মিরপুরে পথচারী পারাপারে সিগন্যাল লাইট চালু, পর্যায়ক্রমে প্রতিটি জেব্রা ক্রসিংয়ে

বিশ্বের উন্নত শহরগুলোর মতো এবার ঢাকার মিরপুর কলেজের সামনে পথচারী পারাপারের সিগন্যাল লাইট সিস্টেম পরীক্ষামূলক চালু করেছে পুলিশ। গত ২০ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চলবে আগামী ৮ মে পর্যন্ত। এই সিস্টেম ফলপ্রসূ হলে ঢাকার সব জেব্রা ক্রসিংয়ে এই প্রজেক্ট চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার। এছাড়া শিগগিরই রাজধানীর ফার্মগেট, সোনারগাঁও ক্রসিং, বাংলামোটর এবং হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল পয়েন্টে সিগন্যাল লাইট উদ্বোধন করা হবে বলেও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার মিরপুর-২ নম্বরে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের বিপরীতে মিরপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সামনে অবস্থিত 'ডিআরএসপি’ এর আওতায় নিরাপদ পথচারী পারাপারে পাইলট প্রকল্প পরিদর্শন' শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
মো. সরওয়ার বলেন, আমরা ডিএমপি এবং সিটি কর্পোরেশনের সহায়তায় ঢাকা শহরে এই ধরনের জেব্রা ক্রসিং যতগুলো আছে পর্যায়ক্রমে প্রতিটি জেব্রা ক্রসিংয়ে এই ধরনের সিগন্যাল লাইট সিস্টেম চালু করব পথচারীদের জন্য।
তিনি বলেন, জাইকার অর্থায়নে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এ সংক্রান্ত একটি প্রজেক্ট চলছে। জাইকার সহায়তায় এই প্রজেক্ট আমরা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করলেও এটাকে স্থায়ী করে ফেলবো।
তিনি আরও বলেন, পথচারী পারাপারের জন্য সিগন্যাল লাইট সিস্টেম চালু করেছি। গত ২০ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া পরীক্ষামূলক কার্যক্রম আগামী ৮ মে পর্যন্ত চলবে। আমাদের রিসোর্স আমরা ম্যানেজ করতে পারলে এটাসহ আরও অনেক জায়গায় এই ধরনের পথচারী পারাপারের জন্য সিগন্যাল লাইট প্রজেক্ট চালু করব।
এই প্রকল্পের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে তিনি বলেন, এটার মূল বৈশিষ্ট্য হলো, সাধারণত সড়কের দুই সাইড দিয়ে যদি এক মিনিটে ২০০ গাড়ি পারাপার হয় তাহলে এই গাড়ি চলন্ত অবস্থায় একজন বা দুজন পথচারী পারাপার হতে যান তাহলে গাড়ির ফ্লো বাধাগ্রস্ত হয়। অন্যান্য উন্নত দেশের মতো আমরা পথচারীদের ফুটপাতে কয়েক সেকেন্ড বা কয়েক মিনিট দাঁড় করিয়ে রাখবো। যখন পথচারীদের জন্য সিগন্যাল লাইট অন হবে তখন গাড়িগুলা চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। তখন পথচারীরা একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রাস্তা পার হয়ে যাবেন। এরপরে আবার গাড়ি চলাচল শুরু হবে। এর ফলে আমাদের ঢাকার রোড সেফটি যে প্রজেক্ট সেই প্রজেক্টের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হবে। একদিকে পথচারীরা দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচবে, অপরদিকে আমাদের গাড়ি চলাচল অব্যাহত থাকবে। তা না হলে কন্টিনিউয়াস পথচারী পারাপার হয় আর গাড়ি চলাচল ব্যাহত হয়। এই প্রজেক্টের ফলে গাড়িও সঠিক গতিতে সঠিক সময়ে চলতে পারবে।
তিনি বলেন, এ ধরনের সিগন্যালে পথচারীরা একটু অপেক্ষা করে হলেও নিরাপদে রাস্তা পার হতে পারবেন। ঢাকাবাসী যেন এই সিগন্যাল লাইট মেনে চলে আমরা সেই আহ্বান করছি। সিগন্যাল লাইট মেনে চললে সবার জন্য সুবিধা হবে এবং সবাই তাড়াতাড়ি যেতে পারবে। আমরা ডিএমপি এবং সিটি কর্পোরেশনের সহায়তায় ঢাকা শহরে এই ধরনের জেব্রা ক্রসিং যতগুলো আছে পর্যায়ক্রমে প্রতিটি জেব্রা ক্রসিংয়ে এই ধরনের সিগন্যাল লাইট সিস্টেম চালু করব পথচারীদের জন্য।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্বে বিভিন্ন সংস্থা আছে, তারা ঢাকার সিগন্যালে লাইটগুলো স্থাপনের জন্য কাজ করছেন। ইতোমধ্যে ঢাকা শহরের ২২টি সিগন্যালে দুই সিটি কর্পোরেশন বুয়েটের সহায়তায় সিগন্যাল লাইট বসাচ্ছে। সেগুলোতেও গাড়ি চলাচলের সিগন্যাল লাইটের পাশাপাশি পথচারীদের জন্য চলাচলের সিগন্যাল লাইটও থাকবে।
(ঢাকাটাইমস/২৪এপ্রিল/এলএম/এমআর)

মন্তব্য করুন