হার্ট আর লিভারের বন্ধু কলমি শাক! ক্যানসারেরও যম

বাংলার মাটি, বাংলার পানির আদর-যত্নে লালিত-পালিত হয় একাধিক উপকারী শাক। এসব শাক কিন্তু পুষ্টিগুণের খনি। তবে সব ধরনের শাক আমাদের মুখে রোচে না। কিছু রয়ে যায় ব্রাত্য।
এই যেমন কমলি শাকের কথাই ধরুন। পুঁইশাক, পালং শাক, লাল শাকের ভিড়ে কলমি শাক তেমন একটা পাত্তা পায় না। তবে জানলে অবাক হয়ে যাবেন, ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও এই শাকের রয়েছে একাধিক চমকে দেয়ার মতো গুণ!
চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের কথায়, বিভিন্ন ধরনের শাকের মধ্যে কলমি শাকের কথা আলাদা করে না বললেই নয়। এই শাকে মজুত আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, আয়রন ও অন্যান্য জরুরি কিছু উপাদান।
ফলে নিয়মিত এই শাক খেলে একাধিক রোগ-বিরেত কাছে ঘেঁষার সুযোগ পায় না। তাই আর দেরি না করে এই শাকের একাধিক গুণাবলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। আশা করছি, এরপর আপনিও কলমি শাকের ভালোবাসায় পড়ে যাবেন।
ক্যানসার থাকে দূরে দূরে
ক্যানসারের মতো জটিল অসুখ রোগী ও তার পরিবারের জীবনে নানাবিধ সমস্যা ডেকে আনে। তাই চিকিৎসকরা এই রোগ প্রতিরোধ করার পক্ষেই সওয়াল করেন। ক্যানসার রোগ প্রতিরোধের কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে কলমি শাক।
এই শাকে রয়েছে ১৩ ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এসব অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কিন্তু দেহ থেকে সমস্ত ধরনের ফ্রি ব়্যাডিকেলস বের করে দেয়। ফলে দেহে ক্যানসার কোষের বৃদ্ধির আশঙ্কা কমে। তাই ক্যানসারের মতো ভয়াল অসুখকে প্রতিরোধ করতে চাইলে এই শাক খেতেই হবে।
লিভার থাকে সুস্থ
কলমি শাক কিন্তু লিভারের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এমনকি আয়ুর্বেদে এই শাককে জন্ডিসের মহৌষধি হিসাবে ব্যবহার করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, এই শাকে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা লিভারের থেকে ক্ষতিকর পদার্থকে বের করে দিতে সাহায্য করে।
এমনকি ড্যামেজ লিভারকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতেও কলমি শাকের জুড়ি মেলা ভার। তাই যারা লিভারের সমস্যায় ভুগছেন, তারা এই শাককে অবশ্যই ডায়েটে জায়গা করে দিন। কিছুদিনের ভেতরই হাতেনাতে মিলবে ফল।
হার্টের বন্ধু কলমি
কলমি শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন। এছাড়া এই শাক হলো ভিটামিন সি-এর ভাণ্ডার। এই দুই উপাদান শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। সেই কারণেই হৃদরোগের ফাঁদ এড়ানো যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত কলমি শাক খেলে হার্টের রক্তনালির ভেতর প্লাক বা ময়লা জমতে পারে না। ফলে হার্ট অ্যাটাকের মতো গুরুতর অসুখ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তাই হার্টকে সুরক্ষিত রাখতে চাইলে এই শাকের পদ পাতে রাখতে ভুলবেন না আবার।
ইমিউনিটি বাড়াতে সিদ্ধহস্ত
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা চাঙ্গা থাকলে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসজনিত একাধিক রোগকে হেলায় হারানো যায়। তাই বিশেষজ্ঞরা বারবার ইমিউনিটি বাড়িয়ে নেয়ার পক্ষেই সওয়াল করেন।
এই কাজে আপনার সহযোগী হতে পারে কলমি শাক। এই শাকে রয়েছে ভিটামিন সি-এর ভাণ্ডার। এই ভিটামিন কিন্তু সরাসরি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে একাধিক সংক্রামক অসুখের ফাঁদ এড়িয়ে চলা যায়।
বাড়বে দৃষ্টিশক্তি
এখন তো ছোটদের চোখেও ঝুলতে থাকে চশমা। তাই একদম ছোট বয়স থেকেই অক্ষিগোলকের খেয়াল রাখা জরুরি। এই কাজটি করতে চাইলে সন্তানের পাতে কলমি শাক রাখার চেষ্টা করুন।
আসলে এই শাকে রয়েছে ভিটামিন এ-এর খনি। এই ভিটামিন চোখের খেয়াল রাখার কাজে ওস্তাদ। তাই চোখের নানাবিধ সমস্যা এড়াতে চাইলে সন্তানের পাশাপাশি নিজেও কলমি শাক চেখে দেখতে পারেন। উপকার পাবেন হাতেনাতে।
(ঢাকাটাইমস/২৯ডিসেম্বর/এজে)

মন্তব্য করুন