শুক্রবার ছাড়া রাস্তায় কর্মসূচি-অবরোধ বন্ধে আইনি নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৪ জুলাই ২০২৪, ১৩:৫৭| আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৪, ১৪:৫৬
অ- অ+

সপ্তাহের যেকোনো দিন সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন বন্ধে সরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে আইনি নোটিশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, ডিএমপি কমিশনার বরাবর দেওয়া হয়েছে এ নোটিশ।

রবিবার ডাকযোগে এই নোটিশ পাঠানো হয়। আগামী সাত দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া না হলে হাইকোর্টে রিট আবেদনসহ প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আইনি নোটিশে বলা হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলো জনগণকে ভয়ভীতি দেখানো, বল প্রয়োগ করা, রাস্তা অবরোধ, যানবাহনের গতি কমানো, গতিপথ ঘুরিয়ে দেওয়া, যানবাহন চলাকালে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে কোনো প্রকার জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) আইন, ২০২৪ এর ৪ ধারা ও প্রচলিত অন্যান্য আইন অনুসারে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনগণের জানমাল ও নিরাপত্তাসহকারে স্বাধীনভাবে রাস্তায় চলাচলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশে শুধুমাত্র শুক্রবার ছাড়া কোনো সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলোকে রাস্তায় সভা, সমাবেশ, মিটিং, মিছিল, পরিবেশ দূষণ করে উচ্চৈঃস্বরে মাইক ও সাউন্ডবক্স ব্যবহার করে শোভাযাত্রার অনুমতি প্রদান করে ঢাকার রাস্তায় তীব্র যানজট সৃষ্টি করে জনদুর্ভোগ তৈরি করা থেকেও সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকার কথাও বলে হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদনসহ প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে।

রেজিস্ট্রি ডাকযোগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. জাহাংগীর আলম, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমানের ঠিকানায় এ নোটিশ দিয়েছেন অ্যাডভোকেট হাসান অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের স্বত্বাধিকারী বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার।

লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদে সুস্পষ্টভাবে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের অধিকার প্রদান করা হয়েছে। ৩৭ অনুচ্ছেদ অনুসারে, ʻজনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসংগত বাধা নিষেধ সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হওয়ার এবং জনসভা ও শোভাযাত্রায় যোগদান করার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকবে।’

এতে আরও বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিক তার স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য সভা-সমাবেশ-মিটিং-মিছিল করতে পারেন। কিন্তু মিটিং-মিছিলের কারণে যেন কোনো দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টি না হয় কিংবা অন্য কোনো নাগরিকের স্বাভাবিক জীবন যাপনের ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয়, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয় সেজন্যও যথাযথ অনুমতির প্রয়োজন। এছাড়া সভা-সমাবেশের নিরাপত্তার জন্যও পুলিশের সাহায্য নেওয়া উচিত। ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ১২৭, ১২৮ ও ১২৯ ধারা এবং পুলিশ আইন ১৮৬১ এর ৩০, ৩১ ও ৩২ ধারাতে এই ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে।

এছাড়া দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে দ্রুত ও কার্যকর ভূমিকা পালনের উদ্দেশ্যে, কাউকে ভয়ভীতি দেখানো, বলপ্রয়োগ করা, রাস্তা অবরোধ, জোর করে মালামাল ও সুযোগ-সুবিধা আদায় করা, আকাশ, নৌ ও বিমান যান চলাচলে বাধা দেওয়া, যানবাহনের গতি কমানো, গতিপথ ঘুরিয়ে দেওয়া, চাঁদাবাজি, যানবাহন চলাকালে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, যানবাহনের ক্ষতিসাধন, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বিনষ্ট করা, ছিনতাই, দস্যুতা, ত্রাস ও অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি, দরপত্র ক্রয়-বিক্রয় গ্রহণের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, ভয়-ভীতি প্রদর্শন ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের গুরুতর অপরাধের দ্রুত বিচার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অধিকতর উন্নতির লক্ষ্যে প্রনীত ʻআইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) আইন, ২০২৪-এর ৪ ধারা অনুসারে, এ আইনের আওতায় কেউ আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ করলে সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদণ্ড হবে’ বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

নোটিশে বলা হয়েছে, বর্তমানে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন ২০২৪ পরীক্ষা এবং এইচএসসি ২০২৪ পরীক্ষা চলমান থাকাকালে সম্প্রতি বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে জনগণকে ভয়ভীতি দেখানো, বল প্রয়োগ করা, রাস্তা অবরোধ, যানবাহনের গতি কমানো, গতিপথ ঘুরিয়ে দেওয়া, যানবাহন চলাকালে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ঘটনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। সর্বোপরি এসবের কারণে তীব্র যানজট ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। ইতিপূর্বেও বিভিন্ন সময়ে কর্মব্যস্ত দিনগুলোতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও ঢাকা শহরের বিভিন্ন রাস্তা বন্ধ করে সভা- সমাবেশ-মিটিং-মিছিল, পরিবেশ দূষণ করে উচ্চৈঃস্বরে মাইক ও সাউন্ডবক্স ব্যবহার করে শোভাযাত্রা রাস্তায় তীব্র যাটজট সৃষ্টি করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে।

আইনি নোটিশে আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার আরও বলেছেন, “ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ১২৭, ১২৮ ও ১২৯ ধারা এবং পুলিশ আইন ১৮৬১ এর ৩০, ৩১ ও ৩২ ধারা লঙ্ঘন করে বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন সময়ে জনগণকে ভয়ভীতি দেখানো, বল প্রয়োগ করা, রাস্তা অবরোধ, যানবাহনের গতি কমানো, গতিপথ ঘুরিয়ে দেওয়া, যানবাহন চলাকালে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলেও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) আইন, ২০২৪ এর ৪ ধারা কিংবা প্রচলিত অন্যান্য আইন অনুসারে কোনো প্রকার আইনানুগ ব্যবস্থা বাংলাদেশ পুলিশ কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়নি, যার দায়ভার কোনোভাবেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইজিপি, ডিএমপি কমিশনার এড়িয়ে যেতে পারেন না। দায়িত্বশীল পদে থেকে জনদুর্ভোগ লাঘবে যথাযথ আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তারা নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে অবহেলা করেছেন।

(ঢাকাটাইমস/১৪জুলাই/এসএস/এফএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সিলেটে গাঁজাসহ কারবারি গ্রেপ্তার
চার ম্যাচ পর মেসির গোল, মায়ামির জয়
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে আগুন, এক ঘণ্টায় নিয়ন্ত্রণে
মানিকগঞ্জে পায়ে হাঁটার পথে দেয়াল নির্মাণের অভিযোগ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা