সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর প্রতি দল-মতনির্বিশেষে শেষশ্রদ্ধা

বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীর প্রতি শেষশ্রদ্ধা জানিয়েছেন তার সহকর্মীরাসহ দল-মতনির্বিশেষে নানা পেশার মানুষ। বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তন ও আঙিনায় জানাজা শেষে তার কফিনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও তার জানাজায় অংশ নেন বিপুল সংখ্যক মানুষ।
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর পান্থপথে বিআরবি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি রুহুল আমিন গাজী। দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতা, উচ্চ ডায়াবেটিক, ব্যাক পেইন, লবণ ঘাটতিসসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক ছেলে, দুই মেয়ে ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন এই জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক।
পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রয়াত সাংবাদিকের কফিন চাঁদপুরে গ্রামের বাড়িতে দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
শ্রদ্ধা নিবেদনের আগে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়ন ও প্রাঙ্গণে রুহুল আমিন গাজীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
জানাজার আগে প্রয়াত সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য দেন সরকারের ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহকারী মহাসচিব বাছির জামাল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি শহীদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভুঁইয়া ও রুহুল আমিন গাজীর ছেলে আফনান আবরার।
জানাজায় রাজনীতিবিদদের মধ্যে অংশ নেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য এজেডএম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-দফতর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, নায়েবে আমির মজিবুর রহমান, শামসুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চল পরিচালক মোবারক হোসাইন, নির্বাহী পরিষদ সদস্য আব্দুর রব, এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান প্রমুখ।
সাংবাদিকদের মধ্যে ইকবাল সোবহান চৌধুরী, আবুল কালাম আজাদ, শওকত মাহমুদ, মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, এম এ আজিজ, সাইফুল আলম, আবদুল হাই শিকদার, আবদুল জলিল ভুঁইয়া, আজিজুল ইসলাম ভুঁইয়া, কামাল উদ্দিন সবুজ, আবদুল হাই সিদ্দিকী, এম আবদুল্লাহ, মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, বাকের হোসাইন, নুরুউদ্দিন নুরু, ইলিয়াস খান, কে এম মহসিন, সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, রফিকুল ইসলাম আজাদ, ইলিয়াস হোসেন, কাজী রওনুকুল হোসেন, শাহেদ চৌধুরী, সাহাবুদ্দিন চৌধুরী, মুরসালিন নোমানী, শামসুদ্দিন দিদার, রাশেদুল হক, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভুঁইয়া, বিএফইউজে দুই অংশের নেতাদের মধ্যে ওমর ফারুক, ওবায়দুর রহমান শাহিন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতাদের মধ্যে শহীদুল ইসলাম, খুরশীদ আলম, সোহেল হায়দার চৌধুরী, আখতার হোসেন প্র্রমুখ জানাজায় অংশ নেন।
১৯৫৩ সালের ২২ এপ্রিল চাঁদপুরের গুবিন্দিয়া গ্রামে রুহুল আমিন গাজীর জন্ম। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর ১৯৭৪ সালে রিপোর্টার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায়। পরে ইত্তেফাক ছেড়ে যোগ দেন দৈনিক সংগ্রামে। এই পত্রিকায় বিশেষ প্রতিনিধি, চিফ রিপোর্টারসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন মৃত্যুর আগে পর্যন্ত।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি সাংবাদিকদের রুটি-রুজির আন্দোলনে রুহুল আমিন গাজী ছিলেন সব সময় সোচ্চার। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নে একাধিকবার সভাপতিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
শেখ হাসিনার সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এই সাংবাদিক নেতাকে কারাবন্দি করে রাখে টানা ১৮ মাসের বেশি সময়। কারাগারে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাকে জামিন দেয়নি সরকার। সরকারের এই অন্যায়ের কারণে তিনি বিভিন্ন রোগে কাবু হয়ে পড়েন।
বিএনপি সমর্থিত পেশাজীবী সংগঠন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন রুহুল আমিন গাজী।
(ঢাকাটাইমস/২৫সেপ্টেম্বর/জেবি/কেএম)

মন্তব্য করুন