গাবতলী গরুর হাট নিয়ে হচ্ছেটা কী? সরব অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২০ মে ২০২৫, ১৬:৪৬
অ- অ+

ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ও পুরাতন পশুর বাজার ‘গাবতলী হাট’ নিয়ে বিতর্ক যেন থামছেই না। উত্তর সিটি করপোরেশন—ডিএনসিসি দরপত্র আহ্বানের পর সর্বোচ্চ দরদাতাকে দেওয়া হয়নি ইজারা। এ নিয়ে শুরু হয় তুমুল বিতর্ক।

ইজারার বদলে ডিএনসিসি গাবতলী হাটে এখন খাস আদায় শুরু করেছে। যদি হাটটি ইজারা দেওয়া হতো তাহলে গড়ে প্রতিদিন সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি আয় করত সিটি করপোরেশন। সেখানে খাস আদায়ে গিয়ে ১৫ থেকে ২০ এপ্রিল—এই ছয় দিনে ওই পরিমাণ টাকা আয় করতে পারেনি সংস্থাটি। ছয় দিনে মোট আয় করে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার মতো।

এদিকে মঙ্গলবার নিজের ফেসবুক পোস্টে হাটের ইজারা ইস্যুতে বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রবাসী অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান সামি। তিনি বেশকিছু নথি সংযুক্ত করে লিখেছেন— এটি গাবতলী গরুর হাটের ইজারা বিজ্ঞপ্তি। যা গত ৩রা মার্চ ২০২৫ প্রকাশ করা হয়। আপনাদের একটা অনুরোধ করছি। অনুগ্রহ করে এই বিজ্ঞপ্তির কপি নিজেরা একটু খুঁজে বের করুন এবং প্রতিটি লাইন মিলিয়ে দেখুন। বিজ্ঞপ্তি যে একই, আসুন সেটা আমরা প্রথমে নিশ্চিত করি। কমেন্টে আপনার পাওয়া বিজ্ঞপ্তি সূত্রের লিংকটি উল্লেখ করতে পারেন এবং মিল খুঁজে পাওয়া সাপেক্ষে 'ওকে' লিখে লিংকটি পোস্ট করুন।’

এই পোস্টের পর তিনি নথিসহ আরও একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে লিখেছেন— ‘সিটি করপোরেশনের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সাতজন সদস্য। যার মধ্যে দুজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, একজন কমোডর, তিনজন উপসচিব, একজন অতিরিক্ত সচিব। সকলে মিলে ‘গাবতলী গবাদি পশুর হাট’ এর প্রাক দরপত্রের তুলনামূলক বিবরণী প্রস্তুত করেছেন।

আপনার মূল‍্যায়ন কি বলে? উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান কোনটি? কমেন্টে জানাতে পারেন।’

দ্বিতীয় পোস্টের একঘণ্টা পর আরও একটি পোস্ট দেন প্রবাসী এই অনুসন্ধানী সাংবাদিক। সেখানে তিনি লিখেছেন— ‘গত ৯ এপ্রিল ঢাকা সিটি উত্তর করপোরেশনের সকল পদস্থ কর্মকর্তা সভায় একমত পোষণ করেন সর্বোচ্চ দর প্রদানকারীকে গাবতলী পশুর হাটের ইজারা প্রদান করার জন্যে। কিন্তু বাধ সাধলেন উত্তর সিটি করপোরেশনের হিযবুতী প্রশাসক মো. এজাজ। এজাজ মন্তব্য করলো সিপিটিইউ'র ওয়েবসাইটে প্রকাশ না করায় নাকি বিধির ব‍্যত্যয় ঘটেছে! তাই তিনি খাস আদায় পদ্ধতিতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা লিখে দিলেন। কিন্তু হাটের ইজারা সরকারি কেনাকাটা (ক্রয়কার্য) না হওয়ায় এ-সংক্রান্ত দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশের সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন সিপিটিইউর (বর্তমান বিপিপিএ) কর্মকর্তারা।’

সিপিটিইউর সাবেক মহাপরিচালক ফারুক হোসেন জানিয়েছেন, ইজারা পাবলিক প্রকিউরমেন্ট (সরকারি ক্রয়) নয়। ইজারার প্রক্রিয়া পিপিআর (সরকারি ক্রয় নীতিমালা) অনুযায়ী হয় না। যেহেতু পিপিআর এখানে প্রযোজ্য না, সেহেতু সিপিটিইউ এটা নেবে না, ওয়েবসাইটে দেবেও না। অবশ‍্য সিপিটিইউ'র ওয়েবসাইটে না থাকলেন দরপত্রটি ঠিকই সিটি করপোরেশনের ওয়েবসাইটে আছে (ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ওয়েরসাইটের dncc.gov.bd দরপত্র বিজ্ঞপ্তির ৬৪ নম্বর ক্রমিকে এখনও গাবতলী পশুর হাটের বিজ্ঞপ্তি টি রয়েছে, যা গত ০৩ মার্চ ২০২৫ তারিখ আপলোড করা হয়েছে)। এছাড়াও গাবতলি পশুর হাটের ইজারা বিজ্ঞপ্তি তিনটি জাতীয় দৈনিকে গত ৪ মার্চ ২০২৫ তারিখ প্রকাশ করা হয় (দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক মানব জমিন,The Business Standard)। তাহলে কি উদ্দেশ্যে এজাজ এই প্রক্রিয়া বাতিল করলো?’’

জানা গেছে, গাবতলী হাটের দরপত্রপ্রক্রিয়ায় প্রশাসকের পছন্দের ব্যক্তি সর্বোচ্চ দরদাতা হতে পারেননি। তাই তিনি দরপত্র আহ্বানে প্রক্রিয়াগত ভুল দেখিয়ে ইজারার পরিবর্তে খাস আদায়ের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। বাস্তবে খাস আদায়ের নামে ওই হাট থেকে হাসিল আদায় করছেন প্রশাসকের পছন্দের দরদাতা ও তার লোকজন। যদিও দরপত্র বাতিল ও খাস আদায়ের বিষয়ে প্রশাসকের দাবি, ‘হাট ইজারার দরপত্রপ্রক্রিয়া যথাযথ পদ্ধতিতে হয়নি।’

(ঢাকা টাইমস/২০মে/এসএস/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করল যুক্তরাজ্য
বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে শারীরিক সম্পর্ক: এএসপি নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা
৪৩তম বিসিএসে বাদ পড়া ১৬২ জনকে নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি  
অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিতে বৈষম্যের অভিযোগ: মেধা তালিকায় নাম থাকলেও পদবঞ্চিত অনেকেই
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা