বাণিজ্যের কারণে সারাদেশে তিনি বালুখেকো নামে পরিচিত। ৩৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ৬৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০২২ সালে তার বিরুদ্ধেও মামলা করেছিল দুদক। সে মামলায় ২০২২ সালের ১২ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণের পর জামিনের আবেদন করলে নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ মামলায় গত বছরের ৮ জানুয়ারি জামিনে মুক্তি পান সেলিম খান।
(ঢাকাটাইমস/৩জুলাই/এলএম/এইচএম)

মন্তব্য করুন