দুই বছর ধরে হাসপাতালে ভারতীয়ের লাশ, ফেরত যায় স্থানীয়রা

শরীয়তপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:২৫| আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:৩০
অ- অ+

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গের ফ্রিজে প্রায় দুই বছর ধরে পড়ে আছে ভারতীয় দুই নাগরিকের লাশ। সংরক্ষণের জন্য এখন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে প্রায় ২৪ লাখ টাকা। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকায় লাশ দুটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের জন্য বিপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জেলা উপজেলা থেকে আসা স্থানীয়রা লাশ সংরক্ষণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জেলা প্রশাসন বলছে, লাশ দুটি হস্তান্তরের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

জেলা কারাগার সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ২০২২ সালের ১৮ মে বাবুল সিং এবং অক্টোবর সত্যেন্দ্র কুমার নামে দুই ভারতীয় নাগরিককে পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা থেকে আটক করে পদ্মা দক্ষিণ থানার পুলিশ। আদালতের নির্দেশে তাদের শরীয়তপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

২০২৩ সালের ১৮ জানুয়ারি কারাগারে সত্যেন্দ্র কুমারের মৃত্যু হয়। একই বছর ১৫ এপ্রিল বাবুল সিং অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এরপর থেকে তাদের লাশ হাসপাতালের ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।

হাসপাতালে হিমঘর না থাকায় হাসপাতাল ভবনের নিচতলায় একটি কক্ষে ফ্রিজে ভারতের দুই নাগরিকের লাশ রাখা হয়েছে। তবে ফ্রিজে ধারণক্ষমতা চারজনের বেশি না হওয়ায় সংযোগ দেওয়া যায়নি। কারণে লোডশেডিংয়ের কারণে লাশে পচন ধরার আশঙ্কা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের ডোম নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ডিউটি থাকলেও সময়-অসময়ে এসে দেখতে হয়। পচা লাশের সঙ্গে কেউ লাশ রাখতে চায় না। অন্য লাশ এলেও আমরা রাখতে পারি না। আমরা চাই দ্রুত এগুলো এখান থেকে নিয়ে যাওয়া হোক।’

স্থানীয়রা জানান, জেলা হাসপাতালের স্বল্প জায়গার ফ্রিজে দুটি লাশ এভাবে পড়ে থাকায় অনেক সময় জরুরি প্রয়োজনেও স্থানীয় কোনো লাশ রাখতে গেলে ফিরিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, দুটি লাশের জন্য বিদ্যুৎ খরচ বেশি হয়। অন্যরা ফ্রিজ ব্যবহার করতে পারছেন না। এমনকি জরুরি অবস্থায়ও ফ্রিজ ব্যবহার করা যাচ্ছে না। লাশ দুটি রাখার জন্য রুমের ভাড়া বহন করতে হচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষকে। তাদের বরাদ্দ না থাকলে ভাড়া বকেয়া থাকে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, এই ফ্রিজ ব্যবহারে কারা কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত লাখ ৭০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছে, তবে এখনো প্রায় ১৪ লাখ টাকা বকেয়া।

শরীয়তপুর কারাগারের জেলার আসমা আক্তার পাপিয়া জানান, লাশগুলোর জন্য প্রতিদিন পাহারার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে, যা জনবল সংকটের মধ্যেও চালাতে হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সুরাহার দাবি জানান তিনি।

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘ভিনদেশি লাশ হস্তান্তর একটি আন্তঃরাষ্ট্রীয় বিষয়। এটি দুই দেশের কূটনৈতিক যোগাযোগ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল। বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।’

(ঢাকাটাইমস/২২জানুয়ারি/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রাজবাড়ীতে আগুনে পুড়ে ১২ দোকান ছাই
সাতক্ষীরায় মাছের ঘেরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তরুণ উদ্যোক্তার মৃত্যু
এক বছরেও ডিপিএলের পারিশ্রমিক পাননি মুনিম শাহরিয়ার
বৈষম্যবিরোধীদের কাউন্সিল: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক হলেন ওমর ফারুক
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা