শরীয়তপুরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ শিকার

মা-ইলিশ সংরক্ষণ ও ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দিলেও শরীয়তপুরের পদ্মা-মেঘনায় অবাধে ইলিশ শিকার করছেন জেলেরা। সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রকাশ্যে দিন-দুপুরে ইলিশ শিকার ও বেচাকেনার মহোৎসবে মেতেছেন অসাধু জেলে ও আড়তদাররা।
বৃহস্পতিবার জেলার পদ্মা ও মেঘনা নদীতে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। নিষেধাজ্ঞার এগারো দিনেও প্রকাশ্যে চলছে মা ইলিশ শিকার ও বেচাকেনা।
জেলে ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভোর রাতের দিকে ও দুপুর এবং সন্ধ্যার পর থেকে জেলেরা ইলিশ শিকারে মেতে উঠেন। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নদীতে অভিযান পরিচালনাকারীদের তৎপরতার মধ্যেও অনেক জেলে নদীতে জাল ফেলে ইলিশ শিকার করছেন। আবার দুপুর ১২টার পর আইন-শৃঙ্খলাকারীদের উপস্থিতি কমে যাওয়ার সুযোগে ইলিশ শিকারে নামেন জেলেরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিস্তীর্ণ নদীতে জেলেরা প্রকাশ্যে জাল ফেলে ইলিশ শিকার করার পাশাপাশি নদী এবং তীরে এনে তা বিক্রি করছেন।
তবে মা ইলিশ শিকার ও বেচাকেনায় সবচেয়ে বেশি এগিয়ে গোসাইরহাট উপজেলার সাতপাড় পয়েন্ট, আশুলিয়া আবুপুর, চরমাইন্ধারা, খেজুরতলা, কোদালপুর লঞ্চঘাট, মাঝেরচর, আলাওলপুর ট্যাগপার পয়েন্ট। অন্যদিকে ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচিকাট পয়েন্ট, নড়ীয়া উপজেলার সুরেশ্বর পয়েন্ট, জাজিরা উপজেলার সিডার চর ও দুবাডাঙ্গা এলাকায় জেলেদের নদীতে ইলিশ শিকার করতে দেখা গেছে। নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুত ও বাজারজাতকরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকলেও কে শোনে কার কথা। নদীতে ঘুরে জেলেদের মাছ শিকারের দৃশ্য দেখে বোঝার উপায় ছিল না। দেশে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞার মৌসুম চলছে। এছাড়াও নদীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরেও প্রশাসনের কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের ঝিমিয়ে পড়া অভিযানের কারণেই নদীতে জাল ফেলতে সাহস পাচ্ছেন জেলেরা। অভিযান জোরদার না করা গেলে ইলিশ সম্পদ রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে জানান তারা। মা ইলিশ সংরক্ষণে সরকার কর্তৃক ঘোষিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় জেলা মৎস্য অফিস, কোস্ট গার্ড, নৌ-পুলিশ সহ অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তাদের নজরদারি বৃদ্ধি ও অসাধু জেলেদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘মা ইলিশ সংরক্ষণে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। প্রতিদিনই অসাধু জেলে আটক হচ্ছে। আজ আবহাওয়া খারাপ তাই একটু সমস্যা হচ্ছে। আবহাওয়া ঠিক হয়ে গেলে আমাদের অভিযান আরও জোড়ালো হবে। তাছাড়া কোস্ট গার্ড, নৌপুলিশ এবং মৎস্য বিভাগ সবাই মিলে যৌথ অভিযান পরিচালনা করছে।’
এ বিষয়ে শরীয়তপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাদিয়া জেরিন বলেন, ‘আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। এতে জেল জরিমানা করা হচ্ছে। কোস্ট গার্ড ও নৌ-পুলিশকে নদীতে টহল জোরদার করার জন্য বলা হবে।’(ঢাকা টাইমস/২৪অক্টোবর/এসএ)

মন্তব্য করুন