আইজিপির সাঁড়াশি অভিযানের ঘোষণায় কতটা বিচলিত তৃণমূল আ.লীগ
দুর্গাপূজার পরেই দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ময়নুল ইসলাম। এই অভিযানের টার্গেট কারা? কাদেরকে এবার ধরা হবে? কারা গ্রেপ্তার হবেন? কারা বিভিন্ন মামলায় জড়াবেন? আইজিপির ঘোষণার পরপরই এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে তৈরি হয়েছে শঙ্কা।
বিশেষ করে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরে আইজিপির এই ঘোষণার পর নানা ধরনের টেনশন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে কি এবার আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ে আরও বেশি ধরপাকড় হবে? আরও বেশি মামলায় জড়ানো হবে তৃণমূল পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাদের? কতটা বিচলিত আওয়ামী লীগ এবং এর তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা? যদিও পুলিশপ্রধান বলেছেন সুস্পষ্টভাবেই যাদের বিরুদ্ধে মাদক, চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে যারা নানা সংকট তৈরি করছেন সাঁড়াশি অভিযান তাদের বিরুদ্ধে।
গত শনিবার রাজধানীর কৃষ্ণ মঠ ও মিশনে দুর্গাপূজা মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইজিপি এই কথা বলেন। কিন্তু সুস্পষ্টভাবে কোনো গোষ্ঠী, কোনো পক্ষকে ইঙ্গিত না করলেও আইজিপির এই ঘোষণায় অনেকটাই শঙ্কিত আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে তৃণমূল।
এমনিতেই গত কিছুদিন ধরে মাঠ পর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। অনেকেই মামলায় জড়িয়েছেন। অধিকাংশ নেতারা কেউ আর বাড়িতে থাকছেন না। এরকম পরিস্থিতিতে নতুন করে যে ঘোষণা আইজিপির পক্ষ থেকে এসেছে তা আওয়ামী লীগের জন্য মোটেও সুখকর নয় বলেই মনে করছে বিভিন্ন মহল। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে না থাকায় আওয়ামী লীগকেই নানাভাবে দায়ী করা হচ্ছে।
সরকারের ভেতরের অনেকেই বলছেন, ভারতে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য নানা ধরনের ছক কষছেন। তার মানে এই দাঁড়ায় এবার তালিকা ধরে ধরে আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা, থানা, জেলার নেতৃত্বকে ধরা হতে পারে।
তো সবাই কি টার্গেট? এটা কি সম্ভব? কারাগারে কি এত জায়গা আছে? আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের যেসব নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অতীতে সুস্পষ্ট অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আছে, যারা দখল, চাঁদাবাজি, মাদককারবার এরকম বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দিয়েছেন, পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন খুব স্বাভাবিকভাবেই তাদের জন্যে আগামীর দিনগুলো মোটেও সুখকর হওয়ার কথা নয়। কিন্তু গড়পত্তায় সকল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ভীত হবেন, সন্ত্রস্ত হবেন এটিও হওয়ার কথা নয়। যদিও দিশাহীন আওয়ামী লীগ তার নেতাকর্মীদের এই নির্দেশনা, পরামর্শ দিতে পারছে না যে, তারা কী করবে? তৃণমূলের আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব কোনো পর্যায়ে থেকে দিকনির্দেশনা পাচ্ছে না। আওয়ামী লীগ কর্মীরা কি ঘরে থাকবে? তারা কি শঙ্কাহীনভাবে রাত যাপন করবে নিজ বাড়িতেই? কী করবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ? তাদের কি কেউ এ বিষয়ে সঠিক পরামর্শ দিতে পারছে? আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আসলেই কি টার্গেট না-কি শুধুমাত্র সন্ত্রাসীরাই টার্গেট?
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, সুনির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা কখনোই টার্গেট হতে পারে না। তারাই টার্গেট যারা শুধুমাত্র অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। কী হয় আগামী দিনগুলো দেখার অপেক্ষায় আমরাও।
ঢাকাটাইমস/১৩অক্টোবর