বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফ্রিজ করতে পাঁচ দুর্নীতিবিরোধী সংস্থার চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩৪| আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫:২৬
অ- অ+

যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ ও সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে সেসব দেশে বাংলাদেশিদের অবৈধ সম্পদ ফ্রিজ করার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক চারটি দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা।

মঙ্গলবার টিআই-ইউকে, ইউকে অ্যান্টিকরাপশন কোয়ালিশন, ইন্টারন্যাশনাল লইয়ারস প্রজেক্ট, স্পটলাইট অন করাপশন ও টিআইবির প্রধানেরা যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠিতে এ আহ্বান জানানো হয়।

‘নতুন বাংলাদেশ’-এর দুর্নীতিমুক্ত ভবিষ্যৎ নির্মাণে যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য দেশের সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অবৈধ অর্থের মালিকদের জবাবদিহি নিশ্চিত করে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আহ্বান জানান তারা।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “পাচার করা সম্পদ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ ও পাচারকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার জন্য যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর পাশাপাশি সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, হংকং ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।”

স্পটলাইট অন করাপশনের নির্বাহী পরিচালক সুজান হোলে বলেন, “পাচার করা সম্পদ খুঁজে বের করতে এবং দুর্নীতিবাজদের জবাবদিহির আওতায় আনতে যুক্তরাজ্যকে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে সহায়তা করতে হবে। বাংলাদেশের এই দুর্নীতিবিরোধী প্রচেষ্টা জোরদার করার মাধ্যমে যুক্তরাজ্য দেশটির প্রতিশ্রুত গণতান্ত্রিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।”

টিআই-ইউকের নীতিবিষয়ক পরিচালক ডানকান হেমজ বলেন, “ব্রিটিশ সরকারের বাংলাদেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করা উচিত, নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের বিদেশে পাচার করা সম্পদ ফ্রিজ করা উচিত।”

৩০ আগস্ট যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে বলা হয়, এ ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের অধীনে থাকা সুবিধাভোগীদের দুর্নীতি উদঘাটিত হচ্ছে। তাদের পাচার করা সম্পত্তি বাংলাদেশের নাগরিকদের সম্পদ। পুনর্গঠনের পাশাপাশি দেশকে আরও গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তুলতে সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার হওয়া জাতীয় সম্পদ অতিদ্রুত চিহ্নিত করে পুনরুদ্ধার করা জরুরি।”

চিঠিতে তিনটি বিষয় জরুরিভাবে কার্যকর করার আহ্বান জানানো হয়। প্রথমত, কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তি বা কোম্পানির পাচার করা সম্পদ যুক্তরাজ্যে রয়েছে কি না এবং তা পুনরুদ্ধারযোগ্য কি না, এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সিকে সক্রিয় হয়ে পাচার করা অর্থ বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে সব পদক্ষেপ নেওয়া।

দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন, আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ, অপরাধ তদন্ত বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংস্কারের পাশাপাশি ফরেনসিক হিসাবরক্ষক ও আইনজীবীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি সহায়তার আহ্বান জানানো হয়। যাতে এই সংস্থাগুলো পাচার হওয়া অর্থ-সম্পদ শনাক্ত ও পুনরুদ্ধারে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে পারে।

তৃতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, হংকং ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ (বিশেষ করে দুবাই) যেসব দেশে বাংলাদেশের অর্থসম্পদ পাচার হয়েছে, তাদের সঙ্গে সহযোগিতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের এ সম্পদ দেশে ফেরত এনে পাচারের সঙ্গে জড়িত সবার জবাবদিহি নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।

(ঢাকাটাইমস/০৪সেপ্টেম্বর/টিটি/এফএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
পল্লীবন্ধু এরশাদ চিরকাল মানুষের হৃদয়ে কণক প্রদীপ হয়ে জ্বলবেন
চাঁদা না দেওয়ায় পল্লবীতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলা, গুলিবর্ষণ: গ্রেপ্তার ৩
ছন্দে ফিরলেন লিটন, সমতায় ফিরল টাইগাররা
১২ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১০৭ কোটি মার্কিন ডলার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা