জনগণের স্বার্থের বাইরে কারোর স্বার্থ দেখবো না: ফরিদপুরের ডিসি

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্লা বলেছেন, ‘জাতীয় স্বার্থ, স্থানীয় স্বার্থ ও জনগণের স্বার্থের বাইরে কারো স্বার্থ আমরা দেখবো না। ফরিদপুর শহর রক্ষা বাঁধের পদ্মা নদী এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু কাটার ফলে জাতীয় স্বার্থ ও স্থানীয় স্বার্থসহ সব রকম স্বার্থই এখানে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। বিশেষ করে শহর রক্ষা বাঁধের ব্লক ফেলে বাঁধ দেওয়া হয়েছে, এই বালু কাটার ফলে আমরা দেখলাম এই শহর রক্ষা বাঁধ হুমকিতে পড়েছে। আজ থেকে এই এলাকায় আর কোনো বালু, মাটি কাটা কর্মকাণ্ড চলবে না। যদি এই কাজে কেউ জড়িত হন, সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রবিবার ফরিদপুর শহর রক্ষা বাঁধের পাশ থেকে অবৈধভাবে বালু কাটার অভিযোগে সরেজমিনে শহরের ধলার মোড় ও আশপাশের পদ্মা নদীর চর এলাকা পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘অভিযোগটি শুনে সরেজমিনে দেখতে এসে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। প্রশাসন এর জন্য কাজ করবে, পাশাপাশি সামাজিক দায়িত্ব হিসেবে স্থানীয়দের দায়িত্ব রয়েছে। আপনারা এই ভূমিখেকো, মাটিখেকোদের বিরুদ্ধে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবেন। তাহলে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবো। আমরা চাই দেশটা সুন্দর থাকুক, ফরিদপুর ভালো থাকুক।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিব হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রামানন্দ পাল, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিন্টু বিশ্বাস, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাঈদ হোসেন, কৃষি বিভাগের উপপরিচালক শাহিদুজ্জামান প্রমুখ।
পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল বলেন, ‘ধলার মোড়ে রাতের অন্ধকারে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে, প্রতিনিয়তই আমরা অভিযোগ পাই। আমরা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর এই নিয়ে কয়েকদিন ধরে আলোচনা করছিলাম। দেখলাম ঘটনা সঠিক, শহর রক্ষা বাঁধের পাশ থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমরা আইডেন্টিফাই করার চেষ্টা করছি, যারা এর সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সবাই মিলে এসেছি এবার স্থায়ীভাবে এই বালু কাটা বন্ধ করতে পারবো।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিব হাসান বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছে। এখানে এখন চর জেগে গেছে, এখন এটা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের। এটাকে যদি টিকিয়ে না রাখতে পারি তবে আগামীতে ফরিদপুর শহর প্লাবিত হতে পারে। এই যে অবৈধ বালু কাটার ফলে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেছে, এতে এইবার বর্ষায়ও ভাঙনের ঝুঁকি বেড়েছে। এখন সবাই একযোগে কাজ করছি আশা করি এটা আর বৃদ্ধি পাবে না।’
প্রসঙ্গত, প্রতি বছর শীত মৌসুমে নদী পাড়ের স্থানীয় প্রভাবশালীরা পদ্মা নদী থেকে দিন-রাত ড্রেজার ও বেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করে। এতে পদ্মা নদী পাড়ের মানুষের ভাঙন আতঙ্কসহ ফরিদপুর শহর রক্ষা বাঁধের সাড়ে ১০ কিলোমিটার এলাকা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
(ঢাকা টাইমস/০৩ফেব্রুয়ারি/এসএ)

মন্তব্য করুন