ফরিদপুরে জনতার উল্লাসে পুলিশের গুলি, নিহত ১

ফরিদপুর প্রতিনিধি ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০৫ আগস্ট ২০২৪, ২১:১৮

শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ফরিদপুরে ছাত্র-জনতার বিজয় উল্লাসকালে পুলিশের এলোপাথাড়ি গুলিতে শামসুল মোল্যা (৫০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তিনি শহরের পূর্ব খাবাসপুর এলাকার বাসিন্দা। ছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন শিশুসহ হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। ঘটনার পর থানায় হামলা চালিয়ে লুটপাট অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।

সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

শামসুল মোল্যাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আহতদের মধ্যে তিনজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মৌমিতা আক্তার বলেন, তিনজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আনা হয়েছে। এর মধ্যে শামসুল মোল্যাকে যখন আনা হয় তখন কোনো প্রেসার ছিল না এবং হার্টবিটও বন্ধ ছিল। পরে মেডিকেলে পাঠিয়ে দেই।

স্থানীয়রা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবরের পরপরই শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আনন্দ মিছিল নিয়ে বের হয় ছাত্রজনতা সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে শহরের জনতা ব্যাংকের মোড়ে অবস্থান করে বিজয় উল্লাসে মেতে উঠেন তারা। সেই সাথে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পুনরায় আগুন ভাঙচুর সহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বাসভবনে ভাঙচুর লুটপাটের ঘটনা ঘটে।

তাদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আরিফ, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি গোলাম মো. নাছির, পৌর মেয়র অমিতাভ বোস জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ মো. রাহাত খানের বাসভবনে হামলা চালিয়ে লুটপাট করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কোতয়ালি থানার অদূরেই বিজয় উল্লাসকালে কিছু উত্তেজিত জনতা থানায় হামলা চালানোর চেষ্টা করে। সে সময় থানার ভেতরে যুবলীগ ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী ছিল। এক পর্যায়ে থানায় অবস্থানরত পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ারসেল সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে থানায় অবস্থানরত সকল পুলিশ সদস্য জোটবদ্ধ হয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে ছুড়তে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের দিকে চলে যায়।

ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের জানালা দিয়ে গুলি ছুড়েছেন বলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক মৌমিতা আক্তার জানান। সময় সকলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এছাড়া পুরো শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

আবরার নাদিম ইতু নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা উল্লাস করছিলাম। তখন কিছু বুঝে উঠার আগেই বিকট শব্দ হয়। পরে দেখি পুলিশ রাবার বুলেট টিয়ারশেল নিক্ষেপ করছে। তখন একজন শিশুকে রক্তাক্ত অবস্থায় রিকশায় করে নিয়ে যেতে দেখা যায়। এছাড়া অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়েছে।

এদিকে নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা কোতয়ালি থানায় হামলা চালায়। সময় সেখানে থাকা মোটরসাইকেলে এবং হাসপাতালের ভেতরে আসবাবপত্রে আগুন দেওয়া হয়। সময় থানায় থাকা অস্ত্র লুট করে নিয়ে যেতে দেখা যায় বিক্ষুব্ধদের। পরে সাধারণ জনতা পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

এছাড়া সদরপুর থানা, উপজেলা পরিষদ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসভবনেও হামলার ঘটনা ঘটেছে।

(ঢাকাটাইমস/০৫আগস্ট/পিএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :