‘অসৎ স্বামী শেষ পর্যন্ত স্ত্রীর সঙ্গে লয়্যাল থাকে না’

পুলিশের প্রভাবশালী সংস্থার এসপিকে ফুটপাতে দেখে খটকা লাগলো। বেশ মনোযোগ দিয়ে ভ্যানে থাকা বাচ্চাদের কাপড় চয়েস করছেন। কয়েক গজ দূরে দাঁড়িয়ে পর্যবেক্ষণ করছি। শিশু সন্তানের জন্য ৫টি জামা-প্যান্ট কিনলেন। দরদাম করে ৭০০টাকা দিলেন। কাপড়ের প্যাকেট ধরে পিছনে ঘুরতেই আমার সঙ্গে চোখাচোখি। সব সময়ের মতো হাস্যজ্জল মুখ, তবে কিছুটা বিব্রত।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আমি এসপি সাহেবকে বললাম- কী কিনলেন ভাই। আমিও কয়েকদিন আগে ভাগনিদের জন্য ফুটপাত থেকে প্যান্ট কিনলাম।
: হ্যাঁ ভাই, এগুলো সুতি কাপড়ের। পরে বাচ্চা আরাম পায়।
: ছোটো বাচ্চাদের একটু পরপর প্যান্ট পাল্টাতে হয়। এগুলোই পারফেক্ট।
: আমি নিজের জন্যও মাঝেমধ্যে এসব জায়গা থেকে কিনি। দেখেশুনে কিনতে পারলে খারাপ না। আর মানুষের কী আমার পোশাকের দিকে তাকিয়ে থাকার সময় আছে। মানুষ দেখবে আমার কাজ।
: ভাবি কিছুই বলেন না এসব কেনাকাটায়?
: প্রথমে একটু মন খারাপ করতো। কিন্তু এখন অভ্যস্ত হয়ে গেছে।
: এই অভ্যস্ততা কীভাবে তৈরি করলেন?
: তাকে আমি হাতে কলমে উদাহরণ দিয়ে অনেক প্রমাণ দেখিয়েছি যে, অসৎ স্বামী কখনোই তার স্ত্রীর সঙ্গে শেষ পর্যন্ত লয়্যাল থাকে না।
: বন্ধু স্বজনদের আবদার তো থাকে?
: নিয়মের মধ্যে থেকে আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করি। যেটা পারি না সেটা বুঝিয়ে বলি।
: সংসার তো ভাই আপনার টানাটানিতে চলে মনে হয়।
: চাল-ডালসহ কিছু ফ্রেশ নিত্যপণ্য গ্রাম থেকে পাঠায়। ভালো খাবার খাই, পরিচ্ছন্ন পোশাক পড়ি। আল্লাহর রহমতে পরিবারে কোনো অসুখ বিসুখ নাই। আল্লাহ সুস্থ রাখছেন, সম্মান দিয়েছেন। আর কী চাইবো বলেন?
দু'জনের একটু ব্যস্ততা ছিল। পারিবারিক গল্পের ইতি টেনে গন্তব্যের দিকে পা বাড়ালাম। মুগ্ধতায় মন ভরে থাকলো দীর্ঘক্ষণ। তার একটা কথা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে- 'অসৎ স্বামী শেষ পর্যন্ত স্ত্রীর সঙ্গে লয়্যাল থাকে না।'সাজ্জাদ মাহমুদ খান : সংবাদকর্মী

মন্তব্য করুন