গণতন্ত্র যেভাবে অর্জিত হয়েছে তা ধরে রাখতে হবে: আমান

“গণতন্ত্র যেভাবে অর্জিত হয়েছে তা ধরে রাখতে হবে” বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান।

সোমবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ৯০'র ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের রূপকার সাইফুদ্দিন আহমেদ মনির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

আমান উল্লাহ আমান বলেন, “দীর্ঘ অনেক বছর আমরা আন্দোলন করেছি সংগ্রাম করেছি। যে গণতন্ত্র একবার এনেছেন জিয়াউর রহমান, আরেকবার এনেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আর দীর্ঘ ১৬ বছর দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলন করে সর্বশেষ ছাত্রজনতার গণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা পেয়েছি গণতন্ত্র। গণতন্ত্র যেভাবে অর্জিত হয়েছে তা আমাদের ধরে রাখতে হবে। আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের সকলকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।”

নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করার কথা জানিয়ে আমান বলেন, “বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমরা এই সরকারকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করি এবং করব, একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য। আর এই নির্বাচনটি যত দ্রুত সম্ভব হতে হবে। তাদের (অন্তর্বর্তী সরকারের) কারণে যদি আজকে মুখ থুবড়ে পড়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় বিলম্ব ঘটতে পারে।”

তিনি বলেন, “আমরা আশা করব এ সরকার যে কমিশন করেছে তার রিপোর্ট পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরবর্তীতে করণীয়, একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ যাদেরকে রায় দিবে তাদের কাছে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হবে এবং দেশ শান্তিপূর্ণভাবে চলবে। পাশাপাশি দেশের যেসব সমস্যার জট বেঁধে আছে তা সমাধান করবে। একই সঙ্গে ছাত্র-জনতা এবং দেশের মানুষের যে দাবি তা পূরণ হতে হবে এবং সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।”

‘সাগর-রুনির বিচার এখনো পাইনি’- এমন মন্তব্য করে আমান উল্লাহ আমান বলেন, “অবিলম্বে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে এবং এই বিচার দ্রুত করতে হবে। এতদিন সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডের বিচার বিলম্ব হওয়ার কারণ একমাত্র একটাই, আওয়ামী লীগ সরকার এখানে জড়িত ছিল। তখন প্রতিবেদন জমা হয়নি বিলম্ব হয়েছে। কিন্তু আজকে এই বিচার বিলম্ব হওয়ার কথা নয়।”

সাইফুদ্দিন মনিকে স্মরণ করে আমান উল্লাহ আমান বলেন, “সাইফুদ্দিন মনির স্বপ্ন তখনই পূরণ হবে যখন জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিতের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সকলের ঐক্যবদ্ধ চেষ্টায় আমরা দ্রুত একটি গণতন্ত্র ফিরে পাব, দ্রুত ভোটাধিকার ফিরে পাব এবং দ্রুত একটি জনগণের সরকার পাব। যেখানে এই দেশের সরকার পরিচালিত হবে জনগণের মাধ্যমে।”

সাবেক এমপি ও সাবেক ডাকসুর এজিএস নাজিমুদ্দিন আলম বলেন, “আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট যেভাবে দেশে দুঃশাসন চালিয়েছে সেটা আর বলতে চাই না। তারা দেশটাকে জেল বানিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রাস্তায় মিশিয়ে ফেলছে। শেখ হাসিনা মনে করেন, দেশটা তার বাবার সম্পত্তি। যেটা মনে করতেন তার বাবা শেখ ‍মুজিবুর রহমান। শেখ হাসিনা শুধু এবার পালাননি। এর আগে ৭৫-এ বোরকা পরে তিনি পালিয়েছেন। কিন্তু আমার নেত্রী খালেদা জিয়া পালাননি। ওয়ান ইলেভেনের সময় আমার নেত্রীকে দু-ছেলেকে নিয়ে সৌদি আরবে যাওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু খালেদা জিয়া পালিয়ে যাননি। গত ১৬ বছর বিএনপির নেতাকর্মীরা জেল-জুলুম হত্যার শিকার হয়েছে। সেখানে জামায়াতও অনেক ত্যাগ শিকার করেছে। সেখানে হেফাজত ইসলামীও অবদান রেখেছে।”

আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো আপস হবে না উল্লেখ করে নাজিমুদ্দিন আলম বলেন, “যেকোনো আন্দোলনে ৯০'র গণঅভ্যুত্থানের একটা অনুপ্রেরণা রয়েছে। জুলাই আগস্টে দেড় হজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে। তাদের সঙ্গে কোনো আপস হবে না। প্রয়োজন হলে আমরা রাস্তায় নামব।”

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি মোহাম্মদ সাইদুর রহমান বলেন, “অবিলম্বে বিএনপির সব নেতাকর্মীর নামে করা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সব রাজবন্ধীকে মুক্ত করে দিতে হবে।”

আলোচনা সভার শুরুতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সাইফুদ্দিন মণির জন্য দোয়া করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/১৪অক্টোবর/এমআই/এফএ)